“নলছিটির চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়নি। কেন একজন শিক্ষার্থীও পাস করতে পারেনি, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হবে।”

চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার চারটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ফলাফল অত্যন্ত হতাশাজনক হয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের একটিতেও কোনো শিক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। এ ঘটনা স্থানীয়ভাবে চরম উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে এবং শিক্ষা ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনায় গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
অভিভাবক মহল এ ব্যর্থতাকে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অব্যবস্থাপনা ও দায়হীনতার প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন। তাঁরা দ্রুত সময়োপযোগী ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
বিষয়টি বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের দৃষ্টিগোচর হলে, বোর্ড কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানায়। বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকী বলেন, “নলছিটির চারটি প্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি। কেন একজন শিক্ষার্থীও উত্তীর্ণ হতে পারেনি, সে বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হবে। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় তদন্ত শেষে দায়ী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
গত বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) প্রকাশিত ফলাফলে এ চিত্র স্পষ্ট হয়ে ওঠে। শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, শুধু শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নয়, দীর্ঘমেয়াদে শিক্ষার মান উন্নয়নে পরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।
চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার চারটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কেউ পাস করতে পারেনি—এমন অপ্রত্যাশিত ফলাফল প্রকাশ পাওয়ার পর জেলাজুড়ে চলছে সমালোচনার ঝড়। এতে স্থানীয়ভাবে শিক্ষা ব্যবস্থার গুণগত মান নিয়ে উঠেছে বড় প্রশ্ন।
ফল বিশ্লেষণে জানা গেছে, কুলকাঠি ইউনিয়নের দেলদুয়ার মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১৩ জন, রানাপাশা ইউনিয়নের ভেরনবাড়িয়া সিএসইউ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ৭ জন, মাটিভাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১৭ জন এবং দপদপিয়া ইউনিয়নের জুরকাঠি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় থেকে ১১ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। কিন্তু চারটি বিদ্যালয়ের কেউই উত্তীর্ণ হয়নি।
এ নিয়ে অভিভাবকরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অনেকেই বিষয়টিকে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যর্থতা ও ব্যবস্থাপনার ঘাটতি হিসেবে দেখছেন। তাঁরা দ্রুত কার্যকর ও সময়োপযোগী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
বিষয়টি বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের নজরে আনলে, বোর্ড কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের আশ্বাস দেন। বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকী বলেন,
“নলছিটির চারটি প্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি। কেন একজন শিক্ষার্থীও উত্তীর্ণ হতে পারেনি, সে বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হবে। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় তদন্ত শেষে দায়ী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
এমন দৃষ্টান্তমূলক ব্যর্থতা শুধু সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়গুলোর নয়, বরং সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতিফলন—এমনটাই মনে করছেন শিক্ষানবিশ ও অভিজ্ঞরা।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী
কোন চারটি স্কুলে কেউ পাস করতে পারেনি?
নলছিটির দেলদুয়ার মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ভেরনবাড়িয়া সিএসইউ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাটিভাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং জুরকাঠি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়—এই চারটি বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থীই এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়নি।
মোট কতজন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল?
এই চারটি প্রতিষ্ঠানের মোট ৪৮ জন শিক্ষার্থী ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল।
এ ঘটনায় কী ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে শিক্ষা বোর্ড?
বরিশাল বোর্ডের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, ব্যর্থতার কারণ জানতে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে এবং তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিভাবক ও স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া কী?
অনেক অভিভাবক একে বিদ্যালয়গুলোর চরম ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন। তারা শিক্ষার মানোন্নয়নে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি তুলেছেন।
ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি এড়াতে কী করা হবে?
শিক্ষা বোর্ডের পক্ষ থেকে দুর্বল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করে একাডেমিক পরিবেশ উন্নয়নে বিশেষ মনোযোগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তদন্ত শেষে আরও সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উপসংহার
নলছিটির চারটি বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষায় শূন্য পাসের ঘটনা শুধু ওই চার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নয়, বরং সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থার এক গভীর সংকেত বহন করে। বিষয়টি শিক্ষা বোর্ডের নজরে আসায় এখন তদন্ত ও জবাবদিহির মাধ্যমে দায় নিরূপণ এবং গঠনমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস পাওয়া গেছে। তবে দীর্ঘমেয়াদে শিক্ষার মানোন্নয়নে বিদ্যালয় পরিচালনা, শিক্ষক নিয়োগ ও একাডেমিক মনিটরিংয়ের ওপর জোর দেওয়া জরুরি—তবেই এমন অস্বাভাবিক ফল রোধ করা সম্ভব হবে।




