বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগের মোট ৩২টি বিষয়ের সিলেবাস প্রকাশ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের প্রণীত নতুন শিক্ষাক্রমে নবম-দশম শ্রেণিতে বিভাগ বিভাজন তুলে দেওয়া হয়েছিল। তবে গণআন্দোলনের ফলে সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার সেই বিভাগ বিভাজন পুনঃস্থাপন করছে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ২০২৬ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি পরীক্ষার জন্য পুনর্বিন্যাসকৃত সংক্ষিপ্ত সিলেবাস, প্রশ্নের ধরন এবং নম্বর বণ্টন প্রকাশ করেছে। নবম-দশম শ্রেণিতে বিভাগ বিভাজন ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা এবং মানবিক বিভাগের মোট ৩২টি বিষয়ের সিলেবাস শনিবার বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকারের প্রণীত ‘নতুন শিক্ষাক্রমে’ নবম-দশম শ্রেণিতে বিভাগ বিভাজন উঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে গণআন্দোলনের প্রেক্ষিতে সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার বিভাগ বিভাজন পুনঃপ্রবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে।
আগামী ২০২৬ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি পরীক্ষার নম্বর বিভাজনে দেখা গেছে, ব্যবহারিক না থাকা বিষয়গুলোতে ৭০ নম্বর রচনামূলক ও ৩০ নম্বর বহুনির্বাচনি অংশ থাকবে। আর ব্যবহারিকসহ বিষয়গুলোতে তত্ত্বীয় অংশে ৭৫ ও ব্যবহারিক অংশে ২৫ নম্বর থাকবে। তত্ত্বীয় অংশে ৪০ নম্বর ও বহুনির্বাচনি অংশে ২৫ নম্বর থাকবে।
এ বছর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ১ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রণীত ‘নতুন শিক্ষাক্রম বা জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২১’ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সরে আসে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক পরিপত্রে উল্লেখ করা হয় যে, বিদ্যমান শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নযোগ্য নয়। এজন্য ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম চূড়ান্ত করে ২০২৬ খ্রিষ্টাব্দে তা পুরোপুরি কার্যকর করার ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষার্থীদের জন্য পূর্ববর্তী শিক্ষাক্রমের আদলে পাঠ্যবই বিতরণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
২০২৬ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা (২০২৫ সালে দশম শ্রেণি সম্পন্ন করা শিক্ষার্থীদের জন্য) বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা ধরে রেখে জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ অনুযায়ী প্রণীত সংশোধিত ও পরিমার্জিত পাঠ্যপুস্তকগুলোর (২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ব্যবহৃত বই) ভিত্তিতে নেওয়া হবে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ অনুসারে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষাভিত্তিক পাঠ্যপুস্তকগুলোর জন্য একটি সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করা হবে, যা শিক্ষার্থীরা এক শিক্ষাবর্ষেই সম্পন্ন করতে পারবে। পাঠদান ও মূল্যায়ন পদ্ধতিও জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ অনুসারে পরিচালিত হবে।
বিভাগ-বিভাজন পুনঃপ্রবর্তনের অংশ হিসেবে ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের পাঠ্যসূচির বইগুলো পরিমার্জন করে ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে বিতরণের জন্য ছাপানোর কাজ চলছে। আগামী বছরের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা, যারা ২০২৬ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে, তারা এই বইগুলো পাবে। এটি শিক্ষার্থীদের পুরনো শিক্ষাক্রমের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ শিক্ষার অভিজ্ঞতা প্রদান করবে।
শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস না করতে চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করলে আপনার স্মার্টফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
এসএসসি সিলেবাস কখন প্রকাশ করা হয়েছে?
এসএসসি সিলেবাস সাধারণত প্রতিটি বছরের শুরুতে বা পরীক্ষা শুরু হওয়ার কিছু আগে প্রকাশ করা হয়। ২০২৬ খ্রিষ্টাব্দের জন্য পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাস সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়েছে।
এসএসসি সিলেবাসে কী কী বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে?
সিলেবাসে বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগের সকল বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যা জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ অনুসারে প্রণীত হয়েছে।
এসএসসি সিলেবাসে কোন পরিবর্তন হয়েছে?
নতুন সিলেবাসে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ পুনর্বিভাজন করা হয়েছে এবং সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করা হয়েছে যাতে শিক্ষার্থীরা এক শিক্ষাবর্ষেই বিষয়গুলো সম্পন্ন করতে পারে।
এসএসসি সিলেবাস প্রকাশের পর শিক্ষার্থীরা কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন?
শিক্ষার্থীরা প্রকাশিত সিলেবাস অনুসরণ করে পড়াশোনা শুরু করতে পারেন এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ অনুযায়ী পাঠদান ও মূল্যায়ন পদ্ধতিতে প্রস্তুতি নিতে হবে।
এসএসসি সিলেবাস কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
এসএসসি সিলেবাস শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণের মূল দিকনির্দেশনা প্রদান করে, যা তাদের সঠিকভাবে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করবে এবং পরীক্ষায় সফল হওয়ার সম্ভাবনা বাড়াবে।
উপসংহার
এসএসসি সিলেবাসের প্রকাশ শিক্ষার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করে, যা তাদের পড়াশোনার পথে স্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেয়। নতুন সিলেবাসে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের বিভাজন পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করা হয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের এক শিক্ষাবর্ষেই বিষয়গুলো সম্পন্ন করতে সাহায্য করবে। এই পরিবর্তন শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতি সহজ করবে এবং তাদের সফলতার পথে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। তাই, সিলেবাসের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলো ভালোভাবে অনুসরণ করে শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষাজীবন সফলভাবে এগিয়ে নিতে পারবে।




