“আমরা দীর্ঘদিন ধরে উপাচার্য শুচিতা শরমিনের পদত্যাগের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছি। তবে দুঃখজনকভাবে রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে এ বিষয়ে এখনও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি। আগামীকাল আমাদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে একটি মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে, আমরা বাধ্য হয়ে অনশনসহ দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে বৃহত্তর কর্মসূচি গ্রহণে যেতে পারি।”

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন আরও বেগবান হয়ে উঠেছে। চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে রোববার (১১ মে) রাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আয়োজনে একটি মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের গ্র্যান্ড ফ্লোর থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি ৩ নম্বর গেট হয়ে ঢাকা-পটুয়াখালী মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে। অংশগ্রহণকারীরা জানান, বর্তমান উপাচার্যের নেতৃত্বে তাঁরা নিজেদের নিরাপদ মনে করছেন না। তাঁদের বক্তব্য, উপাচার্য দ্রুত পদত্যাগ না করলে আন্দোলন আরও কঠোর ও ব্যাপক রূপ নিতে বাধ্য হবে।
মশাল মিছিল চলাকালে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগানের মাধ্যমে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে তাদের ক্ষোভ ও অবস্থান জোরালোভাবে প্রকাশ করেন। ‘একদফা একদাবি—ভিসি কবে যাবি’, ‘বারে বারে মামলা—এবার গদি সামলা’, ‘ক্যাম্পাস আমার গোল্লায় যায়, দালার ভিসি ঢাকায় রয়’, ‘মামলাবাজ ভিসির ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘সাত মাস চলে গেল, উন্নয়নের কি হলো’, ‘স্বৈরাচার ভিসি আর না, আর না’—এমন নানা স্লোগানে মুখরিত হয় পুরো ক্যাম্পাস।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী মোকাব্বেল শেখ বলেন, “আমরা মনে করি, এই বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমান উপাচার্যের নেতৃত্বে আর নিরাপদ নয়। শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষায় আমরা ঐক্যবদ্ধ, এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো।”
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দিন দিন আরও বেগবান হচ্ছে। চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে রোববার (১১ মে) রাতে শিক্ষার্থীরা এক বিক্ষোভ মশাল মিছিলের আয়োজন করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যান্ড ফ্লোর থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি ৩ নম্বর গেট ঘুরে ঢাকা-পটুয়াখালী মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় মিছিলজুড়ে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ ও প্রতিবাদ প্রকাশ করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন—‘একদফা একদাবি—ভিসি তুই কবে যাবি’, ‘বারে বারে মামলা—এবার গদি সামলা’, ‘মামলাবাজ ভিসির ঠিকানা—এই ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘সাত মাস চলে গেল, উন্নয়নের কী হলো’, ‘স্বৈরাচার ভিসি আর না’, ‘ভিসি তুই গদি ছাড়’ ইত্যাদি স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে পুরো ক্যাম্পাস।
প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা আজকের এই প্রতিবাদী মিছিল থেকে স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আপনার যদি ন্যূনতম লজ্জা-শরম থেকে থাকে তাহলে অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। শিক্ষার্থীরা আপনাকে আর চায় না।”
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সুজয় শুভ বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে আমরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে আসছি। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এখনো কোনো কার্যকর উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। উপাচার্য যদি অতিসত্ত্বর পদত্যাগ না করেন, তাহলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।”
আরেক শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসেন বলেন, “আমরা অনেকদিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছি, কিন্তু রাষ্ট্রের দিক থেকে এখনো কোনো দৃষ্টি পরিলক্ষিত হয়নি। আগামীকাল আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মহাসমাবেশ রয়েছে। এরপরও যদি দাবি মানা না হয়, তাহলে আমরা অনশনসহ দক্ষিণাঞ্চল অচল করার মতো কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবো।”
এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সোনিয়া খান সনি ও উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের কাছ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কেন উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করছেন?
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করছেন, উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের প্রশাসনিক ব্যর্থতা, মামলা দিয়ে আন্দোলন দমনচেষ্টা এবং দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়ন কার্যক্রমে স্থবিরতা—এই সবকিছুর জন্য ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত হয়েছে। ফলে তাঁরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করছেন।
মশাল মিছিল কেন করা হয়েছে?
মশাল মিছিল ছিল চলমান আন্দোলনের একটি অংশ, যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা দৃঢ় ও প্রতীকীভাবে তাদের প্রতিবাদ জানাতে চেয়েছেন। তারা বলেন, উপাচার্য থাকলে ক্যাম্পাস আর নিরাপদ নয়।
শিক্ষার্থীদের মূল দাবি কী?
শুধুমাত্র এক দফা—উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের অবিলম্বে পদত্যাগ। তারা বলছেন, বর্তমান ভিসির অধীনে তারা ভবিষ্যৎ নিরাপদ মনে করছেন না।
আন্দোলনের পরবর্তী ধাপ কী হতে পারে?
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, উপাচার্য পদত্যাগ না করলে তারা অনশন, দক্ষিণাঞ্চল অচল করার মতো কর্মসূচি, ও শিক্ষক-শিক্ষার্থী মহাসমাবেশসহ আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে কি?
এই বিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সোনিয়া খান সনি ও উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।
উপসংহার
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের পদত্যাগ দাবিকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ক্রমেই তীব্র আকার ধারণ করছে। মশাল মিছিল, স্লোগান ও জনসমাবেশের মাধ্যমে তারা তাদের অসন্তোষ ও দাবি স্পষ্টভাবে তুলে ধরছেন। প্রশাসনের নীরবতা ও পদক্ষেপহীনতা শিক্ষার্থীদের আরও কঠোর কর্মসূচির দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলেও তারা সতর্ক করেছেন। পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়—তা এখন অনেকটাই নির্ভর করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পরবর্তী সিদ্ধান্ত ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে হস্তক্ষেপের ওপর। শিক্ষার্থীরা যেখানে নিরাপদ ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন চান, সেখানে প্রশাসনের পক্ষ থেকেও একটি শান্তিপূর্ণ ও সমাধানমুখী উদ্যোগ নেওয়ার সময় এসেছে।




