ঢাবি এলাকায় হঠাৎ ৭ তল্লাশি চৌকি, মানুষের ভোগান্তি

ঢাবি এলাকায় হঠাৎ ৭ তল্লাশি চৌকি, মানুষের ভোগান্তি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বহিরাগত যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণে সাতটি প্রবেশপথে তল্লাশিচৌকি বসানো হয়েছে, যার ফলে আজ শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় যানজট সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শুক্র ও শনিবার ক্যাম্পাসে যানবাহন চলাচল সীমিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শাহবাগ, নীলক্ষেত, দোয়েল চত্বরসহ সাতটি প্রবেশমুখে তল্লাশিচৌকি বসানো হয়েছে এবং জরুরি পরিবহন, রোগী, বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি বা বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি ছাড়া কেউ গাড়ি নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারছেন না।

এ সিদ্ধান্তের কারণে ছুটির দিনে ক্যাম্পাস এলাকায় ঘুরতে আসা এবং কাজের উদ্দেশ্যে যাওয়া অনেকেই যানজটে আটকা পড়েছেন। বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে আগেই জানতেন না।

যানজটের কারণে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ‘ডেলিভারিম্যান’ রেজাউল করিম। তিনি বলেন, “আজ সন্ধ্যায় নীলক্ষেতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের আবাসিক এলাকায় একটি পণ্য পৌঁছে দিতে গিয়েছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের বিষয়ে আমার জানা ছিল না, ফলে দীর্ঘ সময় মোটরসাইকেলে নীলক্ষেত মোড়ে আটকে থাকতে হয়েছে।” রেজাউল আরও বলেন, “এ ধরনের সিদ্ধান্ত কার্যকর করার আগে তা ঘোষণা করা উচিত, যাতে মানুষ ভোগান্তিতে না পড়ে।”

পুলিশ জানিয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বহিরাগত যানবাহন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এর ফলে শাহবাগ, নীলক্ষেত, বাংলামোটর, মৎস্য ভবন, আজিমপুর-মিরপুর সড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ মনজুর আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রবেশমুখগুলোতে নিরাপত্তা ও তল্লাশি বাড়ানো হয়েছে, যার ফলে আশপাশের এলাকায় যানজট ছড়িয়ে পড়েছে।”

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান ক্যাম্পাসসংলগ্ন পলাশী মোড়ে নিরাপত্তা ও নজরদারি বক্স উদ্বোধন করেন। তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব বক্সে দায়িত্ব পালনকারীরা নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে ক্যাম্পাসে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধে ভূমিকা পালন করবেন।

উদ্বোধনের পর আজ শুক্রবার থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসের সাতটি প্রবেশপথে চলাচল সীমিত করার সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছে। তবে বকশীবাজার থেকে জগন্নাথ হল ক্রসিং হয়ে পলাশী দিয়ে বের হওয়ার রাস্তাটি খোলা রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ জানায়, ক্যাম্পাসের পরিবেশ বজায় রাখার জন্য এবং শিক্ষার্থীদের চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ছুটির দিনে ক্যাম্পাসে চলাচল সীমিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “যত দিন সম্ভব, এই সিদ্ধান্ত কার্যকর রাখার চেষ্টা করা হবে।” ক্যাম্পাসের সাতটি প্রবেশপথে চলাচল সীমিত রাখা হয়েছে, তবে জরুরি পরিবহন, রোগী, বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথির গাড়ি বা বিশ্ববিদ্যালয়ে অফিসিয়াল কাজে আসলে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করা যাবে।

এছাড়াও, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি আজ সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিয়ে ক্যাম্পাস ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করেছে বলে জানিয়েছেন প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ।

কেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা জোরদার ও বহিরাগত যানবাহন নিয়ন্ত্রণের জন্য সাতটি তল্লাশি চৌকি বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে ক্যাম্পাসের মধ্যে যানবাহন প্রবেশের সংখ্যা সীমিত করা হচ্ছে।

এই তল্লাশি চৌকির কারণে কোথায় যানজট সৃষ্টি হয়েছে?

তল্লাশি চৌকি বসানোর পর শাহবাগ, নীলক্ষেত, বাংলামোটর, মৎস্য ভবন এবং আজিমপুর-মিরপুর সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে যানবাহনের প্রবাহ সীমিত হওয়ায় সমস্যাটি আরও তীব্র হয়েছে।

কি ধরনের যানবাহন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে?

জরুরি পরিবহন, রোগী, বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথির গাড়ি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল কাজে আসা গাড়ি ছাড়া অন্য কোনো যানবাহন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে না।

ক্যাম্পাসে চলাচল সীমিত করার সিদ্ধান্ত কতদিন কার্যকর থাকবে?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যতদিন সম্ভব, এই সিদ্ধান্ত কার্যকর রাখার চেষ্টা করা হবে। তবে ছুটির দিনে বিশেষ করে এই সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন অধিকতর কঠিন হয়ে পড়েছে।

ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কীভাবে উন্নত করা হবে?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিরাপত্তা এবং নজরদারি বক্সগুলো উদ্বোধন করেছেন, যেখানে ক্যাম্পাসের যানবাহন নিয়ন্ত্রণ এবং অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধে ভূমিকা পালন করবে নিরাপত্তাকর্মীরা। এছাড়া, ক্যাম্পাসের পরিবেশ বজায় রাখার জন্য মাদকবিরোধী অভিযানও চালানো হবে।

উপসংহার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি প্রবেশপথে তল্লাশি চৌকি বসানোর সিদ্ধান্ত ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য নেওয়া হলেও, এর ফলে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আশপাশের এলাকায় যানজট ও ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। যদিও জরুরি পরিবহন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল গাড়ি ছাড়াও অন্যান্য যানবাহন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারছে না, তবে এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য হল ক্যাম্পাসের পরিবেশ ঠিক রাখা এবং বহিরাগত যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা। ভবিষ্যতে যদি এই সিদ্ধান্ত দীর্ঘস্থায়ী হতে থাকে, তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিত এটি সম্পর্কে আগে থেকেই গণসচেতনতা সৃষ্টি করা এবং যানজট মোকাবিলার জন্য কার্যকর সমাধান তৈরি করা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top