ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন গণমাধ্যমের মান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, পূর্বে প্রকাশিত বইগুলো ছিলো অত্যন্ত নিম্নমানের, যেখানে কাগজ ও ছাপানোর মান ছিলো অত্যন্ত দুর্বল। এমনকি মনে হতো যেনো এগুলো শুধুমাত্র বস্তির ছেলে-মেয়েরা পড়বে। তবে বর্তমানে যে বইগুলো প্রকাশিত হচ্ছে, সেগুলোর মান অনেক উন্নত। উন্নত মানের বই ছাপাতে অবশ্যই খরচ বাড়বে। তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমকে আরও বিশ্লেষণধর্মী এবং গভীর প্রতিবেদন প্রকাশের দিকে মনোযোগী হতে হবে।

সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে ‘ছাপা হচ্ছে ৪০ কোটি পাঠ্যবই, বাজেট বাড়ছে ৫৫০ কোটি টাকা!’—এমন শিরোনামসহ বেশ কিছু প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এসব শিরোনাম উদ্ধৃত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন গতকাল শুক্রবার তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এ মন্তব্য করেন।
অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন বলেন, ‘‘আমাদের মিডিয়া কতটা খারাপ দেখেন! কীভাবে শিরোনাম তৈরি করা হচ্ছে, তা লক্ষ্য করুন। ইত্তেফাকের শিরোনাম: ‘নতুন বছরে ছাপা হচ্ছে ৪০ কোটি পাঠ্যবই, বাজেট বাড়ছে ৫৫০ কোটি টাকা!’ কালেরকণ্ঠের শিরোনাম: ‘পাঠ্যবই ছাপতে ব্যয় বেড়েছে ৭০০ কোটি টাকা, মানে উন্নতি!’ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের শিরোনাম: ‘ছাপা হচ্ছে ৪০ কোটি পাঠ্যবই, বাজেট বাড়ছে ৫৫০ কোটি টাকা!’’’
তিনি আরও লেখেন, ‘‘এভাবে শিরোনাম তৈরি করা হচ্ছে যেনো কোনো অর্থ লোপাট হয়েছে। আসলে যেটি হাইলাইট করা উচিত ছিলো, তা হলো বইয়ের কাগজের মান এবং ছাপার মানের উন্নতি হয়েছে কি না। আমি যখন কমিটিতে ছিলাম, প্রথমেই যে কথা বলেছিলাম তা হলো, আমাদের ছেলেমেয়েদের যে বই দেবো, সেই বইয়ের কাগজ, ছাপার মান এবং ছবির মান উন্নত হতে হবে।’’
পোস্টে তিনি আরো বলেন, এর আগে এই বিষয়ে লিখেছিলাম অনেকবার। এইসব মান নিয়ে তেমন আলাপ না করে এমন শিরোনাম করেছে যাতে মানুষের মনে সন্দেহ জাগে। তবে যতটা মান বেড়েছে, সেই তুলনায় খরচ বেশি বেড়েছে কিনা দেখা উচিত। আগে তো লুটপাট হতো। সেই লুটপাটের টাকা বাঁচিয়ে এইবার কেনো আগের টাকার পরিমাণ দিয়েই উন্নত মানের বই ছাপানো গেলো না কর্তৃপক্ষর সেই ব্যাখ্যাও দেয়া উচিত ‘
কেন বইয়ের মান উন্নত করা গুরুত্বপূর্ণ?
পাঠকদের উন্নত মানের বই সরবরাহ নিশ্চিত করতে, যা তাদের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি করে এবং শিক্ষার মান উন্নত করে।
কিভাবে বইয়ের মান উন্নত করা যায়?
উচ্চমানের লেখক, সম্পাদনা, সঠিক তথ্য, মানসম্পন্ন কাগজ এবং আধুনিক মুদ্রণ প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
বইয়ের মান যাচাই করার উপায় কী?
বিষয়বস্তুর গভীরতা, লেখার শৈলী, সম্পাদনার মান এবং পাঠকদের প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিতে বইয়ের মান নির্ধারণ করা যায়।
মানহীন বই প্রকাশের প্রধান সমস্যাগুলো কী?
পাঠকের আস্থা হারানো, শিক্ষার মান হ্রাস, এবং অপ্রয়োজনীয় ব্যয়।
বইয়ের মান উন্নয়নে কারা ভূমিকা রাখতে পারে?
লেখক, প্রকাশক, সম্পাদক, এবং পাঠক সবাই মিলে বইয়ের মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
উপসংহার
বইয়ের মান উন্নয়ন একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, যা লেখক, প্রকাশক, সম্পাদক এবং পাঠকের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সম্ভব। মানসম্মত বই কেবল জ্ঞান বিতরণই নয়, বরং একটি জাতির সংস্কৃতি ও শিক্ষার মান উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সঠিক পরিকল্পনা, গবেষণা, এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করলে বইয়ের মানোন্নয়ন সম্ভব। এটি শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশ এবং পাঠকদের মানসিক উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।