ইরানের ইমাম হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েলের হামলা

ইরানের ইমাম হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েলের হামলা

“যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস অ্যাকটিভিস্টস জানিয়েছে, ইরানজুড়ে ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫৮৫ জন নিহত এবং ১,৩২৬ জন আহত হয়েছেন।”

ইরানের রাজধানী তেহরানের পূর্ব উপকণ্ঠে অবস্থিত ইমাম হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। বুধবার ইরানি সংবাদমাধ্যমের বরাতে এ খবর জানিয়েছে বিবিসি।

উল্লেখ্য, ইমাম হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়কে ইরানের অভিজাত সামরিক বাহিনী ইসলামিক রেভ্যুলুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি)-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত বলে ধরা হয়।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস অ্যাকটিভিস্টস জানিয়েছে, ইরানজুড়ে ইসরায়েলের চালানো হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫৮৫ জন নিহত এবং ১,৩২৬ জন আহত হয়েছেন। এই তথ্যটি প্রকাশ করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।

সংস্থাটির মতে, নিহতদের মধ্যে ২৩৯ জন বেসামরিক নাগরিক এবং ১২৬ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য রয়েছেন, যাদের তারা শনাক্ত করতে পেরেছে।

এদিকে ইসরায়েলি হামলায় হতাহতের বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য দিয়েছে ইরান সরকার। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ২২৪ জন নিহত এবং ১,২৭৭ জন আহত হয়েছেন। এই তথ্যটিও প্রকাশ করেছে আল-জাজিরা।

চলমান সংঘাতে ইরান সরকার নিয়মিতভাবে হতাহতের তথ্য প্রকাশ করছে না। সর্বশেষ সরকারি তথ্য প্রকাশ করা হয়েছিল গত সোমবার, যেখানে নিহতের সংখ্যা ২২৪ জন এবং আহতের সংখ্যা ১,২৭৭ জন বলে উল্লেখ করা হয়।

তবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, প্রকৃত হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনভিত্তিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস অ্যাকটিভিস্টস জানিয়েছে, ইরানজুড়ে ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৫৮৫ জন নিহত এবং ১,৩২৬ জন আহত হয়েছেন।

এদিকে, ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর আব্বাসের শহিদ রাজি বন্দরে গত ২৬ এপ্রিল ভয়াবহ বিস্ফোরণে ২৫ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন। বিস্ফোরণটি রাসায়নিক কনটেইনারে আগুন লাগার ফলে ঘটে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইরানের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্টফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন

ইমাম হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলার কারণ কী?

ইসরায়েলি বাহিনী ইমাম হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা চালিয়েছে বলে জানা গেছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ইরানের ইসলামিক রেভ্যুলেশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি)-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত বলে ধরা হয়। তবে হামলার সুনির্দিষ্ট কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
dhakapost.com

হামলায় কতজন হতাহত হয়েছেন?

হামলায় হতাহতের সঠিক সংখ্যা সম্পর্কে ইরান সরকার এখনও কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি। তবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, ইরানজুড়ে ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৫৮৫ জন নিহত এবং ১,৩২৬ জন আহত হয়েছেন।

ইরান সরকার হামলার প্রতিক্রিয়া কী?

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলী খামেনি ইসরায়েলের হামলার বিষয়ে সতর্ক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, ইসরায়েলের হামলাকে ‘অতিরঞ্জিত কিংবা কমিয়ে’ দেখা ঠিক হবে না। প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, ইরান ওই হামলার ‘যথাযথ জবাব দিবে’, তবে তিনি বলেছেন যে তেহরান যুদ্ধ চায়নি।

ইরান কি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা চালাবে?

ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ হোসেন বাঘেরি বলেছেন, ইসরায়েল যদি প্রতিক্রিয়া জানায়, তাহলে ইরান আরও বিস্তৃত পরিসরে হামলা চালানোর সক্ষমতা রাখে। তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘যদি ইহুদিবাদী শাসককে নিয়ন্ত্রণ না করা হয় এবং ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করা হয়, তাহলে আমরা ইসরায়েলের সব ধরনের অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করবো।’
risingbd.com

ইরান কি ইসরায়েলের বেসামরিক স্থাপনায় হামলা চালাবে?

ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ হোসেন বাঘেরি বলেছেন, ইসরায়েলে যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে, তা কেবল সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে সীমাবদ্ধ ছিল। তবে তিনি আরও বিস্তৃত আক্রমণের বিকল্প রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের ক্ষমতা ছিল ইসরায়েলের অর্থনৈতিক অবকাঠামোতে হামলা করার, কিন্তু আমরা শুধুমাত্র সামরিক ঘাঁটিকে লক্ষ্যবস্তু করেছি।

উপসংহার

ইরানের তেহরানে অবস্থিত ইমাম হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলা আন্তর্জাতিক মহলে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। এই হামলার মাধ্যমে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে, যা মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি করছে। আন্তর্জাতিক মহল উভয় পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।

ইরান সরকার হামলার পর থেকে হতাহতের তথ্য প্রকাশে সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে, যা পরিস্থিতির অস্বচ্ছতা বাড়িয়েছে। এদিকে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো হতাহতের সংখ্যা সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য প্রকাশ করেছে, যা ইরানের সরকারি হিসাবের চেয়ে অনেক বেশি।

এই পরিস্থিতিতে, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক মহল পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং উভয় পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top