স্থগিতের নির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ না করা হলেও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে যে, পোষ্য কোটা বাতিলের কারণে কর্মচারীদের চলমান আন্দোলন এবং শিক্ষকদের সহযোগিতা না পাওয়ার ফলস্বরূপ কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। তবে পরীক্ষা কখন শুরু হবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়নি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রথমবর্ষ স্নাতক/স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষার প্রাথমিক আবেদন গত ৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও জরুরি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তা স্থগিত ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে কবে নাগাদ ভর্তি কার্যক্রম শুরু হতে পারে, তা এখনও অনিশ্চিত।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পোষ্য কোটা বাতিল নিয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে চলমান অস্থিরতা এবং বিজ্ঞপ্তি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। পোষ্য কোটা পুরোপুরি বাতিল করার সিদ্ধান্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীবের ঘোষণার পর এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এরই ধারাবাহিকতায় ৭ জানুয়ারি দুই ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি এবং ৬ জানুয়ারি এক ঘণ্টার মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। পরবর্তীতে ৮ ও ৯ জানুয়ারি পূর্ণদিবস কর্মবিরতিও পালন করেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন মজুমদার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ৪ জানুয়ারি রাতে ভর্তি কার্যক্রম স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার অনলাইনে প্রাথমিক আবেদন শুরুর কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে।
স্থগিতের নির্দিষ্ট কারণ প্রকাশ না করা হলেও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, পোষ্য কোটা বাতিল করায় কর্মচারীদের চলমান আন্দোলন এবং শিক্ষকদের সহযোগিতা না পাওয়ার কারণেই কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। তবে ভর্তি পরীক্ষা কবে শুরু হবে, তা নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
সামিয়া তাসনিম বর্ষা নামের এক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী জানান, “হঠাৎ করে এভাবে ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত হওয়ায় আমরা গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি। এটি আমাদের ওপর বাড়তি মানসিক চাপ তৈরি করছে। আমরা চাই, দ্রুত ভর্তির কার্যক্রম শুরু হোক।”
ভর্তি কার্যক্রম কবে নাগাদ পুনরায় শুরু হতে পারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, “এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।” একই বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহা. ফরিদ উদ্দিন খান। তিনি বলেন, “এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত হয়নি, তবে আশা করছি দ্রুতই শুরু হবে।”
পোষ্য কোটা নিয়ে জটিলতার কারণে ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত হয়েছে কিনা জানতে চাইলে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, “কর্মচারীদের আন্দোলনের কারণে নয়, বরং পোষ্য কোটা বাতিলের ফলে নতুন বিজ্ঞাপন দিতে হবে। কারণ, পত্রিকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞাপনে পোষ্য কোটা ১ শতাংশ উল্লেখ ছিল। এই কারণে ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংশোধনী বিজ্ঞাপন পত্রিকা ও ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।”
ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত হওয়ার কারণ কী?
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভর্তি কার্যক্রম পোষ্য কোটা নিয়ে জটিলতার কারণে স্থগিত হয়েছে। পত্রিকায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞাপনে পোষ্য কোটা ১ শতাংশ উল্লেখ থাকায় তা সংশোধন করে পুনরায় বিজ্ঞাপন দিতে হবে।
পোষ্য কোটা বাতিল নিয়ে কী সমস্যা হয়েছে?
পোষ্য কোটা পুরোপুরি বাতিলের সিদ্ধান্তের ফলে কর্মচারীরা ক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলনে নামেন। এ কারণে ভর্তি কার্যক্রমে অস্থিরতা দেখা দেয়। পোষ্য কোটা সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞাপন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা তৈরি হয়।
ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের বক্তব্য কী?
ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা হঠাৎ ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত হওয়ায় অনিশ্চয়তা ও মানসিক চাপের কথা জানিয়েছেন। তারা দ্রুত ভর্তি কার্যক্রম শুরুর দাবি করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবস্থান কী?
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক এবং উপ-উপাচার্য জানিয়েছেন যে, ভর্তি কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে তারা আশাবাদী যে প্রক্রিয়াটি দ্রুত শুরু হবে।
ভর্তি কার্যক্রম পুনরায় কবে শুরু হতে পারে?
এখনো ভর্তি কার্যক্রম পুনরায় শুরু হওয়ার নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করা হয়নি। ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্ত এবং সংশোধিত বিজ্ঞাপন প্রকাশের পরই কার্যক্রম শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
উপসংহার
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে চলমান অনিশ্চয়তার মূল কারণ পোষ্য কোটা নিয়ে উদ্ভূত জটিলতা। এই জটিলতা শুধুমাত্র কর্মচারী আন্দোলন ও প্রশাসনিক সমন্বয়ের অভাবকেই চিহ্নিত করেনি, বরং ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ এবং সুষ্ঠু কার্যক্রম পরিচালনার প্রয়োজনীয়তাও সামনে এনেছে। দ্রুততম সময়ে এই সমস্যার সমাধান করে ভর্তি কার্যক্রম শুরু করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি। সবার অংশগ্রহণ এবং সমঝোতার মাধ্যমেই কেবল এই অনিশ্চয়তা দূর করা সম্ভব।