জাতীয়করণ দাবিতে সচিবালয় অভিমুখে শিক্ষকদের ফের পদযাত্রা

জাতীয়করণ দাবিতে সচিবালয় অভিমুখে শিক্ষকদের ফের পদযাত্রা

এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ, শতভাগ উৎসব ভাতা প্রদান, সরকারি কর্মচারীদের মতো বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা সম পরিমাণ বৃদ্ধি করার দাবিতে আবারও সচিবালয়ের দিকে পদযাত্রা করছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।

এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ, শতভাগ উৎসব ভাতা প্রদান, সরকারি কর্মচারীদের মতো বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা সম পরিমাণ বৃদ্ধি করার দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারীরা ফের সচিবালয়ের দিকে পদযাত্রা শুরু করেছেন।

এ কর্মসূচি সোমবার (৩ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে শুরু হয়।

এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের যুগ্ম সদস্য সচিব আবুল বাসার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, “গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে আমরা প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি। এর মধ্যে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা ও সচিবালয় অভিমুখী পদযাত্রায় পুলিশ আমাদের বাধা দিয়েছে। দুইদিন আমরা মন্ত্রণালয়ে বৈঠক করেছি, কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এখনও শতভাগ উৎসব ভাতা পাওয়ার ব্যাপারে স্পষ্ট ঘোষণা পাইনি। যদি শতভাগ উৎসব ভাতা না দেওয়া হয়, তবে আমরা প্রেস ক্লাব থেকে উঠব না, প্রয়োজনে যমুনায় ঈদের নামাজ আদায় করব। প্রয়োজনে আগামী এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা বর্জন করতে পারি।”

শিক্ষকরা বলেছেন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বাড়িভাড়া, মেডিক্যাল ভাতা, শতভাগ উৎসব ভাতা এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণের প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। প্রজ্ঞাপন ছাড়া তারা ঘরে ফিরবেন না।

প্রসঙ্গত, গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোট ঘোষিত এই কর্মসূচিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিক্ষকরা অবস্থান নিয়েছেন।

সংগঠনের সদস্য সচিব দেলাওয়ার হোসেন আজীজি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, “আমরা আশ্বাসে বিশ্বাসী নই, আন্দোলনস্থলে এসে ঘোষণা দিতে হবে যে, আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। অন্যথায় শিক্ষকরা তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে।”

শিক্ষকরা আরও বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে দাবি মেনে নেওয়ার সুস্পষ্ট ঘোষণা না পাওয়া পর্যন্ত তারা প্রেস ক্লাব থেকে ছাড়বেন না। সরকারকে তাদের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান তারা। একইসাথে, সব এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীকে প্রেস ক্লাবের কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান তারা।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনরত শিক্ষকদের শিক্ষা ভবন অভিমুখে পদযাত্রায় বাধা দেয় পুলিশ। এরপর আট সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল আলোচনার জন্য সচিবালয়ে যায়। ওই বৈঠকে আশ্বাস পাওয়া হলেও, এখনো কোনো সুনির্দিষ্ট ঘোষণা আসেনি। শিক্ষকরা জানিয়েছেন, তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত তারা ঘরে ফিরে যাবেন না।

কেন শিক্ষকরা পদযাত্রা করছেন?

শিক্ষকেরা এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ, শতভাগ উৎসব ভাতা, সরকারি কর্মচারীদের মতো বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা সম পরিমাণ বৃদ্ধি করার দাবিতে সচিবালয়ের দিকে পদযাত্রা করছেন।

কখন থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে?

শিক্ষকরা ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে আসছেন। এরপর তারা পদযাত্রার কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন।

পদযাত্রায় পুলিশের বাধা এসেছে কি না?

হ্যাঁ, যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা ও সচিবালয় অভিমুখী পদযাত্রায় পুলিশ তাদের বাধা দিয়েছে।

সচিবালয়ে গিয়েও শিক্ষকদের কোনো সমাধান পাওয়া গেছে কি?

শিক্ষকদের আট সদস্যের প্রতিনিধিদল সচিবালয়ে গিয়ে সরকারের সঙ্গে বৈঠক করলেও, এখনও কোন স্পষ্ট ঘোষণা বা সিদ্ধান্ত আসেনি।

শিক্ষকরা পরবর্তী পদক্ষেপ কী?

শিক্ষকরা জানিয়েছেন, দাবি মেনে নেওয়া না হলে তারা প্রেস ক্লাব থেকে উঠবেন না এবং প্রয়োজনে আগামী এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা বর্জন করতে পারেন।

উপসংহার

শিক্ষকদের জাতীয়করণের দাবিতে সচিবালয় অভিমুখে পদযাত্রা এক গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনের প্রতিফলন। এটি শুধু শিক্ষকদের অধিকার এবং মর্যাদার বিষয় নয়, বরং দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সার্বিক উন্নতি ও শক্তিশালীকরণেরও অঙ্গীকার। শিক্ষকরা যে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের গঠনকারী, তাদের দাবি-দাওয়া সঠিক এবং ন্যায়সঙ্গত। এই আন্দোলন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে এবং তাদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, এ ধরনের আন্দোলন কখনোই সহিংস হওয়া উচিত নয়, বরং এটি একটি সুস্থ ও গঠনমূলক আলোচনা এবং সমাধানের দিকে পরিচালিত হওয়া উচিত।

শিক্ষকদের এই সংগ্রাম জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন এবং সংস্কারের জন্য একটি মাইলফলক হতে পারে, যেখানে দেশের উন্নতি ও সমৃদ্ধি নির্ভর করে দক্ষ, উপযুক্ত ও মর্যাদাপূর্ণ শিক্ষক সমাজের ওপর।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top