স্কুলছাত্রকে জ্যান্ত কবর দিয়ে হ*ত্যার চেষ্টা, থানায় অভিযোগ

স্কুলছাত্রকে জ্যান্ত কবর দিয়ে হ*ত্যার চেষ্টা, থানায় অভিযোগ

ফরিদপুরে জিহাদ মাতুব্বর (১২) নামের এক স্কুলছাত্রকে জীবিত অবস্থায় কবর দিয়ে হত্যার চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জিহাদের বাবা গতকাল (রবিবার) রাতে কোতোয়ালি থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেছেন।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন তরুণ এক শিশুকে ধরে রেখেছেন, আর শিশুটি কান্নাকাটি করছে। তরুণদের কেউ বলতে শোনা যাচ্ছে, “এখানে খোঁড়,” “ওখানে খোঁড়।” একজন তরুণকে কোদাল দিয়ে মাটি খুঁড়তেও দেখা গেছে।

জিহাদ ফরিদপুর সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের বড় মাধবপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং ব্যবসায়ী মোস্তাক মাতুব্বরের ছেলে। সে কানাইপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। আজ সোমবার দুপুরে মোস্তাক মাতুব্বর ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা শহরের আলীপুর মহল্লায় অবস্থিত একটি স্থানীয় পত্রিকা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদউজ্জামান বলেন, “এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তের জন্য উপপরিদর্শক ফাহিম ফয়সালকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছি।”

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফাহিম ফয়সাল বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, মোস্তাক মাতুব্বর একজন মাদক ব্যবসায়ী। তাঁর বাড়িতে নিয়মিত জুয়ার আসর বসে। জুয়া ও মাদক সংক্রান্ত বিষয়ে এলাকার তরুণদের সঙ্গে টাকাপয়সার লেনদেন নিয়ে তাঁর বিরোধ ছিল। এর জের ধরেই মোস্তাকের ছেলেকে ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে এ ঘটনা ঘটানো হয়ে থাকতে পারে। এ বিষয়ে তদন্ত কার্যক্রম চলছে এবং বিষয়টি গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

কী ঘটেছিল?

ফরিদপুরে এক স্কুলছাত্রকে জ্যান্ত কবর দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। ভুক্তভোগী ছেলেটিকে মারধরের পর কবর খুঁড়ে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়।

ঘটনায় কারা জড়িত?

অভিযোগ অনুযায়ী, ছয়জন তরুণ—সিফাত মোল্যা, মাসুম শেখ, মারুফ শেখ, শাকিল শেখ, আরাফাত মোল্যা ও সজল এই ঘটনায় জড়িত।

ভুক্তভোগী কার ছেলে?

স্কুলছাত্রটি মোস্তাক মাতুব্বরের ছেলে। তিনি ফরিদপুর সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা।

থানায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?

কোতোয়ালি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে উপপরিদর্শক ফাহিম ফয়সালকে।

কী কারণে এই ঘটনা ঘটেছে?

প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, মোস্তাক মাতুব্বরের মাদক ও জুয়ার লেনদেন নিয়ে অভিযুক্তদের সঙ্গে বিরোধ ছিল, যা এই ঘটনার কারণ হতে পারে।

উপসংহার

এই ঘটনার মাধ্যমে সমাজে চলমান অপরাধ ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ভয়াবহ চিত্র স্পষ্ট হয়েছে। একটি শিশুকে এমন নির্মম পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হওয়া মানবিকতার বিপরীত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচারের আওতায় আনা এবং এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। সমাজের সকল স্তরের মানুষকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে এবং সম্মিলিতভাবে অপরাধ প্রতিরোধে এগিয়ে আসতে হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top