টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পঞ্চম সেমিস্টারের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরীক্ষায় একটি প্রশ্ন ছিল: “২০২৪ সালে ভারতের প্রতিবেশী দেশের কোন রাষ্ট্রপ্রধান ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণ করেছেন?”

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি পরীক্ষায় বাংলাদেশ নিয়ে এক প্রশ্নের সূত্র ধরে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। যদিও প্রশ্নে বাংলাদেশের নাম সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি, শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের ধারণা, সেটি বাংলাদেশের দিকেই ইঙ্গিত করে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদন অনুসারে, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পঞ্চম সেমিস্টারের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরীক্ষায় জিজ্ঞাসা করা হয়: “২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের প্রতিবেশী দেশের কোন রাষ্ট্রপ্রধান ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন?”
শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন, এই প্রশ্নের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়েছে। তবে তাঁদের মতে, শেখ হাসিনাকে ভারতে ‘রাজনৈতিক আশ্রয়’ দেওয়া হয়নি, যা এই প্রশ্নের মূল ভাবনার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পঞ্চম সেমিস্টারের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরীক্ষার একটি প্রশ্ন নিয়ে বিতর্ক আরও তীব্র হয়েছে। প্রশ্নটি ছিল: “২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের প্রতিবেশী দেশের কোন রাষ্ট্রপ্রধান ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন?”
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে বাংলাদেশ থেকে শেখ হাসিনা ভারতে চলে আসেন এবং এরপর থেকে তিনি ভারতে রয়েছেন। যদিও ভারত তাঁর উপস্থিতি স্বীকার করলেও জানায়, কাউকে ‘রাজনৈতিক আশ্রয়’ দেওয়ার নির্দিষ্ট কোনও আইন তাদের দেশে নেই।
এই পরিস্থিতিতে প্রশ্নে ‘রাজনৈতিক আশ্রয়’ শব্দের উল্লেখ কীভাবে করা হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পাশাপাশি শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা উল্লেখ করেছেন যে শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপ্রধান নন; তিনি ছিলেন সরকারের প্রধান। বাংলাদেশের বর্তমান রাষ্ট্রপ্রধান হলেন রাষ্ট্রপতি মো. শাহাবুদ্দিন।
অন্যদিকে, কিছু শিক্ষাবিদ মনে করছেন, এই প্রশ্নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ঘটনার জ্ঞান যাচাই করার উদ্দেশ্য থাকতে পারে। ভারতের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া রাজনৈতিক ঘটনার বিষয়ে শিক্ষার্থীরা কতটা সচেতন, তা মূল্যায়ন করতেই হয়তো প্রশ্নে ‘রাজনৈতিক আশ্রয়’ শব্দের ব্যবহার করা হয়েছে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি। টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক বোর্ডের এক সদস্য জানিয়েছেন, প্রশ্ন নিয়ে শিক্ষক মহলে আলোচনার সৃষ্টি হলেও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। সাধারণত তিনটি প্রশ্নপত্রের সেট তৈরি করা হয়, যার মধ্যে একটি চূড়ান্ত করা হয়। যদি কোনো ত্রুটি ধরা পড়ে, তা বোর্ডের বৈঠকে পর্যালোচনা করা হয়ে থাকে বলে তিনি জানিয়েছেন।
প্রশ্নটি কী ছিল?
প্রশ্ন ছিল, “২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের প্রতিবেশী দেশের কোন রাষ্ট্রপ্রধান ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন?”
বিতর্কের মূল কারণ কী?
শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ ইঙ্গিত করলেও তিনি রাষ্ট্রপ্রধান নন এবং তাঁকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া হয়নি বলে প্রশ্নটি বিভ্রান্তিকর মনে করা হচ্ছে।
শিক্ষাবিদরা কী বলছেন?
অনেকে মনে করছেন, শিক্ষার্থীদের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক জ্ঞান যাচাই করার উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে এমন প্রশ্ন করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিক্রিয়া কী?
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে?
প্রশ্ন নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনা হলেও এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। বিষয়টি বোর্ডের বৈঠকে পর্যালোচনা হতে পারে।
উপসংহার
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় বাংলাদেশ ও শেখ হাসিনাকে ইঙ্গিত করে করা প্রশ্নটি বিভিন্ন মহলে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। প্রশ্নটির ভাষাগত অস্পষ্টতা এবং ঐতিহাসিক সত্যতার অভাব নিয়ে শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের মধ্যে মতভেদ দেখা দিয়েছে। যদিও অনেকে একে শিক্ষার্থীদের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সচেতনতা যাচাইয়ের উদ্দেশ্য বলে মনে করছেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। ভবিষ্যতে এমন বিভ্রান্তি এড়াতে আরও সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন হতে পারে।




