এবারের এইচএসসিতে যারা পাস করেছো, তাদের সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন! এখন আসল চ্যালেঞ্জ শুরু হলো—ভর্তিযুদ্ধ। তুমি যদি ডাক্তার হতে চাও, কিংবা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চাও, তোমার যে কোন লক্ষ্যই থাকুক, আমি আশা করি তুমি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছো। এখন সেই লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। মনে রেখো, এবারের ভর্তি পরীক্ষা সত্যিকার অর্থে হবে প্রতিযোগিতামূলক, তাই প্রস্তুতি নিতে হবে খুবই মনোযোগ দিয়ে এবং সঠিকভাবে। তোমাদের জন্য শুভকামনা!

জেনে রেখো, সীমিত আসনে সুযোগ পাওয়ার জন্য তোমাদেরকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। তাই নিজের প্রস্তুতিকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাও, এবং কোনোভাবেই সময় নষ্ট করোনা।
মনে রেখো, ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নের ধরন আলাদা হতে পারে। তাই তোমরা আগেভাগে তা নিয়ে ভালোভাবে প্রস্তুতি নাও। আমি নিশ্চিত, সবাই যদি সঠিক প্রস্তুতি নেয়, তবে নিজের যোগ্যতা দিয়ে ভালো অবস্থানে পৌঁছাতে পারবে। তোমাদের জন্য অনেক শুভকামনা!
এবার ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজে পাশের হার শতভাগ। এবছর আমাদের কলেজ থেকে মোট ৯৬১ জন ছাত্র পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে, এর মধ্যে ৮৬৮ জন পেয়েছে জিপিএ-৫। অর্থাৎ, পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ৯০.৩২% ছাত্র-ছাত্রীই জিপিএ-৫ অর্জন করেছে। এই অসাধারণ সাফল্যের পেছনে রয়েছে কলেজের অভিজ্ঞ ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন বোর্ড অব গভর্নরসের অবদান। সম্প্রতি চালু করা একাডেমিক এবং সহপাঠ্য কার্যক্রম, পাঠদানের সুশৃঙ্খল নীতি, নিয়মিত শ্রেণীপাঠদান এবং দুর্বল শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ক্লাস আয়োজন—এসব পদক্ষেপই এই সাফল্যের প্রধান কারণ।
এছাড়া, শিক্ষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টা, উচ্চমানের পাঠদান, অভিভাবকদের সচেতনতা এবং ছাত্রদের একাগ্রতা ও কঠোর পরিশ্রমও এই ফলাফল অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
আমি হৃদয় থেকে আমার ছাত্রদের এবং তাদের অভিভাবকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তাদের সহায়তা এবং পরিশ্রম ছাড়া এই সাফল্য অর্জন সম্ভব হতো না। বিশেষ ধন্যবাদ জানাই আমাদের শিক্ষকদের, যারা নিজেদের অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে ছাত্রদের প্রস্তুত করেছেন।
ছাত্র আন্দোলনের মাঝে আমাদের কলেজের শহীদ ফারহান ফায়াজের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। তার আত্মত্যাগ আমাদের সবার হৃদয়ে চিরকাল অমলিন হয়ে থাকবে।
অন্ততঃ এই কঠিন পরিস্থিতিতেও, আমাদের ছাত্ররা যেভাবে শান্ত-শিষ্টভাবে পরীক্ষা দিয়েছে এবং ভালো ফলাফল করেছে, তাতে আমি তাদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তাদের দৃঢ় মনোবল এবং একাগ্রতার জন্য আমি অত্যন্ত গর্বিত।
শেষে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করতে চাই—এবার রেজাল্ট সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে দেয়া হয়েছে। আন্দোলন পরবর্তী পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষে আর কিছু করার সুযোগ ছিল না, তবে আমরা সকলেই জানি, এই পরিস্থিতিতেও আমাদের ছাত্ররা যে চরম ধৈর্য ও সাহসিকতার সাথে তাদের পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে, সেটি সত্যিই প্রশংসনীয়।
ভর্তির জন্য কী কী প্রয়োজনীয় দলিল বা কাগজপত্র লাগবে?
উত্তর: ভর্তির জন্য সাধারণত নিম্নলিখিত কাগজপত্র লাগবে:
এসএসসি বা সমমান পরীক্ষার মার্কশীট এবং সনদ
এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষার রেজাল্ট সনদ
প্রয়োজনীয় সনদপত্র (যেমন: জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম নিবন্ধন সনদ, অভিভাবকের জাতীয় পরিচয়পত্র)
পাসপোর্ট সাইজ ছবি
কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট ফরম (যদি থাকে)
অন্যান্য যেকোনো কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট দলিলের চাহিদা অনুযায়ী
ভর্তির জন্য কিভাবে প্রস্তুতি নেব?
উত্তর: ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নেয়ার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
বিষয় নির্বাচন: আপনি যে বিষয়ে ভর্তি হতে চান, তার জন্য প্রয়োজনীয় প্রবণতা, আগ্রহ এবং প্রস্তুতি নিশ্চিত করুন।
নোটিশ মনিটরিং: প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা পরীক্ষা সংস্থার ভর্তির বিজ্ঞপ্তি মনিটর করতে হবে।
ভর্তি পরীক্ষা প্রস্তুতি: যদি ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে হয়, তবে আগেই সিলেবাস এবং পরীক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে ভালোভাবে জানুন।
মার্কস শীট: আপনার পূর্ববর্তী পরীক্ষার ফলাফল এবং তার উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে প্রস্তুতি নিন।
টিউটোরিয়াল বা কোচিং: প্রয়োজন মনে করলে কোচিং ক্লাসে যোগ দিতে পারেন।
ভর্তি পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের জন্য কীভাবে প্রস্তুতি
উত্তর: ভর্তি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জন করতে হলে:
সিলেবাস অনুসরণ: ভর্তি পরীক্ষার সিলেবাস ভালোভাবে দেখে শুরু করুন এবং যেকোনো অজানা বিষয় সম্পর্কে অধ্যায়ন করুন।
পুনরাবৃত্তি: নিয়মিত পঠিত বিষয়গুলোর উপর পর্যাপ্ত পুনরাবৃত্তি করুন।
মক টেস্ট: মক পরীক্ষার মাধ্যমে সময় ব্যবস্থাপনা এবং পরীক্ষার ধরন সম্পর্কে ধারণা নিন।
পাঠ্যবই ও রেফারেন্স বই: আপনার বিষয়ভিত্তিক ভাল মানের পাঠ্যবই এবং রেফারেন্স বই ব্যবহার করুন।
স্বাস্থ্য ও বিশ্রাম: পরীক্ষা প্রস্তুতির মাঝেও স্বাস্থ্য এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিশ্চিত করুন।
ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল কবে প্রকাশিত হয়?
উত্তর: প্রতিটি কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল সাধারণত তাদের নিজস্ব সময়সূচি অনুযায়ী প্রকাশিত হয়। এটি আপনি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট বা বিজ্ঞপ্তি থেকে জানতে পারবেন। অনেক প্রতিষ্ঠান ওয়েবসাইট এবং এসএমএসের মাধ্যমে ফলাফল প্রকাশ করে থাকে। ফলাফল প্রকাশের পর, কাউন্সেলিং বা সাক্ষাৎকারের জন্য আরও সময় দেয়া হতে পারে।
ভর্তির জন্য টিউশন ফি বা অন্যান্য খরচ কত হতে পারে?
উত্তর: ভর্তি ফি এবং অন্যান্য খরচ প্রতিটি কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর নির্ভর করে। সাধারণত, সরকারি প্রতিষ্ঠানে খরচ কম হলেও বেসরকারি কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে খরচ তুলনামূলকভাবে বেশি হতে পারে। তবে, ফি-এর ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট বা ভর্তি সংক্রান্ত নোটিশে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। এছাড়া, স্কলারশিপ বা আর্থিক সহায়তার সুযোগও থাকতে পারে, যা খোঁজখবর নিয়ে আগেই প্রস্তুত রাখা উচিত।
উপসংহার
ভর্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি একটি গুরুতর এবং পরিকল্পিত প্রক্রিয়া, যা ছাত্রদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হলেও সঠিক প্রস্তুতি এবং দৃঢ় মনোবল দিয়ে সহজে অতিক্রম করা সম্ভব। সিলেবাস ভালোভাবে বোঝা, সময় ব্যবস্থাপনা, ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের প্রস্তুতি নেয়া, এসবই সফল ভর্তির জন্য অপরিহার্য। এ ছাড়া, ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নীতি সম্পর্কে সচেতন থাকা গুরুত্বপূর্ণ।
অবশেষে, পড়াশোনা, কঠোর পরিশ্রম এবং আত্মবিশ্বাসের মাধ্যমে যেকোনো প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠা সম্ভব। ছাত্রদের এবং তাদের অভিভাবকদের উচিত এই সময়ে একে অপরকে সহায়তা করা, যাতে শিক্ষার প্রতি আগ্রহ এবং মনোযোগ বজায় থাকে। আপনার প্রস্তুতির সঙ্গে একধাপ এগিয়ে থাকা এবং ধৈর্য ধারণ করে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া এই যাত্রাকে সফল করবে।
ভরসা রাখুন, সঠিক প্রস্তুতি ও পরিশ্রমের মাধ্যমে আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারবেন।




