শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া, উৎসব-বিনোদনসহ বাড়ছে বিভিন্ন ভাতা

শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া, উৎসব-বিনোদনসহ বাড়ছে বিভিন্ন ভাতা

“উপদেষ্টা বলেন, ‘দীর্ঘ ১৫-২০ বছরের বঞ্চনা ১-২ বছরের বাজেটের মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব নয়—এ বিষয়টি বোঝানো অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। বেসরকারি খাতের বেতনকে আজই সরকারি খাতের সমপর্যায়ে নিয়ে আসার দাবি যৌক্তিক—এটি আমরা স্বীকার করি। তবে একটি বছরের বাজেট দিয়ে দীর্ঘদিনের বৈষম্য দূর করা বাস্তবসম্মত নয়। তবুও, পরিবর্তনের একটি সূচনা প্রয়োজন, এবং সেই সূচনার দায়িত্ব আমরা গ্রহণ করেছি।

বিদায়ী শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য সুখবর দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, শিক্ষকদের উৎসব ভাতা, বিনোদন ভাতা, বাড়িভাড়া ভাতা ও অন্যান্য ভাতা বাড়ানো হচ্ছে।

বুধবার (৫ মার্চ) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অধ্যাপক ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদের বিদায় এবং নবনিযুক্ত উপদেষ্টা সি আর আবরারের যোগদান উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে অধ্যাপক মাহমুদ বলেন, ‘কয়েক মাস আগেই আমি আশ্বাস দিয়েছিলাম—আমাদের সামর্থ্যের মধ্যে থেকে এ বছর এবং আগামী বছরের বাজেটে যতটুকু সম্ভব অর্থ বরাদ্দের মাধ্যমে দাবিগুলোর বাস্তবায়নে আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করব। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে সেই অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি।’

বিদায়ী শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, দীর্ঘদিনের বৈষম্য এক বা দুই বছরের বাজেটের মাধ্যমে নিরসন সম্ভব নয়, তবে এর সূচনা জরুরি এবং সে উদ্যোগই নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘১৫-২০ বছরের বঞ্চনা ১-২ বছরের বাজেটে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়—এটা বোঝানো কঠিন। আজই যদি বেসরকারি শিক্ষকদের বেতন সরকারি শিক্ষকদের সমপর্যায়ে নিয়ে আসার দাবি তোলা হয়, সেটা যুক্তিসঙ্গত—আমি তা স্বীকার করি। কিন্তু এক বছরের বাজেট দিয়ে দীর্ঘদিনের বৈষম্য দূর করা বাস্তবসম্মত নয়। তবুও, এর একটি ইতিবাচক সূচনা প্রয়োজন, এবং সেই শুরুটা আমরা করে দিচ্ছি।’

এ সময় তিনি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ভাতা বৃদ্ধির বিষয়েও আশাবাদ প্রকাশ করে বলেন, ‘তাদের উৎসব ভাতা, বিনোদন ভাতা, বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতাসহ কিছু ভাতা বাড়ানো সম্ভব হবে। এ বছরের ঈদুল আজহা থেকেই এর কার্যকারিতা শুরু হতে পারে এবং আগামী বছরের বাজেটেও এ বিষয়ে প্রভিশন রাখা হচ্ছে। যদিও এখনই আমি নির্দিষ্ট করে বলতে পারছি না কতটুকু বাড়বে, তবে এই বাজেট ও পরবর্তী বাজেটে আমরা সাধ্যমতো সে ব্যবস্থা রাখছি।’

বিদায়ী শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ জানিয়েছেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অবসর ও কল্যাণ ভাতার জন্য একটি পৃথক তহবিল গঠনের কাজ শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, “এ বছরই প্রাথমিকভাবে কিছু বরাদ্দ রাখা হয়েছে। আগামী বাজেটেও এ খাতে অর্থ বরাদ্দ অব্যাহত থাকবে। তবে পুরো ফান্ডটিকে টেকসই করতে হলে ১-২ বছরের বাজেট যথেষ্ট নয়। আশা করছি, আগামী ৩-৪ বছরের বাজেটের মধ্যেই এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব হবে।”

তবে এই তহবিল ব্যবস্থাপনায় অতীতে কিছু গাফিলতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “অবসর ও কল্যাণ ফান্ডের টাকা ইচ্ছাকৃতভাবে এমন একটি ব্যাংকে রাখা হয়েছিল, যেটি আর্থিকভাবে দুর্বল। ফলস্বরূপ, কিছু অর্থ অন্যত্র চলে গেছে—যা উদ্বেগজনক।”

বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে অধ্যাপক মাহমুদ বলেন, “তাদের কল্যাণ ভাতা ও অবসর ভাতা হলো সবচেয়ে ন্যায্য দাবি। অথচ তারা এতটাই অরাজনৈতিক ও অসংগঠিত যে কখনও রাস্তায় নামেনি, আন্দোলন করেনি। তবুও আমি মনে করেছি, এই দাবিটিই আগে পূরণ করা উচিত।”

তবে জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রতি উপদেষ্টার নির্লিপ্ত অবস্থানের কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষক মহলের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ফেসবুকে অনেকেই বিদায়ী উপদেষ্টার ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করছেন।

ঘন ঘন জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন

কোন শিক্ষকদের জন্য এই ভাতাগুলো বাড়ানো হচ্ছে?

বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য এই ভাতাগুলো বাড়ানো হচ্ছে।

কোন কোন ভাতা বাড়ানো হচ্ছে?

উৎসব ভাতা, বিনোদন ভাতা, বাড়ি ভাড়া ভাতা, চিকিৎসা ভাতা সহ আরও কিছু ভাতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ভাতা বাড়ানোর কার্যকারিতা কবে থেকে শুরু হবে?

প্রাথমিকভাবে ঘোষণা অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ঈদুল আজহা থেকেই নতুন হারে কিছু ভাতা কার্যকর হতে পারে।

ভাতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কোথা থেকে এসেছে?

বিদায়ী শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদের নেতৃত্বে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ভাতার পরিমাণ ঠিক কতটুকু বাড়বে?

এখনো নির্দিষ্ট অঙ্ক ঘোষণা করা হয়নি, তবে বাজেটে সেক্ষেত্রে প্রভিশন রাখা হয়েছে, এবং সহনশীল হারে বাড়ানোর আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

এই ভাতাগুলোর স্থায়ীত্ব কেমন হবে?

বাজেটে ধারাবাহিক বরাদ্দ নিশ্চিত করা গেলে, ভাতাগুলোর স্থায়ীত্বও পর্যায়ক্রমে টেকসইভাবে রূপ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য কী?

দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত শিক্ষকদের আর্থিক নিরাপত্তা বৃদ্ধি ও মানসিক স্বীকৃতি প্রদান—এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য।

উপসংহার

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top