সিদ্দিক জোবায়ের বলেন, এখনো বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইএফটির জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করেনি। যদি এমন কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকে যারা এখনো ইএফটির তথ্য জমা দেয়নি, তাদের দ্রুত এ কার্যক্রম সম্পন্ন করার আহ্বান জানাচ্ছি। একাধিকবার এ কার্যক্রমের সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে। আমরা আশা করছি, এটি আগামী ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের বলেছেন, আইবাস++ সফটওয়্যারের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) পদ্ধতিতে বেতন-ভাতা প্রদানের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে জানুয়ারি মাস নাগাদ আমরা প্রকৃত কর্মরত শিক্ষকের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করতে পারব। ইএফটি পদ্ধতি একদিকে যেমন সময়মতো বেতন নিশ্চিত করছে, তেমনি অন্যদিকে প্রকৃত শিক্ষকদের সংখ্যাও সুনির্ধারিত হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে হাইস্কুলে ভর্তির লটারি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সিদ্দিক জোবায়ের বলেন, এখনো বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইএফটির জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করেনি। যদি কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইএফটির তথ্য জমা না দিয়ে থাকে, তাহলে তাদের দ্রুত এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য অনুরোধ করছি। এ কার্যক্রমের সময়সীমা ইতোমধ্যে একাধিকবার বাড়ানো হয়েছে। আমরা আশা করছি, এটি ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
তিনি আরও বলেন, ইএফটি পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষকরা সময়মতো বেতন পাবেন এবং এর ফলে বেতন বিতরণের ক্ষেত্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। আগে বেতন প্রদানে বিভিন্ন অনিয়ম ও সমস্যার অভিযোগ পাওয়া যেত, যেমন কেউ সময়মতো বেতন পাচ্ছিলেন না বা যাকে বেতন দেওয়া হয়েছে, তিনি বাস্তবে কর্মরত ছিলেন না। ইএফটি পদ্ধতি এই সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের বলেছেন, “আমরা লক্ষ্য করছি যে, মাধ্যমিক পর্যায়ে এসে অনেক শিক্ষার্থী ড্রপআউট হয়ে যাচ্ছে। এই শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ মাদরাসা, বিশেষত কওমি মাদরাসায় চলে যাচ্ছে। আমি মাদরাসা শিক্ষাকে খারাপ বলছি না। তবে প্রশ্ন হলো, কেনো তারা মাদরাসায় যাচ্ছে? তারা তো প্রাথমিক পর্যায়ে সাধারণ শিক্ষা দিয়ে শুরু করেছিল। কিন্তু মাধ্যমিকে গিয়ে কেনো একটি বড় অংশ ড্রপআউট হচ্ছে এবং মাদরাসায় চলে যাচ্ছে? এটি আমাদের গভীরভাবে ভাবতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “যেসব শিক্ষার্থী সাধারণ শিক্ষা দিয়ে তাদের যাত্রা শুরু করেছে, তারা যেন শেষ পর্যন্ত এই ধারাটি অব্যাহত রাখতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। আমি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করুন। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় যাতে এই ধরনের ড্রপআউট কমে, সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।”
সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের আরও বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি যে মাধ্যমিক পর্যায়ে এসে অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনা থেকে ঝরে পড়ছে। এসব শিক্ষার্থীর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ মাদরাসায়, বিশেষ করে কওমি মাদরাসায় চলে যাচ্ছে। আমি বলতে চাই না যে মাদরাসা শিক্ষা খারাপ, তবে প্রশ্ন হচ্ছে কেন তারা সাধারণ শিক্ষা থেকে সরে যাচ্ছে। তারা তো প্রাথমিক স্তরে সাধারণ শিক্ষায় শুরু করেছিল। কিন্তু মাধ্যমিকে এসে কেন এই ড্রপআউট হচ্ছে এবং মাদরাসা শিক্ষায় চলে যাচ্ছে—এটি আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চিন্তার বিষয়।
তিনি বলেন, যারা সাধারণ শিক্ষা দিয়ে শুরু করেছে, তারা যেন সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারে, এটি নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। এ বিষয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের প্রতি আমার অনুরোধ, আপনারা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করুন এবং শিক্ষার্থীদের সাধারণ শিক্ষায় ধরে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিন।
ইএফটি কার্যক্রম কী?
ইএফটি (ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার) হল এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়। এই প্রক্রিয়া সময়মতো বেতন নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্রকৃত কর্মরত শিক্ষকদের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণে সহায়তা করে।
ইএফটি কার্যক্রমের সুবিধা কী কী?
ইএফটি পদ্ধতি শিক্ষকদের সময়মতো বেতন প্রদান নিশ্চিত করে। এর পাশাপাশি, এটি বেতন বিতরণে স্বচ্ছতা আনে এবং অনিয়ম রোধ করে। অতীতে এমন অভিযোগ ছিল যে, কেউ বেতন পাচ্ছেন অথচ তিনি কর্মরত নন—ইএফটি সেই সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
কবে থেকে ইএফটি কার্যক্রম কার্যকর হবে?
শিক্ষা সচিব জানিয়েছেন যে, ইএফটি কার্যক্রম ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ইএফটি তথ্য জমা দেওয়ার অবস্থা কী?
বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনও ইএফটির জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য জমা দেয়নি। তাদের দ্রুত তথ্য সরবরাহের অনুরোধ জানানো হয়েছে। এই তথ্য সঠিকভাবে জমা না দিলে তাদের শিক্ষকদের বেতন পেতে সমস্যা হতে পারে।
ইএফটি কার্যক্রমের মাধ্যমে কী জানা সম্ভব হবে?
ইএফটি কার্যক্রম সম্পন্ন হলে প্রকৃত কর্মরত শিক্ষকদের সঠিক সংখ্যা জানা সম্ভব হবে। এর ফলে বেতন প্রদানের ক্ষেত্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে এবং কোনো ধরনের অনিয়ম রোধ করা সম্ভব হবে।
উপসংহার
ইএফটি কার্যক্রম শিক্ষাখাতে বেতন বিতরণের স্বচ্ছতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে শুধু সময়মতো বেতন নিশ্চিত করাই নয়, বরং প্রকৃত কর্মরত শিক্ষকদের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করাও সম্ভব হবে। যদিও কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনো ইএফটির তথ্য জমা দেয়নি, সময়মতো এই তথ্য নিশ্চিত করতে পারলে পদ্ধতিটি আরও কার্যকর হবে। ইএফটি পদ্ধতি শিক্ষাখাতের বেতন-ভাতা ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘমেয়াদি সমাধান এনে দেবে এবং অতীতের বেতন সংক্রান্ত অনিয়ম রোধে সহায়তা করবে। সরকারের এই উদ্যোগ শিক্ষাব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও উন্নয়নের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে।




