সমাবেশে বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশের মন্ত্রী ও আমলারা শুধু বাড়ি ভাড়া নয়, সম্পূর্ণ বাড়ির সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন। কিন্তু শিক্ষকরা ন্যায্য বাড়ি ভাতা থেকেও বঞ্চিত। তারা আরও বলেন, গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ঢাকার রাস্তায় শুয়ে, বসে ও রাত কাটিয়ে নিজেদের ন্যায্য দাবি জানিয়ে আসছি, কিন্তু এখনো আমাদের কথা শোনার কেউ নেই।

২০ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতা, চাকরি স্থায়ীকরণ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনের সপ্তম দিনে কালো পতাকা মিছিল করেছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে মিছিল শুরু হয়ে দোয়েল চত্বর হয়ে কদম ফোয়ারা পর্যন্ত গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
সমাবেশে শিক্ষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “দেশের মন্ত্রী-আমলারা শুধু বাড়িভাড়া নয়, পুরো বাড়ির সুবিধা পান, অথচ আমরা ন্যায্য বাড়িভাড়া থেকেও বঞ্চিত। গত এক সপ্তাহ ধরে ঢাকার রাস্তায় বসে, শুয়ে, এমনকি ঘুমিয়ে আন্দোলন করছি, কিন্তু আমাদের কথা কেউ শুনছে না।”
এর আগে গত রোববার থেকে তিন দফা দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছিলেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। তবে পুলিশ বাধা দিলে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নেন। পরবর্তী সময়ে সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ ও শাহবাগ অবরোধসহ ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করেন।
গত বৃহস্পতিবার “মার্চ টু যমুনা” কর্মসূচি স্থগিত করে তারা অনশন কর্মসূচিতে যান। একই দিন সরকারের পক্ষ থেকে মূল বেতনের ৫ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া ভাতা (ন্যূনতম ২ হাজার টাকা) দেওয়ার প্রস্তাব জানানো হলেও শিক্ষকরা তা প্রত্যাখ্যান করেন।
শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার জানান, অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে ১ নভেম্বর থেকে ৫ শতাংশ হারে ভাতা দেওয়া সম্ভব, তবে এর বেশি বর্তমানে দেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু শিক্ষকরা সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, এবছর ১০ শতাংশ এবং আগামী বছর আরও ১০ শতাংশ বাড়িভাড়া দিতে হবে।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব দেলাওয়ার হোসেন আজিজী ঘোষণা দেন, “আমাদের দাবি একটাই—২০ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতা দিতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমরণ অনশন চালিয়ে যাবো, কর্মস্থলে ফিরবো না।”
শিক্ষাসহ সর্বশেষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও বিশেষ প্রতিবেদন সবার আগে পেতে দৈনিক আমাদের বার্তা–র ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন।
ভিডিওগুলো যেন মিস না হয়, তাই এখনই দৈনিক আমাদের বার্তা ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল আইকনে ক্লিক করুন।
বেল আইকনে ক্লিক করলে আপনার স্মার্টফোন বা কম্পিউটারে নতুন ভিডিও প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
কেন শিক্ষকরা ‘সি আর আবরার, আর নেই দরকার’ স্লোগান দিয়েছেন?
অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরারের দেওয়া ৫ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতার প্রস্তাবকে অযৌক্তিক ও অসম্পূর্ণ দাবি করে শিক্ষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাই তারা এই স্লোগান তুলেছেন।
কোথায় এই স্লোগান দেওয়া হয়?
শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হওয়া কালো পতাকা মিছিলে অংশ নিয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীরা এই স্লোগান দেন।
শিক্ষকদের মূল দাবি কী?
তাদের তিনটি দাবি—মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতা, চাকরি স্থায়ীকরণ এবং সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণ।
সরকারের প্রস্তাব সম্পর্কে শিক্ষকদের প্রতিক্রিয়া কী ছিল?
সরকার ১ নভেম্বর থেকে ৫ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতা (ন্যূনতম ২ হাজার টাকা) দেওয়ার প্রস্তাব দিলেও শিক্ষকরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।
শিক্ষকদের পরবর্তী কর্মসূচি কী?
তারা ঘোষণা দিয়েছেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মস্থলে ফিরবেন না এবং আমরণ অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।
উপসংহার
অধ্যাপক সি আর আবরারের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ক্ষোভ এখন আরও তীব্র রূপ নিয়েছে। ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতাসহ তিন দফা দাবিতে তারা আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। সরকারের সঙ্গে আলোচনার অগ্রগতি না হলে এই আন্দোলন আরও বিস্তৃত আকার ধারণ করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।




