ডেনমার্কে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ঢালাও অভিযোগ বিভ্রান্তিকর: দূতাবাস

ডেনমার্কে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ঢালাও অভিযোগ বিভ্রান্তিকর: দূতাবাস

সাম্প্রতিক কিছু প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা নাকি শিক্ষার্থী ভিসাকে শ্রমবাজারে প্রবেশের সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, অধিকাংশ শিক্ষার্থী সম্পূর্ণ বৈধ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ডেনমার্কে আসেন। তারা ভর্তি ও বসবাসের সব শর্ত মেনে চলেন এবং উচ্চ টিউশন ফি ও জীবনযাত্রার ব্যয়ও নিজস্ব সামর্থ্যে বহন করেন।

ডেনমার্কে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ভিসা অপব্যবহারের অভিযোগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কোপেনহেগেনে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস। বুধবার (১ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দূতাবাস জানায়, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে এ ধরনের ঢালাও অভিযোগ বিভ্রান্তিকর এবং অন্যায্য।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, কিছু প্রতিবেদনে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের শিক্ষার্থী ভিসাকে শ্রমবাজারে প্রবেশের মাধ্যম হিসেবে উপস্থাপন করা হলেও বাস্তবে অধিকাংশ শিক্ষার্থী বৈধ প্রক্রিয়ায় ডেনমার্কে আসেন, ভর্তি ও বসবাসের সব শর্ত পূরণ করেন এবং উচ্চ টিউশন ফি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বহন করেন।

দূতাবাস জানায়, কিছু অসাধু শিক্ষা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ডেনমার্কের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে অতিরঞ্জিত তথ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করেছে। এর ফলে অনেক শিক্ষার্থী আর্থিক চাপে পড়ে খণ্ডকালীন কাজ করতে বাধ্য হলেও এটি আইনসিদ্ধ এবং তাদের সততা বা শিক্ষার উদ্দেশ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করে না।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অধিকাংশ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী পরিশ্রমী, আইন মেনে চলেন এবং ড্যানিশ বিশ্ববিদ্যালয় ও সমাজে ইতিবাচক অবদান রেখে চলেছেন। তাদের অযথা সাধারণীকরণ করা উচিত নয়।

এছাড়া উল্লেখ করা হয়, অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ড্যানিশ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পূর্ণ বৃত্তি অর্জন করেছেন, যা তাদের একাডেমিক যোগ্যতার প্রমাণ। পাশাপাশি বাংলাদেশি গবেষক, পোস্ট-ডক্টরাল ফেলো ও শিক্ষকরা ডেনমার্কের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন, যা উভয় দেশের জন্যই সুফল বয়ে আনছে।

দূতাবাস জানায়, তারা ড্যানিশ কর্তৃপক্ষ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে, যাতে প্রকৃত শিক্ষার্থীদের আকাঙ্ক্ষা ও সুযোগ সুরক্ষিত থাকে এবং শিক্ষার অপব্যবহার যথাযথভাবে প্রতিরোধ করা যায়।

টি সাধারণ প্রশ্নোত্তর

ডেনমার্কে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কী ধরনের অভিযোগ উঠেছে?

কিছু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা নাকি শিক্ষার্থী ভিসাকে শ্রমবাজারে প্রবেশের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছে।

বাংলাদেশ দূতাবাস এ বিষয়ে কী বলেছে?

দূতাবাস জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে এ ধরনের ঢালাও অভিযোগ বিভ্রান্তিকর ও অন্যায্য।

অধিকাংশ শিক্ষার্থী কীভাবে ডেনমার্কে আসেন?

অধিকাংশ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী বৈধ প্রক্রিয়ায় ভর্তি হন, বসবাসের শর্ত পূরণ করেন এবং উচ্চ টিউশন ফি ও জীবনযাত্রার খরচ বহন করেন।

খণ্ডকালীন চাকরি নেওয়া নিয়ে দূতাবাসের অবস্থান কী?

দূতাবাস জানায়, আর্থিক চাপে অনেক শিক্ষার্থী খণ্ডকালীন কাজ করতে বাধ্য হলেও এটি ড্যানিশ আইনে অনুমোদিত এবং তাদের উদ্দেশ্য বা সততা প্রশ্নবিদ্ধ করে না।

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের একাডেমিক অবদান কীভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে?

উত্তর: অনেক শিক্ষার্থী পূর্ণ বৃত্তি অর্জন করেছেন এবং গবেষক ও শিক্ষক হিসেবে ডেনমার্কের বিশ্ববিদ্যালয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন, যা উভয় দেশের জন্য ইতিবাচক ফল বয়ে আনছে।

উপসংহার

ডেনমার্কে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ভিসা অপব্যবহারের অভিযোগকে বিভ্রান্তিকর ও অন্যায্য বলে অভিহিত করেছে কোপেনহেগেনের বাংলাদেশ দূতাবাস। অধিকাংশ শিক্ষার্থী বৈধ প্রক্রিয়ায় ভর্তি হয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং ড্যানিশ সমাজ ও শিক্ষা ব্যবস্থায় ইতিবাচক অবদান রাখছেন। তাই শিক্ষার্থীদের অযথা সাধারণীকরণ না করে তাদের প্রকৃত সাফল্য ও অবদানকে মূল্যায়ন করাই সময়ের দাবি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top