গত বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি, শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে একটি জরিপ পরিচালনা করা হয়, যেখানে প্রায় শতভাগ শিক্ষক গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য উপযোগী নয় বলে মতামত দেন। ৯৭.৩% শিক্ষক নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রম চালানোর পক্ষে মত দেন, আর ৩% শিক্ষক পরিবর্তন সাপেক্ষে গুচ্ছ পদ্ধতিতে অংশগ্রহণের পক্ষে ছিলেন। পরবর্তীতে, ২৭ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে এক সভায় এই জরিপের ফলাফল শিক্ষামন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।
গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সম্প্রতি, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তিতে গুচ্ছ পদ্ধতির কারিগরি ত্রুটির কারণে আসনের অতিরিক্ত শিক্ষার্থীর নাম চলে আসায় তা জটিলতা সৃষ্টি করে। এ পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে গুচ্ছ প্রক্রিয়ার প্রতি অনীহা তৈরি হওয়ায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজস্ব ভর্তি পদ্ধতিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ২০ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন উপাচার্য হোসেন উদ্দিন শেখ।
গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় গত ১১ ডিসেম্বর সর্বসম্মতিক্রমে গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বের হয়ে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আগে, ২ অক্টোবর ও ১৪ নভেম্বর শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এক সাধারণ সভায় গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে একটি জরিপ পরিচালনা করা হয়, যেখানে প্রায় শতভাগ শিক্ষক গুচ্ছ পদ্ধতি ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য উপযোগী নয় বলে মতামত দেন। ৯৭.৩% শিক্ষক আগের মতো নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনার পক্ষে মত দেন, এবং ৩% শিক্ষক পরিবর্তন সাপেক্ষে গুচ্ছ পদ্ধতিতে অংশগ্রহণের পক্ষে ছিলেন। পরবর্তীতে, ২৭ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে এক সভায় জরিপের ফলাফল শিক্ষামন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।
গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির জরিপে অংশগ্রহণকারী শিক্ষকরা গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে আসার দাবির পেছনে ছয়টি মূল কারণ উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে ৮১% শিক্ষক গুচ্ছ ভর্তিতে সমন্বয়হীনতা, দীর্ঘসূত্রতা এবং শিক্ষার্থীদের আর্থিক ও আনুষঙ্গিক ভোগান্তিকে প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। ৬৩% শিক্ষক একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুসরণে অসুবিধা, ৫৬% নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সমন্বয়হীনতা, ৫৩% সুনির্দিষ্ট নীতিমালার অভাব এবং ৫১% আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাবকে কারণ হিসেবে তুলে ধরেছেন।
নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে উপাচার্য হোসেন উদ্দিন শেখর জানান, “আজ আমাদের একটি সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আমরা নিজস্ব পদ্ধতিতে নিব।” নিজস্ব ভর্তি পরীক্ষার পদ্ধতি ও কোটা সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমরা দ্রুত নোটিশের মাধ্যমে বিস্তারিত জানাবো। কোটার বিষয়ে সিদ্ধান্ত ভর্তি কমিটি গঠনের পর আলোচনা করে নেওয়া হবে।”
গোপালগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় কবে থেকে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিবে?
গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে আসার কারণ কী?
গুচ্ছ পদ্ধতিতে সমন্বয়হীনতা, দীর্ঘসূত্রতা, শিক্ষার্থীদের আর্থিক ও আনুষঙ্গিক ভোগান্তি, একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুসরণে অসুবিধা এবং আর্থিক স্বচ্ছতার অভাবের কারণে শিক্ষকরা গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে আসার পক্ষে মত দিয়েছেন।
ভর্তি পরীক্ষার পদ্ধতি কী হবে?
ভর্তি পরীক্ষার পদ্ধতি ও কোটা সম্পর্কে বিস্তারিত শীঘ্রই নোটিশের মাধ্যমে জানানো হবে।
কোটা নিয়ে কোনো পরিবর্তন হবে?
ভর্তি কমিটি গঠন করার পর কোটার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং তা আলোচনা করে চূড়ান্ত করা হবে।
এ সিদ্ধান্তের পরে কবে থেকে আবেদন শুরু হবে?
ভর্তি পরীক্ষা ও আবেদন প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত নোটিশ শীঘ্রই প্রকাশ করা হবে।
উপসংহার
গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, গুচ্ছ পদ্ধতির সমন্বয়হীনতা এবং অন্যান্য সমস্যার কারণে। শিক্ষক সমিতির জরিপে গুচ্ছ পদ্ধতির বিভিন্ন জটিলতা তুলে ধরার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভর্তি পরীক্ষার পদ্ধতি এবং কোটা সংক্রান্ত বিস্তারিত শীঘ্রই জানানো হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নোটিশ প্রদান করবে এবং ভর্তি কমিটি গঠন করে কোটার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
