সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, আগামী দুই দিন শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। নারী শিক্ষিকাদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদ এবং চাকরিতে যোগদানের দাবি জানিয়ে আগামী রোববার একটি মহাসমাবেশের আয়োজন করা হবে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগপ্রত্যাশীরা মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী রোববার (১৫ ফেব্রুয়ারি) এই মহাসমাবেশ কর্মসূচি পালন করবেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আন্দোলনকারীরা এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ ঘোষণা দেন। তবে সমাবেশের স্থান ও সময় এখনো নির্ধারণ করে জানানো হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামী দুই দিন শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি চলবে। নারী শিক্ষিকাদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদ এবং চাকরিতে যোগদানের দাবিতে আগামী রোববার মহাসমাবেশ আয়োজন করা হবে।
আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে নিয়োগপ্রত্যাশীরা দাবি করেন, আটককৃত শিক্ষকদের এক ঘণ্টার মধ্যে মুক্তি দিতে হবে। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “দাবি আদায় না হলে আমরা রাজপথে আত্মহত্যার পথ বেছে নেবো। রোববারের মধ্যে অবৈধ প্রহসনের রায় বাতিল করে আমাদের যোগদান নিশ্চিত করতে হবে।”
আন্দোলনকারীরা আরও জানান, তাদের নিয়োগ হয়েছিল ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের বিধিমালা অনুযায়ী। একই নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রথম দুই ধাপের সুপারিশপ্রাপ্তরা প্রায় এক বছর আগে কর্মস্থলে যোগদান করলেও ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের তৃতীয় ধাপের সাড়ে ৬ হাজার সুপারিশপ্রাপ্তদের নিয়োগ ৬ মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
৬ হাজার ৫৩১ জনের যোগদান নিশ্চিত করার দাবিতে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
এর আগে সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) পুলিশের জলকামান নিক্ষেপের পর মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চাকরিপ্রার্থীরা সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের নিয়োগের ব্যবস্থা নিতে আদালতে আপিল করা হয়েছে এবং কাউকেই নিয়োগ থেকে বাদ দেওয়া হবে না। তবে উচ্চ আদালতের আদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
মহাসমাবেশ কেন ডাকা হয়েছে?
মহাসমাবেশ ডাকা হয়েছে ৬,৫৩১ জন সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীর নিয়োগ স্থগিতের প্রতিবাদে এবং দ্রুত তাদের চাকরিতে যোগদান নিশ্চিত করার দাবিতে।
মহাসমাবেশের তারিখ ও সময় কী?
মহাসমাবেশ রোববার (১৫ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সঠিক সময় ও স্থান এখনো ঘোষণা করা হয়নি।
আন্দোলনকারীদের প্রধান দাবি কী?
মূল দাবি হলো, উচ্চ আদালতের রায় বাতিল করে দ্রুত তাদের চাকরিতে যোগদান নিশ্চিত করা এবং আটককৃত শিক্ষকদের মুক্তি দেওয়া।
আন্দোলনের প্রেক্ষাপট কী?
২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের বিধিমালা অনুযায়ী তাদের নিয়োগ হয়েছিল। প্রথম দুই ধাপের প্রার্থীরা যোগদান করলেও তৃতীয় ধাপের ৬,৫৩১ জনের নিয়োগ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে, যা আন্দোলনের কারণ।
সরকারের পক্ষ থেকে কী প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে?
সরকার জানিয়েছে, তাদের নিয়োগের ব্যবস্থা নিতে আদালতে আপিল করা হয়েছে এবং কাউকেই নিয়োগ থেকে বাদ দেওয়া হবে না। তবে উচ্চ আদালতের আদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
উপসংহার
শিক্ষক পদে নিয়োগ বাতিলের প্রেক্ষাপটে আন্দোলনকারীদের মহাসমাবেশ তাদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সরকারের আশ্বাস সত্ত্বেও উচ্চ আদালতের রায়ের অনিশ্চয়তা এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত থাকার কারণে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীরা দ্রুত সমাধানের প্রত্যাশা করছেন, যা একদিকে তাদের পেশাগত ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করবে এবং অন্যদিকে দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় স্থিতিশীলতা আনবে। অতএব, উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণই হতে পারে এই সংকট সমাধানের কার্যকর পথ।