লজ্জায় মাথা নিচু করে থাকলাম, কিছুই বলতে পারলাম না: শিবির সভাপতি

লজ্জায় মাথা নিচু করে থাকলাম, কিছুই বলতে পারলাম না: শিবির সভাপতি

“জুলাই ঘোষণাপত্র কবে প্রকাশিত হবে? কোনো অদৃশ্য প্রতিবন্ধকতার কারণে কি ঘোষণাপত্র প্রকাশে বিলম্ব ঘটছে?”

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম শুক্রবার (৪ জুলাই) রাতে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে একটি পোস্টে “জুলাই ঘোষণাপত্র” প্রসঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, রংপুরে শহীদ ১০টি পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, যাদের বেশিরভাগেরই জিজ্ঞাসা ছিল— “জুলাই ঘোষণাপত্র কখন হবে?”

জাহিদুল ইসলাম তার পোস্টে লেখেন:

‘জুলাই ঘোষণাপত্র কখন হবে?’

আজ রংপুরে শহীদ ১০টি পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে। অধিকাংশের একটাই প্রশ্ন— জুলাই ঘোষণাপত্র কবে প্রকাশিত হবে?

তারা বলছিলেন—
“আমাদের স্বামী, সন্তান, ভাইদের রক্তের বিনিময়ে আপনারা আজকে রাজনীতিতে সক্রিয়, সামনে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। সারাদেশে নির্বিঘ্নে সভা-সমাবেশ করছেন, পদযাত্রা করছেন। কিন্তু সেই রক্তের বিনিময়ে আমাদের যে ন্যূনতম প্রাপ্তি— একটি ঘোষণাপত্র— সেটি এখনো আসছে না কেন? আমাদের দাবির কি কোনো মূল্য নেই?”

আমি লজ্জিত। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে ছিলাম। তাদের প্রশ্নের কোনো জবাব দিতে পারিনি।

এই পোস্টের মাধ্যমে শিবির সভাপতি শহীদ পরিবারের আবেগ এবং প্রত্যাশা তুলে ধরেছেন, এবং একই সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের প্রতি একটি মৌন আহ্বান জানিয়েছেন— ঘোষণাপত্র প্রকাশে অনিশ্চয়তা নিরসনে পদক্ষেপ নেওয়ার।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে পরিচিত দুইজন উপদেষ্টার প্রতি শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করা হয়েছে:

“জুলাই ঘোষণাপত্র কবে প্রকাশিত হবে? এমন কী কোনো অদৃশ্য প্রভাব বা শক্তি রয়েছে, যার কারণে ঘোষণাপত্র এখনো প্রকাশিত হচ্ছে না?”

শহীদ পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে এই প্রশ্নের দ্রুত, স্পষ্ট ও দায়িত্বশীল উত্তর প্রত্যাশা করা হচ্ছে। তাদের মতে, সময়মতো প্রতিশ্রুতি পূরণ না হলে, তারা সরাসরি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গিয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করবেন।

“আশা করি, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে শহীদ পরিবারের এই প্রশ্নের জবাব দেওয়া হবে। অন্যথায়, শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে আপনাদের অফিসে গিয়ে সরাসরি জবাব গ্রহণ করা হবে, ইনশাআল্লাহ।”

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন

জুলাই ঘোষণাপত্র কী?

জুলাই ঘোষণাপত্র একটি রাজনৈতিক বা সাংগঠনিক দলিল, যা শহীদ পরিবার এবং সংশ্লিষ্ট কর্মীদের উদ্দেশ্যে একটি দিকনির্দেশনা বা প্রতিশ্রুতি রূপে প্রকাশের কথা ছিল। এটি দীর্ঘদিন ধরে প্রত্যাশিত একটি ঘোষণা।

কারা এই ঘোষণাপত্রের জন্য অপেক্ষা করছেন?

বেশিরভাগ শহীদ পরিবারের সদস্যরা, যারা সংগঠনের জন্য আত্মত্যাগকারী স্বজনদের স্মরণে কিছু প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন চান, এই ঘোষণাপত্রের জন্য অপেক্ষা করছেন।

কেন শিবির সভাপতির এমন প্রতিক্রিয়া (“লজ্জায় মাথা নিচু করে থাকলাম”)?

রংপুরে শহীদ ১০টি পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতে অধিকাংশ সদস্য জুলাই ঘোষণাপত্রের বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাদের আবেগপূর্ণ প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট উত্তর দিতে না পারায়, শিবির সভাপতি নিজেকে অসহায় ও বিব্রতবোধ করেন।

ঘোষণাপত্র প্রকাশে কী ধরনের প্রতিবন্ধকতা রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে?

শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হয়েছে, “কোনো অদৃশ্য শক্তির কারণে কি ঘোষণাপত্র প্রকাশে বিলম্ব হচ্ছে?”—যা ইঙ্গিত করে, অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক রাজনৈতিক জটিলতা থাকতে পারে।

শহীদ পরিবারের দাবি অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে?

তারা দ্রুত উত্তর প্রত্যাশা করছেন। অন্যথায়, শহীদ পরিবারের সদস্যরা সরাসরি সংশ্লিষ্ট অফিসে গিয়ে জবাবদিহিতা দাবি করবেন বলে জানিয়েছেন।

উপসংহার

জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে শহীদ পরিবারগুলোর প্রতীক্ষা দীর্ঘ হচ্ছে, আর সে সঙ্গে বাড়ছে তাদের হতাশা ও ক্ষোভ। শহীদদের আত্মত্যাগের যথাযথ স্বীকৃতি ও সম্মান প্রদর্শনে ঘোষণাপত্র প্রকাশ যে একটি ন্যূনতম প্রত্যাশা—তা বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছেন তারা।

শিবির সভাপতি জাহিদুল ইসলামের প্রতিক্রিয়া, “লজ্জায় মাথা নিচু করে থাকলাম, কিছুই বলতে পারলাম না”—এই বাক্যটিই প্রমাণ করে, বিষয়টি শুধু রাজনৈতিক নয়, এটি গভীরভাবে মানবিক এবং নৈতিক দায়বদ্ধতার সঙ্গে সম্পর্কিত।

শহীদ পরিবারের প্রশ্নের জবাব যদি দায়িত্বশীল মহল থেকে দ্রুত না আসে, তবে এটি শুধু একটি ঘোষণাপত্র নয়—আস্থা, সম্পর্ক ও আদর্শের জায়গাতেই প্রশ্ন তুলে দেবে। সময় এসেছে প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নের, অঙ্গীকার পূরণের।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top