“মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।”

মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম ও পরিচয় ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
এই প্রেক্ষাপটে রোববার (২৯ জুন) অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আরিফুর রহমান মজুমদার এক বিশেষ সংবাদ বিজ্ঞপ্তি জারি করে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে একটি প্রতারক চক্র মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে এমপিওভুক্তি, বিশেষ বরাদ্দ, পদোন্নতি, উচ্চতর স্কেল, ডিজির প্রতিনিধি মনোনয়ন, ইনডেক্স প্রদান ও কর্তন, অভিযোগ নিষ্পত্তিসহ নানা দাপ্তরিক কাজে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।
প্রতারকরা হোয়াটসঅ্যাপ, সিগন্যাল, ফেসবুক, মেসেঞ্জার, ইনস্টাগ্রামসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ভুয়া আইডি তৈরি করে, যেখানে সরকারি লোগো, প্যাড, স্বাক্ষর এবং সিল জাল করে ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব প্ল্যাটফর্মে যোগাযোগ করে বিকাশ, রকেট, নগদের মাধ্যমে অর্থ আদায় করা হচ্ছে বলে দাবি করেছে অধিদপ্তর।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, কিছু অভিযোগে প্রতারকরা হোয়াটসঅ্যাপে কর্মকর্তাদের ছবি ব্যবহার করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বলেও তথ্য পাওয়া গেছে।
মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান প্রধান, শিক্ষক ও কর্মকর্তাকে সচেতন ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে এবং কোনো আর্থিক লেনদেন বা সন্দেহজনক যোগাযোগ হলে তা অধিদপ্তরের সাথে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করার নির্দেশনা দিয়েছে।
মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর স্পষ্টভাবে জানিয়েছে যে, সেবা গ্রহণের জন্য কোনো অর্থ প্রদানের প্রয়োজন নেই, এবং অধিদপ্তর শুধুমাত্র সুনির্দিষ্ট বিধিবিধান ও নিয়মকানুনের ভিত্তিতে সেবা প্রদান করে থাকে। অর্থ বা উপহারের বিনিময়ে কোনো কার্য সম্পাদনের সুযোগ নেই বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠান প্রধান বা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, কেউ যদি বিকাশ, রকেট, নগদ বা অন্য মাধ্যমে অর্থ দাবি করে, তাহলে সেই ফোন নম্বরগুলো চিহ্নিত করে অধিদপ্তরকে অবহিত করতে হবে।
এছাড়া, ই-মেইল, এসএমএস, ফোনকল, চিঠিপত্র বা ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে কেউ যদি মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে অর্থ বা উপহার দাবি করে, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে তা অধিদপ্তরকে জানানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের নাম ব্যবহার করে প্রতারণামূলক যোগাযোগে কোনো প্রকার লেনদেন না করতে এবং প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে সহায়তা করতে সংশ্লিষ্টদের বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের নাম ব্যবহার করে কী ধরনের প্রতারণার ঘটনা ঘটছে?
প্রতারকরা কর্মকর্তাদের নাম ও পরিচয় ব্যবহার করে এমপিওভুক্তি, পদোন্নতি, বরাদ্দ, প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য সেবা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর এ বিষয়ে কী সতর্কতা দিয়েছে?
অধিদপ্তর জানায়, সেবা গ্রহণের জন্য কোনো টাকা প্রদান করতে হয় না এবং কেউ অর্থ বা উপহার দাবী করলে তা অবিলম্বে অধিদপ্তরকে জানাতে হবে।
প্রতারণাকারীরা কোন মাধ্যম ব্যবহার করে অর্থ আদায় করছে?
হোয়াটসঅ্যাপ, সিগন্যাল, ফেসবুক, মেসেঞ্জার, ইনস্টাগ্রামসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ভুয়া আইডি খুলে বিকাশ, রকেট ও নগদে অর্থ নেওয়া হচ্ছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান বা সংশ্লিষ্টরা কীভাবে প্রতারণার নম্বরগুলো চিহ্নিত করতে পারবেন?
তারা সন্দেহজনক যেকোনো ফোন নম্বর বা যোগাযোগ তথ্য অধিদপ্তরের কাছে জানানোর মাধ্যমে সাহায্য করতে পারবেন।
এমন কোনো পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের করণীয় কী?
অনৈতিক কোনো যোগাযোগ বা অর্থ দাবি হলে তাৎক্ষণিকভাবে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরকে অবহিত করতে হবে এবং কোনো লেনদেনে সম্পৃক্ত না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
উপসংহার
মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের নাম ব্যবহার করে অর্থ আদায় করার প্রতারণামূলক ঘটনা ব্যাপকভাবে ঘটছে, যা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা ও বিশ্বাসযোগ্যতার জন্য গুরুতর হুমকি। সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে অধিদপ্তর থেকে কোনো অর্থ দাবী করা হয় না এবং এ ধরনের প্রতারণার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে।
প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সংশ্লিষ্টরা অবিলম্বে সন্দেহজনক যোগাযোগ বা অর্থ দাবি সম্পর্কে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরকে জানিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে সহায়তা করবেন। শুধুমাত্র সচেতনতা ও দ্রুত প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে এ প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করা সম্ভব।




