ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ফজলুল হক (৬০) নামে এক শিক্ষককে সশ্রদ্ধ বিদায় জানাতে ফুলে সজ্জিত একটি গাড়িতে করে রাজকীয়ভাবে পাঠানো হলো। মাদরাসার বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা এবং প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ তার প্রতি গভীর ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জানিয়ে এই আয়োজন করে। তারা তাকে মাদরাসা থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত তার বাড়িতে পৌঁছে দেয়।

শনিবার (২ নভেম্বর) সকালে পিতাম্বরপাড়া হোসাইনিয়া বহুমুখী কামিল মাদরাসার প্রতিষ্ঠাকালীন সহকারী শিক্ষক ফজলুল হককে একটি বিশেষ সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
মাদরাসার সাবেক শিক্ষার্থী টিপু সুলতান ও ইমরান জানান, “স্কুলের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ফজলুল হক হুজুর অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি সবসময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বন্ধুসুলভ আচরণ করতেন, যা তাদের প্রতি তার গভীর ভালোবাসার প্রমাণ। তাই বিদায়ের সময় সকল শিক্ষার্থী কান্নায় ভেঙে পড়েছিল।”
মাদরাসার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শোয়েব বলেন, “যখন শিক্ষক তার চাকরি জীবনের শেষে বাড়ি ফিরে যান, তখন তিনি অনেক কষ্ট পান। বিদায়ের এই কষ্ট কিছুটা কমানোর জন্যই শিক্ষার্থী ও কর্তৃপক্ষ ব্যতিক্রমী এই আয়োজন করেছে। আমার মনে হয়, ঈশ্বরগঞ্জে এ ধরনের একটি বিদায় অনুষ্ঠান এই প্রথম অনুষ্ঠিত হলো। প্রতিটি শিক্ষকের বিদায় যেন এভাবেই উদযাপিত হয়।”
কেন এই ধরনের বিদায় আয়োজন করা হয়?
উত্তর: শিক্ষকের প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা প্রকাশের জন্য এমন আয়োজন করা হয়। এটি শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষকের অবদানের মূল্যায়ন এবং বিদায়ের সময় তাদের কষ্ট কিছুটা কমানোর একটি উপায়।
কী ধরনের কার্যক্রম অনুষ্ঠানে অন্তর্ভুক্ত ছিল?
উত্তর: অনুষ্ঠানে ফুলের সাজসজ্জা, সংবর্ধনা, বক্তব্য প্রদান এবং শিক্ষার্থীদের অনুভূতি প্রকাশের মতো কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত ছিল।
শিক্ষকের ভূমিকা কী ছিল প্রতিষ্ঠানে?
উত্তর: শিক্ষক ফজলুল হক প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে মাদরাসায় নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বন্ধুসুলভ আচরণ করতেন।
শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া কী ছিল?
উত্তর: বিদায়ের সময় অনেক শিক্ষার্থী কান্নায় ভেঙে পড়েছিল, যা তাদের শিক্ষকের প্রতি গভীর ভালোবাসা ও আবেগ প্রকাশ করে।
এ ধরনের অনুষ্ঠান কি নিয়মিত আয়োজন করা হয়?
উত্তর: সাধারণত এ ধরনের অনুষ্ঠান নিয়মিত আয়োজন করা হয় না, তবে এটি একটি বিশেষ উদ্যোগ হিসেবে দেখা হয়। অধ্যক্ষের মতে, প্রতিটি শিক্ষকের বিদায় এভাবে উদযাপিত হওয়া উচিত।
উপসংহার
এই রাজকীয় বিদায় অনুষ্ঠানটি আমাদের শিক্ষা সমাজের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ফজলুল হক হুজুরের মতো নিবেদিত শিক্ষক যখন বিদায় নেন, তখন তার অবদানকে সম্মান জানানো এবং শিক্ষার্থীদের অনুভূতিগুলোকে মর্যাদা দেওয়া প্রয়োজন। এই আয়োজন শুধুমাত্র একজন শিক্ষকের বিদায় নয়, বরং শিক্ষার সাথে সম্পর্কিত ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও বন্ধুত্বের একটি চিত্র। আশা করি, ভবিষ্যতে অন্য শিক্ষকদের বিদায়ও এমনই উৎসবমুখরভাবে উদযাপন করা হবে, যাতে তারা জানেন যে, তাদের শ্রম ও নিষ্ঠা কখনো ভোলার নয়।




