পরীক্ষা না দিয়ে পাস করানোর অভিযোগ তদন্তে কমিটি

পরীক্ষা না দিয়ে পাস করানোর অভিযোগ তদন্তে কমিটি

গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে পরীক্ষা না দিয়েও এক ছাত্রীকে পাস করানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ছাত্রী সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশী, যিনি ছাত্রলীগের বেরোবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের বিভিন্ন কার্যক্রমে তিনি প্রথম সারিতে সক্রিয় ছিলেন। তবে গত ১৬ জুলাই শহীদ আবু সাইদ হত্যাকাণ্ডের পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন।

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশী পরীক্ষা না দিয়েও উত্তীর্ণ হওয়ার অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। বুধবার (২২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলী এই কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেন।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) ড. মো. তানজিউল ইসলামকে। কমিটির অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. ইলিয়াছ প্রামাণিক এবং গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. হান্নান মিয়া, যিনি সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন। কমিটিকে দ্রুততম সময়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এর আগে, গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে তিনি সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশীকে পরীক্ষা না দিয়েও পাস করিয়েছেন। সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশী ছাত্রলীগের বেরোবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন এবং ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের বিভিন্ন কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতেন। তবে গত ১৬ জুলাই শহীদ আবু সাইদ হত্যাকাণ্ডের পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন।

গত ডিসেম্বর মাসে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের মাস্টার্স ১ম সেমিস্টারের ৫১০২ কোর্সের মিডটার্ম পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও ছাত্রলীগ নেত্রী সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশীকে পরীক্ষায় উপস্থিত থাকতে দেখা যায়নি। তা সত্ত্বেও তার ফলাফল প্রকাশিত হওয়ায় বিভাগের ভেতরে এবং বাইরে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ঐশীর সহপাঠীরা জানান, “ওই কোর্সের পরীক্ষার দিন আমরা সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশীকে পরীক্ষায় অংশ নিতে দেখিনি। তবে তিনি অন্য সময় বা অন্য কক্ষে পরীক্ষা দিয়েছেন কিনা, তা বলতে পারছি না।”

সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশীর সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, “আমি ওই পরীক্ষা দিয়েছি, তবে কবে দিয়েছি, তারিখটা মনে নেই।”

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।

কেন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে?

সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশী নামে একজন ছাত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তিনি মাস্টার্সের ৫১০২ কোর্সের মিডটার্ম পরীক্ষা না দিয়েও উত্তীর্ণ হয়েছেন। এ বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে।

তদন্ত কমিটির সদস্য কারা?

কমিটিতে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) ড. মো. তানজিউল ইসলামকে আহ্বায়ক, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. ইলিয়াছ প্রামাণিককে সদস্য, এবং গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. হান্নান মিয়াকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।

তদন্ত কমিটির কাজ কী?

কমিটি অভিযোগের সত্যতা যাচাই করবে, পরীক্ষা ছাড়া কোনো শিক্ষার্থীকে উত্তীর্ণ করার প্রমাণ রয়েছে কিনা তা তদন্ত করবে এবং এর পেছনে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে একটি প্রতিবেদন জমা দেবে।

অভিযুক্ত ছাত্রী কী বলেছেন?

সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশী জানিয়েছেন যে তিনি ওই পরীক্ষা দিয়েছেন। তবে কবে পরীক্ষা দিয়েছেন, সেটি তার মনে নেই। যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়, তবে হোয়াটসঅ্যাপে এই মন্তব্য করেছেন।

তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময়সীমা কী?

কমিটিকে দ্রুততম সময়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা উল্লেখ করা হয়নউপসংহা

উপসংহার

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশীর পরীক্ষা না দিয়েও উত্তীর্ণ হওয়ার অভিযোগ এক গুরুতর অনিয়মের ইঙ্গিত দেয়, যা শিক্ষার স্বচ্ছতা ও নৈতিকতার প্রশ্ন তোলে। এ ধরনের ঘটনা শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনামকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে না, বরং শিক্ষার্থীদের মধ্যে ন্যায্যতার অভাব ও হতাশা সৃষ্টি করে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির নিরপেক্ষতা এবং কার্যকর তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদ্ঘাটন করা অত্যন্ত জরুরি। এমন অভিযোগ প্রমাণিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। পাশাপাশি, ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম এড়াতে সুষ্ঠু পরীক্ষার প্রক্রিয়া ও নজরদারি আরও জোরদার করতে হবে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং নৈতিকতা বজায় রাখা আমাদের সকলের দায়িত্ব। এ ঘটনায় তদন্তের ফলাফল এবং পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে সবাই অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top