ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানিয়েছেন যে, এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপন করবেন যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ডিবি-দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি দক্ষিণ) যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, একটি অসাধু চক্র বর্তমান সরকারের বই বিতরণ কার্যক্রম নস্যাৎ করতে এবং আর্থিকভাবে লাভবান হতে অবৈধভাবে মজুত করে খোলাবাজারে বিক্রয় করছিল।
এ সময় চক্রটির দুই সদস্যকে আটক করা হয়েছে এবং তাদের কাছ থেকে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য নির্ধারিত প্রায় ১০ হাজার সরকারি পাঠ্যবই, যার আনুমানিক মূল্য ৮ লাখ টাকা, জব্দ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি দক্ষিণ) যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম।
আটককৃত ব্যক্তিরা হলেন সিরাজুল ইসলাম উজ্জ্বল (৫৫) এবং মো. দেলোয়ার হোসেন (৫৬)।
মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করে থাকে। বছরের শুরুতে নতুন বই হাতে পেয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মুখে হাসি ফুটে। তবে সরকারের এই আন্তরিক প্রচেষ্টা নস্যাৎ করার লক্ষ্যে কিছু অসাধু চক্র শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে বিতরণের পাঠ্যপুস্তক অবৈধভাবে মজুত করে খোলাবাজারে বিক্রি করছে।
তিনি আরও জানান, এই চক্রের কার্যক্রম সম্পর্কে তথ্য পাওয়ার পর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা নজরদারি বৃদ্ধি করে এবং তাদের আইনের আওতায় আনতে নিরলসভাবে কাজ শুরু করে।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বুধবার (২২ জানুয়ারি) প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে বিতরণের বই খোলাবাজারে বিক্রয় ও মজুতকারী চক্রের দুই সক্রিয় সদস্যকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। একই সঙ্গে জব্দ করা হয়েছে দুই ট্রাক ভর্তি বই।
মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানান, গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সূত্রাপুরের বাংলা বাজার ইস্পাহানি গলির বিভিন্ন গোডাউনে ডিবি-লালবাগ বিভাগের কোতয়ালী জোনাল টিম অভিযান চালায়। অভিযানে চক্রের দুই সদস্যকে আটক করা হয় এবং তাদের হেফাজত থেকে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য নির্ধারিত প্রায় ১০ হাজার সরকারি বই জব্দ করা হয়।
যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, একটি অসাধু চক্র বাংলাবাজারের ইস্পাহানি গলিতে বিভিন্ন গোডাউনে প্রথম থেকে দশম শ্রেণির বিনামূল্যে বিতরণের সরকারি পাঠ্যবই বিক্রয়ের উদ্দেশে মজুত করেছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার বিকেলে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, বাংলাদেশের ১ম থেকে ৯ম শ্রেণির বিভিন্ন বিষয়ের প্রায় ১০ হাজার সরকারি পাঠ্যবই জব্দ করা হয়। ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে সিরাজুল ইসলাম উজ্জ্বল ও মো. দেলোয়ার হোসেন নামের দুইজনকে আটক করা হয়। জব্দকৃত বইয়ের আনুমানিক মূল্য ৮ লাখ টাকা।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি আরও জানান, আটককৃতরা এবং তাদের সহযোগী অবৈধ মজুতদাররা বছরের শুরুতে নতুন পাঠ্যপুস্তক বিতরণে সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা নস্যাৎ করার লক্ষ্যে এই বইগুলো মজুত করে বিক্রয় করছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল অবৈধভাবে আর্থিক লাভ অর্জন করা।
আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। পাশাপাশি এই মজুতদারি চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যান্যদের আটক করতে ডিবি পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও যুগ্ম কমিশনার জানান।
কী ধরণের বই জব্দ করা হয়েছে?
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, বাংলাদেশের ১ম থেকে ৯ম শ্রেণির বিভিন্ন বিষয়ের বিনামূল্যে বিতরণের সরকারি পাঠ্যবই।
অভিযানে কারা আটক হয়েছে?
অভিযানে সিরাজুল ইসলাম উজ্জ্বল (৫৫) এবং মো. দেলোয়ার হোসেন (৫৬) নামের দুইজনকে আটক করা হয়েছে।
অভিযানের স্থান কোথায়?
রাজধানীর সূত্রাপুরের বাংলাবাজারের ইস্পাহানি গলির বিভিন্ন গোডাউনে অভিযান চালিয়ে বইগুলো জব্দ করা হয়েছে।
কী উদ্দেশ্যে বইগুলো মজুত করা হয়েছিল?
চক্রটি বছরের শুরুতে সরকারের বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ কার্যক্রম নস্যাৎ করার উদ্দেশ্যে এবং অবৈধভাবে আর্থিক লাভবান হওয়ার জন্য বইগুলো মজুত করেছিল।
ডিবি পুলিশের পরবর্তী পদক্ষেপ কী?
আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং মজুতদারি চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যান্যদের খুঁজে বের করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উপসংহার
সরকারি উদ্যোগে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণের মতো মহৎ প্রচেষ্টা নস্যাৎ করার উদ্দেশ্যে অসাধু চক্রের এ ধরনের অপতৎপরতা অত্যন্ত নিন্দনীয়। ডিবি পুলিশের দক্ষ অভিযান এবং যথাযথ পদক্ষেপের মাধ্যমে চক্রের কার্যকলাপ প্রতিহত করা সরকারের এ উদ্যোগের সাফল্যে বড় ভূমিকা রাখবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ দমন এবং শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত সম্পদ সঠিকভাবে বিতরণ নিশ্চিত করতে আরও কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। শিক্ষার অধিকার রক্ষায় এ ধরনের উদ্যোগ সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।




