বাংলাদেশের স্বল্পব্যয়ী ও কার্যকর স্বাস্থ্য উদ্ভাবন, ভ্যাকসিন ও জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে অগ্রগতি শুধু দেশের জন্য নয়, বিশ্বব্যাপী উপকার বয়ে আনতে পারে।

ইইউর ভূয়সী প্রশংসা: বাংলাদেশের স্বাস্থ্য গবেষণায় বৈশ্বিক সম্ভাবনা
বাংলাদেশের স্বল্পব্যয়ী, কার্যকর স্বাস্থ্য উদ্ভাবন এবং ভ্যাকসিন ও জিনোম সিকোয়েন্সিং–সংক্রান্ত অগ্রগতি প্রশংসিত হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পক্ষ থেকে। এসব উদ্ভাবন কেবল বাংলাদেশ নয়, বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের উপকারে আসতে পারে বলে উল্লেখ করেছেন ইইউ প্রতিনিধি দলের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ড. বের্ন্ড স্প্যানিয়ার।
সোমবার ঢাকায় অবস্থিত বৈশ্বিক স্বাস্থ্য গবেষণার শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআর,বি পরিদর্শনকালে তিনি এই মন্তব্য করেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূতাবাস এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
ড. স্প্যানিয়ার বলেন, “ভ্যাকসিন, জিনোম সিকোয়েন্সিং এবং স্বল্পব্যয়ী স্বাস্থ্য উদ্ভাবনে বাংলাদেশের এই অগ্রগতি অত্যন্ত অনুপ্রেরণাদায়ক এবং অন্যান্য দেশ ও মহাদেশের জন্যও উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনা রাখে।” তিনি আইসিডিডিআর,বি–এর বৈশ্বিক স্বাস্থ্য খাতে অবদানের প্রশংসা করেন।
এই ধরনের উদ্ভাবন এবং গবেষণার মাধ্যমে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যখাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে গবেষণা ও উদ্ভাবনে বিনিয়োগকে গুরুত্ব দিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। তাদের এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে তারা সমতা ও স্থায়িত্বভিত্তিক স্বাস্থ্য সমাধানে জোর দিচ্ছে।
ঢাকাভিত্তিক বৈশ্বিক স্বাস্থ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআর,বি দীর্ঘদিন ধরে কম খরচে উদ্ভাবনী সমাধানের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছে। ডায়রিয়ার জন্য মৌখিক স্যালাইন (ওরাল রিহাইড্রেশন থেরাপি) আবিষ্কার এবং টিকাবিষয়ক গবেষণার মতো উদ্ভাবন লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন বাঁচাতে সহায়তা করেছে, শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বজুড়ে।
ইইউ প্রতিনিধি ড. বের্ন্ড স্প্যানিয়ারের সাম্প্রতিক আইসিডিডিআর,বি সফর এই গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের আগ্রহ ও সমর্থনকে নতুন করে তুলে ধরে। সফরের মাধ্যমে ইইউ বাংলাদেশের গবেষণা ও উদ্ভাবন খাতকে সমর্থনের আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত করেছে, যা একটি সুস্থ, স্থিতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তারা বিশ্বাস করে।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পক্ষ থেকে কে এই প্রশংসা করেন?
ইইউ প্রতিনিধিদলের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ড. বের্ন্ড স্পানিয়ার ঢাকার আইসিডিডিআর,বি সফরকালে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে উদ্ভাবনের প্রশংসা করেন।
ইইউ কী ধরনের উদ্ভাবনের প্রশংসা করেছে?
ভ্যাকসিন, জিনোম সিকোয়েন্সিং এবং স্বল্প খরচে কার্যকর স্বাস্থ্য উদ্ভাবন—যেগুলো বাংলাদেশের পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে মানুষের উপকারে আসতে পারে—এইসব অগ্রগতির প্রশংসা করেছে ইইউ।
ড. স্পানিয়ার আইসিডিডিআর,বি সম্পর্কে কী মন্তব্য করেন?
তিনি বলেন, আইসিডিডিআর,বি-তে চলমান গবেষণা এবং উদ্ভাবন অত্যন্ত অনুপ্রেরণাদায়ক এবং এটি অন্যান্য দেশ ও মহাদেশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ সম্ভাবনা তৈরি করছে।
আইসিডিডিআর,বি কোন ধরনের কাজ করে?
আইসিডিডিআর,বি একটি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান, যা দীর্ঘদিন ধরে ডায়রিয়া, ভ্যাকসিন উন্নয়ন, জিনোম গবেষণা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থায় স্বল্পব্যয়ী সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
এই স্বীকৃতির আন্তর্জাতিক গুরুত্ব কী?
ইইউর এই প্রশংসা বাংলাদেশের উদ্ভাবনী সক্ষমতা ও বৈশ্বিক স্বাস্থ্য খাতে অবদানকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা ভবিষ্যতে আরও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে।
উপসংহার
স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের স্বল্প খরচের উদ্ভাবন ও গবেষণা কার্যক্রম আজ আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসিত ও স্বীকৃত। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে আইসিডিডিআর,বি-র উদ্ভাবনী কাজের প্রশংসা প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো বৈশ্বিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে সক্ষম। এই স্বীকৃতি ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির পাশাপাশি, বাংলাদেশকে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য গবেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে রূপান্তরিত করতে সহায়ক হবে।




