সিদ্ধান্ত বদলে ফের আন্দোলনে ফিরছে কারিগরি শিক্ষার্থীরা

সিদ্ধান্ত বদলে ফের আন্দোলনে ফিরছে কারিগরি শিক্ষার্থীরা

বুধবার কারিগরি ছাত্র আন্দোলন গ্রুপ থেকে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

কারিগরি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে। তারা শীঘ্রই নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। বুধবার কারিগরি ছাত্র আন্দোলন পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে এক বার্তায় জানানো হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশনা ও কর্মসূচি আগামীকাল বৃহস্পতিবার কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি সম্মেলনের মাধ্যমে ঘোষণা করা হবে। ইতিমধ্যে অনেক বিভাগীয় প্রতিনিধি ঢাকায় উপস্থিত হয়েছেন। বাকি বিভাগের প্রতিনিধিদের দ্রুত ঢাকায় উপস্থিত হওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

এর আগে চাকরি, পদোন্নতি ও উচ্চশিক্ষার নিশ্চয়তাসহ ছয় দাবির বিষয়ে কারিগরি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছিলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এই বিষয়ে অফিস আদেশও জারি করা হয়। পরে রাত ৮টায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেয়।

‘কারিগরি ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ’ এর পক্ষ থেকে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘ছয় দাবি বাস্তবায়নের রূপরেখা প্রণয়নে আট সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। তারা আমাদের কাছে তিন সপ্তাহ সময় চেয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় ও কমিটির ওপর আস্থা রেখে আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দাবি বাস্তবায়নের অগ্রগতি না হলে, আমরা আবারো আন্দোলন শুরু করতে বাধ্য হবো।’

এর আগে দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা গত সোমবার কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এসময় ছয় দাবির মধ্যে যৌক্তিক দাবিগুলো পূরণের লক্ষ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা এবং একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’

এছাড়াও বলা হয়, ‘কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিবের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলনরত ছাত্ররা তাদের আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করে ক্লাসে ফিরে যাবেন এবং শিক্ষাঙ্গনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখবেন মর্মে ঘোষণা করেছে।’

এর আগে, গত ১৬ এপ্রিল ছয় দাবিতে সারা দেশের সড়ক, মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। ১৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ‘রেল ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করলেও শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তাব পেয়ে কর্মসূচি শিথিল করেন তারা। কিন্তু উপদেষ্টা না থাকায় অতিরিক্ত সচিবের (কারিগরি অনুবিভাগ) সঙ্গে বৈঠক করলেও, তা ব্যর্থ হওয়ায় সন্ধ্যার পর মশালমিছিল এবং ১৮ এপ্রিল জুমার পর মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে বিক্ষোভ মিছিল করেন আন্দোলনকারীরা। এরপর ১৯ এপ্রিল লাল কাপড় দিয়ে সারা দেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর প্রধান ফটক ঢেকে দিয়ে ‘রাইজ ইন রেড’ কর্মসূচি পালন ও ২০ এপ্রিল মহাসমাবেশ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

শিক্ষার সকল খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথে থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল আইকন ক্লিক করুন। বেল আইকন ক্লিক করার মাধ্যমে আপনার স্মার্টফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

কারিগরি শিক্ষার্থীরা কেন আন্দোলনে ফিরে আসছে?

কারিগরি শিক্ষার্থীরা তাদের ছয়টি দাবির বাস্তবায়ন নিশ্চিত না হওয়ায় আন্দোলনে ফিরে আসছে। মন্ত্রণালয়ের তরফে প্রদত্ত সময়সীমার মধ্যে কোনো অগ্রগতি না হলে তারা আবারো আন্দোলন শুরু করতে বাধ্য হবে।

কারিগরি শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো কি?

কারিগরি শিক্ষার্থীদের মূল দাবিগুলো হলো: চাকরি, পদোন্নতি, উচ্চশিক্ষার নিশ্চয়তা, এবং অন্যান্য সুবিধা যা তাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করবে।

আগে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল?

আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের আন্দোলন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো এবং একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিলো যাতে ছয়টি দাবি বাস্তবায়নের রূপরেখা প্রস্তুত করা যায়।

এখন কি নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে?

হ্যাঁ, কারিগরি ছাত্র আন্দোলন তাদের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করতে যাচ্ছে। আগামী দিনগুলোতে প্রতিনিধিরা নতুন কর্মসূচি জানাবেন।

মন্ত্রণালয়ের পরবর্তী পদক্ষেপ কি হতে পারে?

মন্ত্রণালয় এবং কমিটির ওপর আস্থা রেখে কারিগরি শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন স্থগিত করেছিল। তবে, যদি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে দাবি বাস্তবায়নের কোনো অগ্রগতি না হয়, তবে তারা আবার আন্দোলনে ফিরে আসবে।

উপসংহার

উপসংহারে, কারিগরি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে ভিত্তি করে গঠিত, যেখানে তাদের চাকরি, পদোন্নতি, এবং উচ্চশিক্ষার নিশ্চয়তা সহ বিভিন্ন দাবির সমাধান চাওয়া হচ্ছে। যদিও পূর্বে আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছিলো, কিন্তু এখনও বাস্তবায়নের কোনো অগ্রগতি না হলে তারা ফের আন্দোলনে ফিরে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই পরিস্থিতি মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট কমিটির জন্য একটি চ্যালেঞ্জ, কারণ শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে দেশের কারিগরি শিক্ষার ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব হতে পারে। শিক্ষার্থীদের দাবির দ্রুত বাস্তবায়ন তাদের জন্য এবং দেশের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top