সেই নারায়ণ নাথের ছেলের এইচএসসির ফল বাতিল

সেই নারায়ণ নাথের ছেলের এইচএসসির ফল বাতিল

নানা আলোচনা ও মামলা-তদন্তের পর চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সাবেক সচিব অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র নাথের ছেলের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার (এইচএসসি) ফল বাতিল করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) শিক্ষাবোর্ডের শৃঙ্খলা কমিটির সভায় জালিয়াতির অভিযোগের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

সভা শেষে ওই শিক্ষার্থীর ফল বাতিলের বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানান শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম।

তিনি বলেন, “শিক্ষামন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গত ১৫ সেপ্টেম্বর আমাদের এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়। এর আগে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ফল জালিয়াতির বিষয়টি উঠে আসে। নির্দেশনার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার শৃঙ্খলা কমিটির সভা আহ্বান করা হয়, যেখানে ফল বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।”

আরো পড়ুন: পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার নির্দেশ

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে নারায়ণ চন্দ্র নাথের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় তিনি নিজ ছেলেকে জিপিএ ৫ পাইয়ে দিয়েছেন। এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে নানা আলোচনা শুরু হয়, যা পরবর্তীতে থানা পর্যন্ত গড়ায়। এক পর্যায়ে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

আরো পড়ুন: ছেলের ফল জালিয়াতি, শিক্ষাবোর্ডের সেই নারায়ণ নাথকে ওএসডি

এর মধ্যে গত ৯ জুলাই নারায়ণ চন্দ্র নাথকে শিক্ষাবোর্ড থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক পদে বদলি করা হয়। পরবর্তীতে, সরকার পতনের পর ২৩ সেপ্টেম্বর তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়। এর আগে, ১৫ সেপ্টেম্বর, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয় মাউশির মহাপরিচালক ও চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে, যা ফৌজদারি মামলার বিষয়েও প্রযোজ্য। একই সাথে, তার সঙ্গে জালিয়াতিতে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করার নির্দেশনা প্রদান করা হয় শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে।

অভিযোগের সূচনা:

নারায়ণ চন্দ্র নাথের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে, তিনি ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় নিজের ছেলেকে জিপিএ ৫ পাইয়ে দিয়েছেন।

তদন্ত প্রক্রিয়া:

এ অভিযোগের পর শিক্ষামন্ত্রণালয় তদন্ত কমিটি গঠন করে এবং বিষয়টি থানা পর্যন্ত পৌঁছায়।

প্রাথমিক পদক্ষেপ:

৯ জুলাই নারায়ণ চন্দ্র নাথকে মাউশির পরিচালক পদে বদলি করা হয়, এবং পরবর্তীতে ২৩ সেপ্টেম্বর তাকে ওএসডি করা হয়।

ফল বাতিলের সিদ্ধান্ত:

২৪ অক্টোবর শিক্ষাবোর্ডের শৃঙ্খলা কমিটির সভায় ফল বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আইনগত ব্যবস্থা:

শিক্ষামন্ত্রণালয়ের নির্দেশে, নারায়ণ নাথ এবং জালিয়াতিতে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।

উপসংহার

এই ঘটনা শিক্ষাব্যবস্থার উপর প্রভাব ফেলে এবং নৈতিকতার প্রশ্ন উত্থাপন করে। নারায়ণ চন্দ্র নাথের ছেলের এইচএসসি ফল বাতিল করা ও তার বিরুদ্ধে নেওয়া আইনগত ব্যবস্থা শিক্ষা ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা এবং সুশাসনের প্রতি সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে। এটি ভবিষ্যতে এমন জালিয়াতি প্রতিরোধে সহায়ক হবে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে সঠিক প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরি করতে সাহায্য করবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য এটি একটি সতর্কবার্তা, যাতে তারা দায়িত্বশীলভাবে কাজ করে এবং শিক্ষা ক্ষেত্রের মর্যাদা বজায় রাখে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top