বাংলা একাডেমি অমর একুশে বইমেলা ২০২৫ আয়োজনের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পহেলা জানুয়ারি থেকে তেসরা মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত বরাদ্দ পেয়েছে। মেলার প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে, এবং স্টল নির্মাণের কাজ আংশিক সম্পন্ন হয়েছে। এই আয়োজন ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিকে উজ্জীবিত করার পাশাপাশি পাঠকদের বইমুখী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বাংলা একাডেমির অমর একুশে বইমেলা ২০২৫-এর প্রস্তুতির জন্য নির্ধারিত সময়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যেকোনো ধরনের সমাবেশ আয়োজন করা হলে যথাসময়ে বইমেলা আয়োজন করা সম্ভব নাও হতে পারে বলে মনে করছে মেলা পরিচালনা কমিটি। এ বিষয়ে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন মেলা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম।
আজ শুক্রবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট অংশে ‘যুব কনভেনশন’ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এ আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুব সংগঠন ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ।
বইমেলার প্রস্তুতি বাধাগ্রস্ত না করতে বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করার অনুরোধ জানিয়েছেন মেলা কর্তৃপক্ষ।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অমর একুশে বইমেলা ২০২৫-এর নির্মাণকাজ চলাকালে সোমবার সন্ধ্যায় ইসলামী যুব আন্দোলনের পরিচয় দেয়া একদল ব্যক্তি শ্রমিকদের কাজ বন্ধ রাখতে বলেন। তারা দাবি করেন, সম্মেলনের জন্য উদ্যান ব্যবহারের অনুমোদন নেয়া হয়েছে। তাদের কথায় শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে দেয়।
মেলা পরিচালনা কমিটি বিষয়টি গণপূর্ত অধিদপ্তরকে অবহিত করে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত কোনো সমাধান না হওয়ায় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে চিঠি লেখেন।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পহেলা জানুয়ারি থেকে তেসরা মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত বইমেলা আয়োজনের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বইমেলার স্টল নির্মাণসহ প্রস্তুতির কাজ আংশিক শেষ হয়েছে। তবে গণপূর্ত অধিদপ্তর একই সময়ে অন্য সমাবেশ ও কার্যক্রমের অনুমতি দেয়ায় বইমেলা আয়োজন হুমকির মুখে পড়েছে।
চিঠিতে তিনি বিশেষভাবে অনুরোধ জানান, বইমেলার সময়কালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অন্য কোনো কার্যক্রম না রাখার বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হোক। একই সময়ে অন্য সমাবেশ হলে বইমেলা যথাসময়ে আয়োজন অসম্ভব হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলা ও সমাবেশ নিয়ে জটিলতা
বাংলা একাডেমি অমর একুশে বইমেলা ২০২৫ আয়োজনের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বরাদ্দ দেয়া হলেও সেখানে সমাবেশ আয়োজন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
মেলা প্রস্তুতি ব্যাহত
সোমবার সন্ধ্যায় ইসলামী যুব আন্দোলনের কিছু ব্যক্তি শ্রমিকদের বইমেলার স্টল নির্মাণের কাজ বন্ধ করতে বলেন। তারা দাবি করেন, সম্মেলনের জন্য উদ্যান ব্যবহারের অনুমোদন নেয়া হয়েছে। এরপর কাজ বন্ধ করে দেন শ্রমিকরা। বিষয়টি গণপূর্ত অধিদপ্তরকে জানালেও বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত কোনো সমাধান হয়নি।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের চিঠি
বইমেলা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, বইমেলার জন্য বরাদ্দ সময়কালে অন্য কোনো কার্যক্রম আয়োজন করলে মেলা যথাসময়ে করা অসম্ভব হবে। তিনি বিশেষভাবে অনুরোধ করেছেন, বইমেলার স্থানে অন্য কার্যক্রমের অনুমতি থাকলে তা বাতিল করতে।
ইসলামী আন্দোলনের অবস্থান
ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম কবির বলেছেন, ‘আমরা দুই মাস ধরে প্রস্তুতি নিয়েছি। শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর থেকে সম্মেলন শুরু হবে।’
সম্ভাব্য সমাধান
গণপূর্ত অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সম্মেলন অন্য স্থানে আয়োজনের বিষয়ে আলোচনা চলছে। আজ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এটি নাও হতে পারে।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য: এবারের অমর একুশে বইমেলা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
কেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে?
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বইমেলার জন্য বরাদ্দ থাকলেও, ইসলামী যুব আন্দোলন সেখানে সমাবেশ আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এতে বইমেলার স্টল নির্মাণ কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
মহাপরিচালকের চিঠিতে কী উল্লেখ করা হয়েছে?
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বইমেলার জন্য বরাদ্দ স্থানে অন্য কোনো সমাবেশ বা কার্যক্রম হলে বইমেলা আয়োজন সম্ভব হবে না। তাই অন্য কার্যক্রমের অনুমতি বাতিলের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ইসলামী যুব আন্দোলনের অবস্থান কী?
ইসলামী যুব আন্দোলন দাবি করেছে, তারা দুই মাস ধরে প্রস্তুতি নিয়েছে এবং শুক্রবার থেকে সম্মেলন শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের বক্তব্য কী?
গণপূর্ত অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সম্মেলনটি অন্যত্র সরানোর বিষয়ে আলোচনা চলছে।
বইমেলা কবে শুরু হবে এবং কে উদ্বোধন করবেন?
অমর একুশে বইমেলা ২০২৫ পহেলা ফেব্রুয়ারি শুরু হবে এবং এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
উপসংহার
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ আয়োজন নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা বাংলা একাডেমির অমর একুশে বইমেলার প্রস্তুতিকে হুমকির মুখে ফেলেছে। মহাপরিচালকের চিঠিতে বিষয়টি সমাধানের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বরাদ্দকৃত স্থান নিয়ে কার্যকর সমন্বয় এবং দায়িত্বশীল সিদ্ধান্তই বইমেলার স্বাভাবিক আয়োজন নিশ্চিত করতে পারে। একইসঙ্গে অংশীদারদের সহযোগিতা এবং উদ্যানের যথাযথ ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন, যাতে সাংস্কৃতিক ও জাতীয় ঐতিহ্যের এই মেলা সময়মতো এবং নিরবচ্ছিন্নভাবে অনুষ্ঠিত হতে পারে।




