বকশীবাজারে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ, ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী

বকশীবাজারে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ, ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী

জানা গেছে, প্রস্তুতি সম্পন্ন না হওয়ায় কেরানীগঞ্জ কারাগারের অস্থায়ী আদালতে আজ বিডিআর মামলার বিচারকাজ অনুষ্ঠিত হবে না। গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় অস্থায়ী আদালত ভবনটিতে ব্যাপক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছিল, যা বিচারকাজ শুরুর পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে।

রাজধানীর বকশীবাজারে আলিয়া মাদরাসা মাঠে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য অস্থায়ী আদালত বসানোর প্রতিবাদে মাদরাসার শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দিয়েছেন, এই মাঠে আর কোনো আদালত বসতে দেবেন না। বিশেষ আদালতের কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন।

বুধবার রাতভর আন্দোলনের পর বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সকালেও শিক্ষার্থীরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন। সকাল থেকেই সড়ক অবরোধ করে রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হয়েছেন।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করছেন, এই মাঠ তাঁদের শিক্ষাকার্যের জন্য ব্যবহৃত হয়। তিন মাসের জন্য অস্থায়ী আদালত বসানোর কথা বলা হলেও সেটি এখনো চলছে, যা তাঁদের শিক্ষাক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে। তাঁরা আরও জানান, এর আগেও মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

ফের অস্থায়ী আদালত বসানোর ঘোষণার পর থেকেই শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানিয়ে রাতভর আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের দাবি, এই মাঠে আদালতের কার্যক্রম চলমান থাকলে তাঁদের শিক্ষা কার্যক্রম আরও ব্যাহত হবে।

এদিকে, বুধবার আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, ঢাকার আলিয়া মাদরাসা মাঠে বিডিআর হত্যা মামলার বিচারকাজ আজ (বৃহস্পতিবার) শুরু হবে। তবে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত বিচারকাজ শুরু হয়নি।

অপরদিকে, জানা গেছে, প্রস্তুতি সম্পন্ন না হওয়ায় কেরানীগঞ্জ কারাগারের অস্থায়ী আদালতে আজ বিডিআর মামলার বিচারকাজ অনুষ্ঠিত হবে না। উল্লেখ্য, গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় ওই অস্থায়ী আদালত ভবনে ব্যাপক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে, যা বিচার কার্যক্রম শুরুতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে ঘটে যায় নৃশংস হত্যাকাণ্ড। ওই ঘটনায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। পরবর্তীতে, ২০১৩ সালে বিচারিক আদালত এই হত্যাকাণ্ডের মামলায় ১৫২ জনকে ফাঁসি, ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড প্রদান করেন।

কেন শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেছে?

আলিয়া মাদরাসা মাঠে অস্থায়ী আদালত বসানোর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেছে। তারা দাবি করেছে, বিচার কার্যক্রমের জন্য মাঠটি ব্যবহারে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের মূল অভিযোগ কী?

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করছে, মাত্র তিন মাসের জন্য অস্থায়ী আদালত বসানোর কথা বলা হলেও তা দীর্ঘায়িত হয়েছে। বারবার মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ জানালেও কোনো সমাধান হয়নি।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধের কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হয়েছেন।

আন্দোলনের সময় কী ঘটেছে?

বুধবার রাতভর এবং বৃহস্পতিবার সকালেও শিক্ষার্থীরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছে। তারা অস্থায়ী আদালত বন্ধের দাবি জানিয়ে প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছে।

মাদরাসা শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণে কী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে?

এখন পর্যন্ত মাদরাসা শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে কোনো কার্যকর সমাধানের ঘোষণা আসেনি। তবে, পরিস্থিতি সামাল দিতে এবং ভবিষ্যতের জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে প্রশাসন কাজ করছে।

উপসংহার

বকশীবাজারে আলিয়া মাদরাসা শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সরকারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অস্থায়ী আদালতের জন্য মাদরাসা মাঠের ব্যবহার, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে, এবং তারা তা বন্ধ করার দাবিতে সড়ক অবরোধসহ বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছে। যদিও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী পৌঁছেছে, তবে সরকারের উচিত দ্রুততম সময়ে শিক্ষার্থীদের সমস্যার সমাধান করা এবং অস্থায়ী আদালত ব্যবহারের মেয়াদ সীমিত করা। শিক্ষার্থীদের শিক্ষার প্রতি অগ্রাধিকার দিয়ে তাঁদের দাবিগুলো পূরণ করলে এমন পরিস্থিতি ভবিষ্যতে সৃষ্টি হওয়া থেকে রোধ করা যাবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top