অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, কোনো সরকারি কলেজকে রাতারাতি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা সম্ভব নয়, এবং এটি এক ধরনের অযৌক্তিক দাবি। তিনি সাধারণ জনগণকে জিম্মি করে আন্দোলন না করারও পরামর্শ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, আন্দোলনকারীরা সরকারের কাছে কিছুটা দাবি পূরণে সক্ষম হলেও, সরকার যখন প্রয়োজন মনে করবে, তখন কঠোর পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, ট্রেনে আক্রমণ করে শিশু ও নারীসহ অনেককে আহত করা একটি অমানবিক কাজ।
এদিকে, তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে সরকারের ইতিবাচক সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) তারা দ্বিতীয় দিনে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ থেকে সরে এসে কলেজ ‘ক্লোজডাউন’ কর্মসূচি পালন করছেন। তবে, যদি সরকারি সিদ্ধান্ত তাদের পক্ষে না আসে, তাহলে কঠোর কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে তিতুমীর ঐক্য।
তিনি আরও বলেন, ট্রেনে আক্রমণ করে শিশু ও নারীসহ অনেককে আহত করা একটি অমানবিক কাজ।
এদিকে, তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে সরকারের ইতিবাচক সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) তারা দ্বিতীয় দিনে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ থেকে সরে এসে কলেজ ‘ক্লোজডাউন’ কর্মসূচি পালন করছেন। তবে, যদি সরকারি সিদ্ধান্ত তাদের পক্ষে না আসে, তাহলে কঠোর কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে তিতুমীর ঐক্য।
শিক্ষার্থীদের অবস্থানকে কেন্দ্র করে কলেজের বাইরে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
তিতুমীর ঐক্যের ব্যানারে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, ঢাকা উত্তরে কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নেই, তাই একটি কমিশন গঠন করে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবির যৌক্তিকতা যাচাই করার আহ্বান জানান তারা। শিক্ষার্থীরা জানান, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, শিক্ষা উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট একটি দল আলোচনায় বসতে সম্মত হয়েছেন, এবং তারা এখন সরকারের ইতিবাচক সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সড়ক অবরোধের সময় ট্রেনে ঢিল ছোড়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে তিতুমীর ঐক্য জানায়, এটি ক্ষোভের ফলস্বরূপ ঘটেছে। তারা আহ্বান জানিয়েছে, ঢিল ছোড়ার ঘটনায় কেউ যেন রাজনৈতিকভাবে ট্যাগ না হন।
তিতুমীর ঐক্য আরও জানায়, ঢাকা উত্তরে কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নেই এবং কেউ চায় না যে, এখানে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হোক। তারা বলেন, প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা এবং আরও দুই সদস্যের একটি দল বৈঠকে বসবে, এবং সেখান থেকে যদি সিদ্ধান্ত ইতিবাচক হয়, তবে তারা কর্মসূচি থেকে সরে আসবেন। এছাড়া, তারা কমিশন গঠন করার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবির যৌক্তিকতা যাচাই করে, পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে, তারা এই মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি থেকে সরে আসতে প্রস্তুত নয়।
কেন সরকারি কলেজকে রাতারাতি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা সম্ভব নয়?
সরকারি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের জন্য দীর্ঘ প্রক্রিয়া, পরিসর এবং বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা, অবকাঠামো উন্নয়ন ও আইনি সংশোধনের প্রয়োজন হয়। এটি একটি বড় ও জটিল প্রক্রিয়া, যা একদিনে সম্ভব নয়।
এ ধরনের রূপান্তরের জন্য কী কী পদক্ষেপ নিতে হয়?
সরকারি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের জন্য সরকারকে একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা তৈরি করতে হয়, যাতে শিক্ষা কার্যক্রম, ভবন, শিক্ষক-কর্মকর্তা নিয়োগ, আর্থিক ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ ধরনের দাবি উঠলে সরকার কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়?
সরকার সাধারণত প্রাথমিকভাবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে, দাবি যাচাই-বাছাই করার পর সিদ্ধান্ত নেয়। তা ছাড়া, স্থানীয় জনগণের সঙ্গেও মতবিনিময় করা হয়।
যে দাবি করা হচ্ছে, তা কি সবার পক্ষে যৌক্তিক?
এমন দাবির যৌক্তিকতা নির্ভর করে স্থানীয় সরকারের শিক্ষানীতির উপর, শিক্ষাব্যবস্থার চাহিদা এবং আর্থিক সক্ষমতার উপর। যেহেতু এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া, তাই তা সহজেই বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।
কীভাবে এই দাবির সমাধান হতে পারে?
দাবির সমাধান হতে পারে একটি কমিশন গঠন করে, যেখানে শিক্ষা বিশেষজ্ঞ, সরকারি প্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের মতামত নেওয়া হবে। একাধিক পর্যালোচনা শেষে, সরকার যৌক্তিকতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
উপসংহার
সরকারি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের মতো একটি বৃহত্তম পদক্ষেপ রাতারাতি সম্ভব নয়, কারণ এটি একটি জটিল এবং দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া যা বিভিন্ন স্তরের পরিকল্পনা, অবকাঠামো উন্নয়ন, আর্থিক এবং প্রশাসনিক সমর্থন দাবি করে। এই ধরনের দাবির যৌক্তিকতা যাচাই করতে একটি কমিশন গঠন এবং সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ প্রয়োজন। তবে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা এবং তাদের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য ইতিবাচক আলোচনার দিকে এগিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। এই প্রক্রিয়া ধৈর্যের এবং সময়ের দাবি, যা পরবর্তী সময়ে সরকারের সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হতে পারে।