বেরোবিতে ভর্তি হলেন আঙুলবিহীন সেই মিনারা

বেরোবিতে ভর্তি হলেন আঙুলবিহীন সেই মিনারা

মিনারার ভর্তি হওয়ার খবরটি সত্যিই আনন্দের। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে তার সুযোগ পাওয়া এবং অর্থাভাবে উদ্বেগ থাকা সত্ত্বেও তিনি শেষ পর্যন্ত ভর্তি হয়েছেন, এটি একটি অনুপ্রেরণামূলক গল্প।

মোহাম্মদ রাউফুল আজম খান, বিভাগীয় প্রধান, সোমবার এই সুখবরটি জানিয়েছেন। মিনারার মতো শিক্ষার্থীদের জন্য এ ধরনের সুযোগ গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তারা নিজেদের স্বপ্ন পূরণের পথে অগ্রসর হতে সক্ষম হচ্ছে। আশা করি, মিনারা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার শিক্ষাজীবনকে আরও উজ্জ্বল করতে পারবে।

বিভাগের পক্ষ থেকে তার নতুন যাত্রার জন্য শুভ কামনা

মিনারার ভর্তি নিয়ে উপাচার্য প্রফেসর ড. শওকাত আলীর দ্রুত পদক্ষেপ সত্যিই প্রশংসনীয়। তিনি বিষয়টি জানার পরই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নির্দেশনা দেন, যাতে মিনারার ভর্তি নিশ্চিত করা যায়। সোমবার মিনারার ভর্তি হওয়ার খবরটি শিক্ষাঙ্গনে একটি নতুন আশা নিয়ে এসেছে।

মিনারার প্রেরণার উৎস তার অদম্য ইচ্ছা শক্তি। জন্ম থেকেই দুই হাতে আঙুল না থাকা সত্ত্বেও তিনি হাতের কবজির সাহায্যে লেখালেখি করেন। কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার কাঁচকোল দক্ষিণ বাঁধ এলাকার দিনমজুর মো. রফিকুল ইসলাম এবং মৃত মর্জিনা বেগমের মেয়ে মিনারা, দুই বোনের মধ্যে ছোট।

তার এই দৃঢ়তা ও অধ্যবসায় সত্যিই উদাহরণীয়। আশা করি, মিনারা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার লক্ষ্য অর্জনে সফল হবে এবং আরও অনেকের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠবে।

মিনারার জীবনযুদ্ধের গল্প সত্যিই inspiratory। তিনি জীবনে হার মানতে নারাজ, যা তার কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায় প্রমাণ করে। জন্মগতভাবে দুই হাতে আঙুল না থাকা সত্ত্বেও, কবজির সাহায্যে লেখার মাধ্যমে পিইসি, জেডিসি ও দাখিল পরীক্ষায় সফল হয়েছেন। পরে কারমাইকেল কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হয়ে ২০২২ সালে কৃতকার্য হন এবং কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজে হিসাববিজ্ঞানে অনার্সে ভর্তি হন।

মিনারার পরিবারের গল্পও একেবারে হৃদয়বিদারক। মায়ের মৃত্যু, বাবার সাতবার নদী ভাঙনের শিকার হওয়া এবং তারপর আবার অন্যের সঙ্গে বিবাহ — এসব পরিস্থিতি তার জীবনকে কঠিন করেছে। তার বাবা, মো. রফিকুল ইসলাম, একজন দিনমজুর, যিনি অভাবের মধ্যে সংসার চালান। নদী ভাঙনের ফলে পাউবো বাঁধে আশ্রয় নিতে হয়েছিল তাদের, কিন্তু সেখানেও কর্তৃপক্ষের কারণে তাদের বাড়ি ভেঙে যায়।

এতে যা প্রমাণিত হয়, তা হলো মিনারার অদম্য ইচ্ছা শক্তি ও সংকল্প। সে কঠিন পরিস্থিতিতে থেকেও পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে এবং এবার বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়ে নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। আশা করি, সে তার লক্ষ্যে পৌঁছাবে এবং সমাজের জন্য একটি উদাহরণ হয়ে উঠবে

মিনারা কেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন?

মিনারা ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হয়েছেন তার শিক্ষা জীবনের পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে এবং তার স্বপ্ন পূরণের জন্য।

মিনারার অতীত শিক্ষা কেমন ছিল?

মিনারা জন্মগতভাবে দুই হাতে আঙুল না থাকা সত্ত্বেও পিইসি, জেডিসি ও দাখিল পরীক্ষায় পাস করেছেন। পরে তিনি কারমাইকেল কলেজ থেকে এইচএসসি কৃতকার্য হন এবং কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজে হিসাববিজ্ঞানে অনার্সে ভর্তি হন।

মিনারার পরিবার সম্পর্কে কিছু বলুন।

মিনারার বাবা মো. রফিকুল ইসলাম একজন দিনমজুর। তার মা মারা গেছেন, এবং নদী ভাঙনের কারণে তাদের পরিবার বিভিন্ন ধরনের সংকটের মুখোমুখি হয়েছে।

মিনারার শিক্ষাগত অগ্রগতির মূল উপাদান কী?

মিনারার অদম্য ইচ্ছা শক্তি ও অধ্যবসায় তাকে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে সাহায্য করেছে। তিনি হাতের কবজির সাহায্যে লেখালেখি করেন এবং পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছেন।

মিনারার ভর্তি হওয়া নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কি পদক্ষেপ নিয়েছে?

উপাচার্য প্রফেসর ড. শওকাত আলী বিষয়টি জানার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে নির্দেশ দেন মিনারার ভর্তি নিশ্চিত করার জন্য।

মিনারার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

মিনারার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হলো তার শিক্ষাজীবনকে সফল করে তোলা এবং একটি ভালো ক্যারিয়ার গড়ে তোলা।

মিনারার জন্য কী ধরনের সমর্থন দেওয়া হচ্ছে?

বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মিনারাকে বিভিন্ন ধরনের সহায়তা এবং উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে যাতে সে তার পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারে।

উপসংহার

মিনারার অধ্যবসায় ও সাহসিকতা সত্যিই প্রণোদনাদায়ক। তিনি জীবনযুদ্ধে নানা বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হলেও, তার ইচ্ছাশক্তি তাকে সফলতার পথে নিয়ে যাচ্ছে। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ভর্তি হওয়া তার জন্য একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা। মিনারার গল্প আমাদের শেখায়, কঠোর পরিশ্রম এবং সংকল্পের মাধ্যমে যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব। তার এই যাত্রা শুধুমাত্র নিজের জন্য নয়, বরং সমাজের অন্যান্য শিক্ষার্থীর জন্যও অনুপ্রেরণা হয়ে উঠবে। আশা করি, মিনারা তার লক্ষ্য পূরণে সফল হবে এবং আরও অনেকের জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top