সচিবালয়ে কর্মচারীদের বিক্ষোভ মিছিল

সচিবালয়ে কর্মচারীদের বিক্ষোভ মিছিল

“সরকারি চাকরি আইন সংশোধন সংক্রান্ত অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরাম আজও বিক্ষোভ মিছিল করেছে।”

সরকারি চাকরি আইন সংশোধন সংক্রান্ত অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের উদ্যোগে আজ রোববার (১ জুন) ফের বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বেলা ১১টার দিকে তথ্য ভবনের দিক থেকে ২০ থেকে ৩০ জনের একটি দল মিছিল নিয়ে বাদামতলায় এসে জড়ো হয়। এ সময় হ্যান্ডমাইকে অন্য সহকর্মীদের মিছিলে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান তারা।

আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, দাবি আদায়ের অংশ হিসেবে আজই অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টার বরাবর স্মারকলিপি জমা দেওয়া হবে।

এর আগে গত বুধবার আন্দোলনরত কর্মচারীরা ঘোষণা দিয়েছিলেন, বৃহস্পতিবার (৩০ মে) থেকে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার শান্তিপূর্ণ কর্মবিরতি পালন করবেন তারা।

উল্লেখ্য, গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদ সরকারি চাকরি আইন সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন দেয় এবং তা অধ্যাদেশ আকারে জারি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এর প্রতিবাদে ২৪ মে সকাল থেকে দিনভর সচিবালয়ে বিক্ষোভ করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের আপত্তি সত্ত্বেও রাষ্ট্রপতির অনুমোদন শেষে ২৫ মে রাতে সংশোধিত অধ্যাদেশটি জারি করা হয়।

সংশোধিত সরকারি চাকরি আইনে বিদ্যমান বিধানের সঙ্গে নতুনভাবে ‘৩৭ক’ নামের একটি ধারা সংযোজন করা হয়েছে। এই ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে, কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তাকে দুই দফায় সাত দিন করে নোটিশ দেওয়া হবে। পরবর্তী তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।

ঘন ঘন জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন

কেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা বিক্ষোভ করছেন?

সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে নতুন একটি অধ্যাদেশ (যার মধ্যে ‘৩৭ক’ ধারা সংযুক্ত) জারি করা হয়েছে। এই সংশোধনের প্রতিবাদে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিক্ষোভ করছেন, তাদের দাবি হলো—অধ্যাদেশটি বাতিল করতে হবে।

নতুন ‘৩৭ক’ ধারায় কী বলা হয়েছে?

এই ধারায় বলা হয়েছে, কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তাকে দুই দফায় সাত দিন করে নোটিশ দেওয়া হবে। দায় প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।

বিক্ষোভের সময় ও ধরণ কী ছিল?

বিক্ষোভকারীরা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করেছেন এবং কর্মবিরতি পালন করছেন। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার কর্মবিরতি কর্মসূচি চলছে।

এ আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে কে বা কোন সংগঠন?

বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছে সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরাম। তারাই কর্মসূচি আহ্বান ও বাস্তবায়ন করছে।

কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলছেন আন্দোলনকারীরা?

তারা ইতোমধ্যে সরকারের উপদেষ্টাদের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন এবং দাবি পূরণ না হলে কর্মসূচি আরও তীব্র করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন।

উপসংহার

সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে ‘৩৭ক’ ধারা যুক্ত করে অধ্যাদেশ জারি করাকে কেন্দ্র করে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা মনে করছেন, এই নতুন বিধান তাদের চাকরির নিরাপত্তা ও অধিকারকে হুমকির মুখে ফেলবে। তাই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ও বিক্ষোভের মাধ্যমে তারা সংশোধিত অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছেন। সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি যৌক্তিক ও সমন্বিত সমাধানে পৌঁছানোই এখন সময়ের দাবি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top