শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা কাল

শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা কাল

“৩৫ শতাংশ শুল্ক এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়। এ বিষয়ে আলোচনা চলমান রয়েছে এবং পরবর্তী বৈঠক ৯ জুলাই নির্ধারিত। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একটি ইতিবাচক ফলাফলের লক্ষ্যে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এবং সম্ভাবনা এখনো শেষ হয়ে যায়নি।”

বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর প্রস্তাবিত ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ সংক্রান্ত বিষয়ে আগামীকাল বুধবার (৯ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, যিনি বর্তমানে এই বৈঠকে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।

আজ মঙ্গলবার তিনি জানান, “এ ইস্যুতে জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক রয়েছে, যেখানে বাংলাদেশ ভালো কিছু প্রত্যাশা করছে।”

এদিকে, ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তোজা সামাজিক মাধ্যমে এক বার্তায় জানিয়েছেন, “৩৫ শতাংশ শুল্ক এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নয়। আলোচনা চলমান রয়েছে। আগামী ৯ জুলাই পরবর্তী আলোচনার দিন নির্ধারিত হয়েছে। বাংলাদেশ ভালো কিছুর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে এবং সম্ভাবনা এখনো শেষ হয়ে যায়নি।”

বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, “শুল্ক আরোপ সংক্রান্ত চিঠির পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র একটি নতুন চুক্তির খসড়া পাঠিয়েছে।” নথির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটি একটি বড় নথি এবং আমি এখনো পুরোপুরি পড়া শেষ করিনি। আমাদের দেখতে হবে তারা কী চাইছে এবং চুক্তি হলে তারা কোন কোন বিষয় পর্যালোচনা করতে আগ্রহী।”

৯০ দিনের শুল্ক বিরতির সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই, বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের উপর নতুন শুল্ক হার আরোপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ঘোষিত নতুন নীতিমালায় যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের উপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে।

এই সিদ্ধান্তের ঘোষণা সোমবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ প্রকাশ করেন। এর আগে, চলতি বছরের ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্যের উপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল, যা পরবর্তীতে সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়।

যদিও নতুন শুল্ক ২০২৫ সালের ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে, তবে এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে আলোচনার সুযোগ এখনো খোলা রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার সম্ভাবনার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

বিশ্বের সর্বশেষ বাণিজ্য, শিক্ষা এবং রাজনীতির খবর জানতে সাবস্ক্রাইব করুন দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল।

আপডেট মিস না করতে বেল আইকনে ক্লিক করুন – যাতে আপনার ডিভাইসে গুরুত্বপূর্ণ ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন সময়মতো পৌঁছে যায়।

[SUBSCRIBE করুন দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল]

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক সিদ্ধান্ত কী?

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের উপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। এতে বাংলাদেশি পণ্যের উপর ৩৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে।

এই শুল্ক কবে থেকে কার্যকর হবে?

ঘোষণা অনুযায়ী, নতুন শুল্কহার আগামী ১ আগস্ট ২০২৫ থেকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।

বাংলাদেশ কেন যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্কের আওতায় পড়েছে?

যুক্তরাষ্ট্রের দাবি অনুযায়ী, কিছু দেশ প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা নিয়ে মার্কিন বাজারে প্রবেশ করছে। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশের উপরও বাড়তি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এটি মূলত ট্রাম্প প্রশাসনের প্রোটেকশনিস্ট নীতির অংশ।

এই শুল্ক আরোপ নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান কী?

বাংলাদেশ সরকার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে এবং দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আগ্রহী। এ লক্ষ্যে কাল (৯ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

আলোচনায় কী কী বিষয় উঠে আসতে পারে?

আলোচনায় বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রকে অবহিত করবে যে, দেশটি উন্নয়নশীল এবং এ ধরনের উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ তার অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়াও রপ্তানি খাত, কর্মসংস্থান, এবং দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

উপসংহার

বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের উপর যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল অর্থনীতির জন্য এই ধরনের বাড়তি শুল্ক রপ্তানি খাত, বৈদেশিক মুদ্রা আয় এবং কর্মসংস্থানের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে। তবে ইতিবাচক দিক হলো—যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার দরজা খোলা রেখেছে এবং এই ইস্যুতে উভয় পক্ষই সংলাপের মাধ্যমে সমাধানে আগ্রহ দেখিয়েছে। আগামীকাল অনুষ্ঠিতব্য আলোচনা দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা ও স্বার্থরক্ষা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top