“কার্যবিবরণীর উদ্ধৃতি দিয়ে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের প্রচারণা ও উসকানির সরব মাধ্যম শিগগিরই নিস্ক্রিয় হয়ে পড়বে।”

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের ভবনে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানায়, কিছুক্ষণ আগেই এ হামলা সংঘটিত হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যমে সংক্ষিপ্ত এক ঘোষণায় বলা হয়েছে, ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তু এখন ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও রেডিও। তবে এ পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতি বা হামলার বিস্তারিত কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
এ হামলার অল্প কিছু সময় আগে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাৎজ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “ইরানের প্রচারণা ও উসকানির মেগাফোন অদৃশ্য হতে যাচ্ছে।” তার এই মন্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে এএফপি জানায়, ইরানের রাষ্ট্রীয় প্রচারমাধ্যমের ওপর সরাসরি হামলার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন কাৎজ।
এর আগে, ইরানের পশ্চিমাঞ্চলীয় কেরমানশাহ শহরের একটি হাসপাতালে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। হামলায় হাসপাতালটির একাংশের ছাদ ধসে পড়ে এবং এতে কয়েকজন রোগী আহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কেরমানশাহর একটি হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলাকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং যুদ্ধাপরাধ হিসেবে অভিহিত করেছে।
তেহরানে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এসমাইল বাঘাঈ অভিযোগ করেন, ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে বেসামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। তিনি বলেন, “হাসপাতাল ও আবাসিক এলাকায় হামলা আন্তর্জাতিক আইনের মারাত্মক লঙ্ঘন এবং যুদ্ধাপরাধ। ইতিহাস এই ঘটনার বিচার করবে এবং এই শাসনের মিত্রদের জন্য চিরস্থায়ী লজ্জা রেখে যাবে।”
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের ফারস ও তাসনিম সংবাদ সংস্থার প্রকাশিত একাধিক ভিডিও যাচাই করে তারা নিশ্চিত হয়েছে, হামলায় কেরমানশাহ শহরের ফারাবি হাসপাতালের একটি অংশের ছাদ ধসে পড়েছে এবং অন্যান্য অংশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এর আগে ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যমের ভবনেও হামলা চালায় ইসরায়েল। তেহরানের দাবি, এই হামলা ইরানি প্রচারমাধ্যমকে ‘অদৃশ্য’ করার হুমকিরই বাস্তবায়ন।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ভবনে কবে হামলা চালায় ইসরায়েল?
হামলাটি সম্প্রতি (সুনির্দিষ্ট সময় প্রকাশিত হয়নি) সংঘটিত হয়েছে বলে জানিয়েছে আল-জাজিরা। এ হামলা ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যমের ওপর সরাসরি হামলার ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
হামলার পেছনে ইসরায়েলের উদ্দেশ্য কী ছিল?
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাৎজ এর আগে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, “ইরানের প্রচারণা ও উসকানির মেগাফোন অদৃশ্য হতে যাচ্ছে।” এই বক্তব্যের ভিত্তিতে ধারণা করা হচ্ছে, ইরানি রাষ্ট্রীয় মিডিয়াকে চুপ করিয়ে দিতেই হামলা চালানো হয়েছে।
হামলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কতটা?
এখন পর্যন্ত ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের তরফ থেকে ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। সংক্ষিপ্ত এক ঘোষণায় বলা হয়েছে, তারা ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।
ইরানের প্রতিক্রিয়া কী ছিল এই হামলার ঘটনায়?
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হামলাটিকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং যুদ্ধাপরাধ হিসেবে অভিহিত করেছে। মুখপাত্র এসমাইল বাঘাঈ বলেন, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক ও গণমাধ্যম স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে।
এর আগে ইসরায়েল আর কোথায় হামলা চালায়?
এই হামলার আগে কেরমানশাহ শহরের ফারাবি হাসপাতালে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে হাসপাতালের ছাদ ধসে পড়ে এবং কয়েকজন রোগী আহত হয়। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন ভিডিও বিশ্লেষণ করে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
উপসংহার
ইসরায়েলের এই সামরিক অভিযান শুধু একটি রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যমকে লক্ষ করেই সীমাবদ্ধ ছিল না—বরং এটি বৃহত্তর ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার প্রতিফলন। কেরমানশাহের হাসপাতালসহ বেসামরিক স্থাপনায় হামলা, এবং ইরান সরকারের প্রতিক্রিয়া বিষয়টিকে আরও জটিল ও উদ্বেগজনক করে তুলেছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী সংবাদমাধ্যম ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্যবস্তু করা একটি গুরুতর অপরাধ। ফলে এই ঘটনাগুলোর পরিণতি শুধু মধ্যপ্রাচ্যেই নয়, বরং আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এ অবস্থায় সবার জন্য জরুরি হয়ে উঠেছে সংযম, কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এবং মানবিক আইন মেনে চলা।




