“ষষ্ঠ ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য নিবন্ধন প্রক্রিয়া আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এবং স্নাতক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য ১৫ মে পর্যন্ত চলবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের নামসহ প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে।”

অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ‘প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট’-এর আওতায় বৃত্তি ও উপবৃত্তি প্রদান কার্যক্রম পুনরায় চালু হয়েছে। অন্যান্য সময়ের মতো এবারও এই বৃত্তি ও উপবৃত্তি ডাক বিভাগের মোবাইল ডিজিটাল আর্থিক সেবা ‘নগদ’-এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা প্রতি বছর উপবৃত্তি, টিউশন ফি ও অন্যান্য সহায়তা সুবিধার আওতায় এ সহায়তা পেয়ে থাকেন। চলতি দফায় ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে শুরু করে স্নাতক (পাস) ও সমমান পর্যায়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বৃত্তি ও উপবৃত্তি প্রদান করা হবে।
ইতোমধ্যে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে, এবং নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে প্রয়োজনীয় তথ্যসহ আবেদন সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
নিবন্ধন সম্পন্ন করার পর, সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর কর্তৃক একাধিক ধাপে যাচাই-বাছাইয়ের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। যাচাই-বাছাই শেষে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির জন্য চূড়ান্তভাবে বিবেচনা করা হবে, যা নগদ-এর মাধ্যমে বিতরণ করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৫ এপ্রিল থেকে ষষ্ঠ ও নবম (বিশেষ ক্ষেত্রে) এবং স্নাতক (পাস) ও সমমান পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ষষ্ঠ ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য নিবন্ধনের শেষ সময় ৩০ এপ্রিল ২০২৫, এবং স্নাতক (পাস) ও সমমান শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য ১৫ মে ২০২৫ পর্যন্ত নিবন্ধন চালু থাকবে।
নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে শিক্ষার্থীদের নাম ও প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করে নিবন্ধন সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ ডাক অধিদপ্তর, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট এবং মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এর মধ্যে একটি ত্রিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। উক্ত চুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি ও উপবৃত্তি বিতরণের দায়িত্ব ‘নগদ’-কে প্রদান করা হয়।
সারাদেশব্যাপী বিস্তৃত নেটওয়ার্ক, সাশ্রয়ী খরচে সেবা প্রদান এবং ব্যবহারকারীবান্ধব ও ঝামেলাহীন সেবার কারণে ‘নগদ’-কে এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বের জন্য নির্বাচন করে সরকার।
বৃত্তি বা উপবৃত্তির জন্য শিক্ষার্থীর নাম নিবন্ধনের সময় অবশ্যই একটি সচল ‘নগদ’ অ্যাকাউন্ট সংযুক্ত করতে হবে। পরবর্তীতে সরকার নির্ধারিত যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর, নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের বৃত্তির অর্থ সরাসরি তাদের সংযুক্ত ‘নগদ’ ওয়ালেটে প্রেরণ করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট শিক্ষার্থীদের ভর্তি সহায়তা প্রদান করছে
দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি সহায়তা প্রদান করে থাকে। এই সহায়তার মাধ্যমে আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীরা শিক্ষা কার্যক্রমে সম্পৃক্ত থাকতে সক্ষম হয়।
বর্তমানে শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে নিম্নলিখিত হারে ভর্তি সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে:
মাধ্যমিক পর্যায়ে: ৫,০০০ টাকা
উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে: ৮,০০০ টাকা
স্নাতক ও সমমান পর্যায়ে: ১০,০০০ টাকা
এই ভর্তি সহায়তা শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং উচ্চশিক্ষার পথে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ বাড়ায়।
শিক্ষার্থীদের জন্য ভর্তি সহায়তা ও উপবৃত্তি বিতরণে ‘নগদ’-এর ভূমিকা
প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট দেশের দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন ধরনের আর্থিক সহায়তা প্রদান করে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম হলো ভর্তি সহায়তা, যা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিত করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
বর্তমানে ভর্তি সহায়তা হিসেবে শিক্ষার্থীদের নিম্নলিখিত হারে অর্থ প্রদান করা হচ্ছে:
মাধ্যমিক পর্যায়: ৫,০০০ টাকা
উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়: ৮,০০০ টাকা
স্নাতক ও সমমান পর্যায়: ১০,০০০ টাকা
এই সহায়তা সরাসরি শিক্ষার্থীদের ‘নগদ’ অ্যাকাউন্টে প্রদান করা হচ্ছে, যা সহজ, দ্রুত এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে বিতরণ নিশ্চিত করে।
এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের উপবৃত্তি ছাড়াও, শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিভিন্ন ভাতা, উপবৃত্তি ও অনুদান ডাক বিভাগের মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এর মাধ্যমে বিতরণ করছে।
বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কাছে এই সহায়তা পৌঁছে দিতে ‘নগদ’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। শুধু শিক্ষা খাত নয়, প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি, সমাজসেবা অধিদপ্তরের ভাতা এবং অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন অনুদান ও ভাতা বিতরণেও ‘নগদ’ নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।
দীর্ঘদিন ধরে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপবৃত্তি, ভাতা ও আর্থিক সহায়তা স্বল্প খরচে ও কার্যকরভাবে বিতরণ করে আসছে নগদ, যা ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের অন্যতম অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এই শিক্ষা সহায়তা কারা পাবে?
ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে স্নাতক (পাস) ও সমমান পর্যায়ের দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তি ও উপবৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
অনলাইন নিবন্ধনের শেষ তারিখ কবে?
ষষ্ঠ ও নবম শ্রেণি (বিশেষ ক্ষেত্রে): ৩০ এপ্রিল ২০২৫
স্নাতক (পাস) ও সমমান: ১৫ মে ২০২৫ পর্যন্ত
কীভাবে সহায়তা বিতরণ করা হবে?
নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের বৃত্তি/উপবৃত্তি সরাসরি নগদ অ্যাকাউন্টে পাঠানো হবে। এজন্য নিবন্ধনের সময় একটি সচল নগদ নম্বর সংযুক্ত করা বাধ্যতামূলক।
‘নগদ’ কেন বেছে নেওয়া হয়েছে?
সরকারের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে, নগদকে বাছাই করা হয়েছে তার বিস্তৃত নেটওয়ার্ক, কম খরচে দ্রুত সেবা ও ঝামেলাহীন লেনদেন প্রক্রিয়ার কারণে।
সহায়তার পরিমাণ কত?
মাধ্যমিক পর্যায়ে (ভর্তি সহায়তা): ৫,০০০ টাকা
উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে: ৮,০০০ টাকা
স্নাতক ও সমমান: ১০,০০০ টাকা
এছাড়া উপবৃত্তি ও অন্যান্য ভাতাও নগদের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে।
উপসংহার
সরকারের এই উদ্যোগ দেশের অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষার পথকে আরও সহজ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করে তুলেছে। ‘নগদ’-এর মাধ্যমে ডিজিটাল ও স্বচ্ছ উপায়ে বৃত্তি, উপবৃত্তি ও ভর্তি সহায়তা বিতরণের ফলে শিক্ষার্থীরা দ্রুত ও নির্ভরযোগ্যভাবে আর্থিক সহায়তা গ্রহণ করতে পারছে। অনলাইন নিবন্ধনের প্রক্রিয়া সহজ হওয়ায় এখন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরাও সমান সুযোগ পাচ্ছে এই সহায়তার আওতায় আসার।
এই কার্যক্রম শুধু শিক্ষার্থীদের নয়, দেশের সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থাকেও শক্তিশালী করছে—যা ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।




