চারজন জালিয়াতের মধ্যে সুইটি নামের একজন ২০১৯ সালের ১৬তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে প্রভাষক পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন।

জাল সনদে বহুদিন ধরে শিক্ষকতা করছেন এমন আরো ৪ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। অনুসন্ধানের সব পদ্ধতি অনুসরণ করে নিশ্চিত হয়েছে শিক্ষাবিষয়ক দেশের একমাত্র প্রিন্ট জাতীয় পত্রিকা দৈনিক আমাদের বার্তা। শিক্ষক নিবন্ধনের জাল সনদ ব্যবহার করে তারা দেশের বিভিন্ন এলাকার মাদরাসায় বিভিন্ন পদে নিয়োগ পেয়ে শিক্ষকতা করে আসছেন। তারা সবাই এমপিওভুক্ত মাদরাসায় কর্মরত।
চার জালিয়াতের মধ্যে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৬তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা দিয়ে পাস করে সুপারিশ পাওয়া দাবি করে প্রভাষক পদে নিয়োগ পেয়েছেন সুইটি। তার রোল নম্বর দেখিয়েছেন: ৪০৪০০৯৮৫৮। তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক। বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, সুইটির এই সনদটি জাল।
২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৬তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন বলে দাবি করেছেন রাহিলা খাতুন (রোল: ৪২৯০০৪৮৪৯)। তবে, তিনি জাল সনদ ব্যবহার করে আরবি বিষয়ের প্রভাষক পদে চাকরি করছেন। একইভাবে, তানি আক্তার ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের ১০ম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস দেখিয়ে সহকারী মৌলভী পদে কর্মরত আছেন।
এ ছাড়া, মো. ওলিউল্লাহ ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত ১৪তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস দেখানোর দাবি করে জাল সনদ ব্যবহার করে আরবি বিষয়ের প্রভাষক পদে চাকরি চালিয়ে যাচ্ছেন।
মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ ধরনের জালিয়াতির ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হবে।
চিহ্নিত শিক্ষকদের নাম এবং পদ কী?
রাহিলা খাতুন: আরবি বিষয়ের প্রভাষক।
তানি আক্তার: সহকারী মৌলভী।
মো. ওলিউল্লাহ: আরবি বিষয়ের প্রভাষক।
সুইটি: প্রভাষক।
তারা কোন পরীক্ষার সনদ জাল করেছে?
রাহিলা খাতুন: ২০১৯ সালের ১৬তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা।
তানি আক্তার: ২০১৪ সালের ১০ম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা।
মো. ওলিউল্লাহ: ২০১৭ সালের ১৪তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা।
তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ কী?
জাল সনদ ব্যবহার করে শিক্ষক নিবন্ধন পাস দেখিয়ে সরকারি পদে চাকরি করছেন।
কর্তৃপক্ষ কী ব্যবস্থা নিচ্ছে?
মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হবে।
এই ঘটনার প্রভাব কী হতে পারে?
শিক্ষাখাতে বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে এবং কঠোর ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে আরও জালিয়াতির ঘটনা ঘটতে পারে।
উপসংহার
জাল সনদ ব্যবহার করে শিক্ষাক্ষেত্রে চাকরি পাওয়ার মতো গুরুতর অপরাধ শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা এবং নৈতিকতা প্রশ্নবিদ্ধ করে। এ ধরনের ঘটনা শুধু ব্যক্তিগত নয়, সামগ্রিকভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মান ও মর্যাদাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মতো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা, যাতে এ ধরনের জালিয়াতি প্রতিরোধ করা যায় এবং শিক্ষা ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখা সম্ভব হয়। একই সঙ্গে, নিবন্ধন প্রক্রিয়া এবং নিয়োগ পদ্ধতিতে আরও কঠোর যাচাই-বাছাই নিশ্চিত করা প্রয়োজন।




