লক্ষাধিক শিক্ষক নিয়োগের ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির কার্যক্রম শেষ হতে পারে আগস্টে

লক্ষাধিক শিক্ষক নিয়োগের ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির কার্যক্রম শেষ হতে পারে আগস্টে

“গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর প্রার্থীদের আবেদন গ্রহণসহ একাধিক ধাপের কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হয়, যা সম্পন্ন করতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সময় প্রয়োজন। নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী, এসব কার্যক্রম চলতি বছরের আগস্ট মাসে শেষ হতে পারে। এরপর চূড়ান্ত ধাপে, প্রার্থীদের আবেদন অনুযায়ী শূন্যপদে শিক্ষক পদে সুপারিশ করা হবে।”

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের জন্য ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি আগামীকাল, ১৬ জুন ২০২৫ তারিখে প্রকাশ করা হবে। তবে প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন ২২ জুন দুপুর ১২টা থেকে। আবেদনপত্র ও ফি জমা দেওয়ার শেষ সময় ১০ জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে।

এবারের গণবিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীদের বয়সসীমা, নারী কোটা এবং শিক্ষাগত সনদের মেয়াদসহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনা হচ্ছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)–এর একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানিয়েছে, গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আবেদন গ্রহণ, যাচাই-বাছাই ও অন্যান্য প্রশাসনিক কার্যক্রমসহ পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে চলতি বছরের আগস্ট মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

সূত্র আরও জানিয়েছে, এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরই শূন্যপদে আবেদনের ভিত্তিতে প্রার্থীদের শিক্ষক পদে সুপারিশ করা হবে।

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের জন্য ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি আগামীকাল, ১৬ জুন ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত হবে। তবে আবেদন গ্রহণ শুরু হবে ২২ জুন দুপুর ১২টা থেকে এবং চলবে ১০ জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত।
এবারের গণবিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীর বয়সসীমা, নারী কোটা, এবং সনদের মেয়াদ-সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নীতিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে।

বয়স ও সনদের মেয়াদ নির্ধারণে নতুন নীতি
এনটিআরসিএ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধনের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের তারিখ (৪ জুন ২০২৫) থেকে প্রার্থীর বয়স গণনা করা হবে। অর্থাৎ ওই তারিখে প্রার্থীর বয়স ৩৫ বছর বা তার কম হতে হবে।
এছাড়া, নিবন্ধন পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল প্রকাশের তারিখ থেকে তিন বছর পর্যন্ত সনদ বৈধ থাকবে। সে অনুযায়ী, ৪ জুন থেকে বয়স ও সনদের মেয়াদ গণনা শুরু হয়েছে।
নারী কোটা বাতিল
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ১৫ মে ২০২৫ তারিখের চিঠির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই গণবিজ্ঞপ্তিতে নারী কোটা থাকবে না। এর অর্থ, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নারী প্রার্থীদের জন্য পূর্বঘোষিত সংরক্ষিত আসন এবার থাকছে না।

মিথ্যা তথ্য দিলে বাতিল হবে সুপারিশ
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রার্থীদের নিজ নিজ বিষয়ে এবং প্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে হবে। যদি কেউ মিথ্যা তথ্য দিয়ে আবেদন করেন এবং সে অনুযায়ী সুপারিশ পান, তাহলে সেই সুপারিশ বাতিল করা হবে এবং তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সময়মতো নিয়োগ না দিলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যদি নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সুপারিশকৃত প্রার্থীকে নিয়োগ না দেয়, তবে জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধানের এমপিও স্থগিত বা বাতিল এবং ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডি বাতিল করার মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শূন্যপদের ভুল চাহিদায় এনটিআরসিএ দায়ী নয়
শূন্যপদের চাহিদা প্রতিষ্ঠান প্রধান কর্তৃক দাখিলকৃত এবং সংশ্লিষ্ট উপজেলা ও জেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে সংগৃহীত। তাই ভুল চাহিদাজনিত কারণে নিয়োগ সুপারিশে জটিলতা দেখা দিলে এনটিআরসিএ দায়ী থাকবে না।
শিক্ষক নিবন্ধন ও এনটিআরসিএর দায়িত্ব
প্রসঙ্গত, ২০০৫ সাল থেকে এনটিআরসিএ শিক্ষক নিবন্ধন সনদ প্রদান করে আসছে। শুরুতে সনদধারীরা প্রতিষ্ঠানভিত্তিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে নিয়োগ পেতেন। তবে ২০১৫ সাল থেকে এনটিআরসিএ চূড়ান্তভাবে শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রার্থী বাছাই ও সুপারিশ করার দায়িত্ব পায়।
সম্প্রতি, ৪ জুন ২০২৫ তারিখে অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধনের চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত হয়। এতে ৬০,৫২৮ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন, যাঁদের বয়স ও সনদের মেয়াদ প্রযোজ্য হলে তারা ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করতে পারবেন।
পরীক্ষার ধাপ
প্রার্থীরা প্রথমে প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশ নেন। উত্তীর্ণ হলে লিখিত পরীক্ষায় বসার সুযোগ পান এবং সফলভাবে লিখিত পাস করলে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন। মৌখিক পরীক্ষার পরই চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়।
শিক্ষা ও নিয়োগ সংক্রান্ত সর্বশেষ খবর পেতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল আইকনে ক্লিক করুন, যেন সব আপডেট আপনার কাছে পৌঁছে যায়।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন

ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি কবে প্রকাশিত হচ্ছে এবং আবেদন কখন থেকে শুরু?

ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি ১৬ জুন ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত হবে। অনলাইনে আবেদন শুরু হবে ২২ জুন দুপুর ১২টা থেকে, এবং আবেদন ও ফি জমা দেওয়ার শেষ সময় ১০ জুলাই রাত ১২টা।

এবার শিক্ষক নিয়োগে বয়সসীমা ও সনদের মেয়াদ কিভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে?

প্রার্থীর বয়স ৪ জুন ২০২৫ তারিখে ৩৫ বছর বা কম হতে হবে।

সনদের মেয়াদ: অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধনের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের তারিখ (৪ জুন) থেকে তিন বছর পর্যন্ত সনদ বৈধ থাকবে।

নারী কোটা থাকছে কি না?

না, এবারের (ষষ্ঠ) গণবিজ্ঞপ্তিতে নারী কোটা বাতিল করা হয়েছে। অর্থাৎ, নারী প্রার্থীদের জন্য আলাদা সংরক্ষিত আসন থাকছে না।

নিয়োগে মিথ্যা তথ্য দিলে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে?

উত্তর: যদি কোনো প্রার্থী মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে আবেদন করেন এবং সুপারিশপ্রাপ্ত হন, তাহলে সুপারিশ বাতিল করা হবে এবং তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিয়োগ প্রক্রিয়ার সময়সীমা কতদিন, এবং এটি কবে নাগাদ শেষ হতে পারে?

উত্তর: গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ থেকে শুরু করে আবেদন, যাচাই-বাছাই, এবং সুপারিশসহ পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া চলতি বছরের আগস্ট মাসে শেষ হতে পারে—এমনটাই জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ

উপসংহার

ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লক্ষাধিক শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে, যা দেশের শিক্ষা খাতে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। বয়সসীমা, সনদের মেয়াদ ও নারী কোটায় আনা পরিবর্তন এই নিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরও নির্দিষ্ট ও বাস্তবমুখী করেছে। তবে সঠিক তথ্য দিয়ে আবেদন করা এবং নির্ধারিত সময়সীমা মেনে নিয়োগ সম্পন্ন করা সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আশা করা যায়, আগস্ট মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া শেষ হয়ে সফলভাবে শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ সম্পন্ন হবে, যা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top