ফুল আর মিষ্টি নিয়ে অদম্য লিতুন জিরার বাড়িতে ইউএনও

ফুল আর মিষ্টি নিয়ে অদম্য লিতুন জিরার বাড়িতে ইউএনও

“আমি সমাজের উপর বোঝা হতে চাই না। লেখাপড়া শেষ করে একজন সৎ, যোগ্য ও আত্মনির্ভরশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে চাই, যেন সমাজ ও দেশের কল্যাণে অবদান রাখতে পারি। আজকের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল আমাকে অত্যন্ত আনন্দিত ও উৎসাহিত করেছে।”

হাত-পা ছাড়াই মুখের থুঁতনিতে কলম ধরে লেখে এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ অর্জন করা অদম্য মেধাবী লিতুন জিরাকে ফুল ও মিষ্টি নিয়ে শুভেচ্ছা জানালেন মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নিশাত তামান্না।

শুক্রবার (তারিখ উল্লেখযোগ্য হলে যুক্ত করুন) লিতুনের বাড়ি, যশোর জেলার মণিরামপুর উপজেলার শেখপাড়া খানপুর গ্রামে গিয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানান ইউএনও। এ সময় তিনি বলেন, “প্রতিবন্ধকতা লিতুনের অদম্য মনোবলের কাছে হার মেনেছে। জন্ম থেকে হাত-পা না থাকলেও, মুখ দিয়ে লিখে সে সব শ্রেণিতে প্রথম হয়েছে। এবার এসএসসি পরীক্ষায়ও বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে সে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।”

ইউএনও জানান, শিগগিরই যশোর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লিতুন জিরাকে আনুষ্ঠানিকভাবে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।

লিতুন জিরা বলেন, “আমি সমাজের বোঝা হতে চাই না। লেখাপড়া করে মানুষের মতো মানুষ হয়ে আত্মনির্ভরশীলতা অর্জন করে সমাজের সেবা করতে চাই। এসএসসির ফলাফলে আমি খুবই আনন্দিত। এই অর্জনে আমার মা–বাবা, শিক্ষক, সহপাঠী, বন্ধু, এবং সাংবাদিকদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।”

তার সহপাঠী সজীব হোসেন বলেন, “লিতুন আমার খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু। সে অত্যন্ত মেধাবী। ওর জিপিএ-৫ পাওয়ায় আমরা সবাই গর্বিত।”

দৈনিক শিক্ষাডটকমকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত তামান্না বলেন, “কঠোর অধ্যবসায় ও অদম্য ইচ্ছাশক্তি দিয়ে যে সবকিছু অর্জন করা সম্ভব—তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে লিতুন জিরা। আমি তার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য দোয়া করছি এবং নিরন্তর সাফল্য কামনা করছি।”

তিনি আরও জানান, যশোর জেলা প্রশাসক লিতুনের অসাধারণ ফলাফলে অত্যন্ত খুশি হয়েছেন এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খুব শিগগিরই তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।

সাম্প্রতিক শিক্ষা ও সমাজ সচেতনতামূলক খবর জানতে চোখ রাখুন দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলে।

শিক্ষা, সমাজ ও মানবিক গল্পসহ সব তথ্য পেতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল আইকনে ক্লিক করুন, যাতে নতুন ভিডিও প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই আপনার স্মার্টফোন বা কম্পিউটারে নোটিফিকেশন চলে আসে।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন

কে এই লিতুন জিরা?

লিতুন জিরা যশোর জেলার মণিরামপুর উপজেলার শেখপাড়া খানপুর গ্রামের অদম্য এক শিক্ষার্থী, যিনি জন্মগতভাবে হাত-পা না থাকলেও মুখের থুঁতনি দিয়ে লিখে এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছেন।

ইউএনও কেন লিতুনের বাড়িতে গিয়েছিলেন?

মণিরামপুরের ইউএনও নিশাত তামান্না লিতুন জিরার অসাধারণ সাফল্যে তাকে ফুল ও মিষ্টি দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে personally তার বাড়িতে যান।

ইউএনও কী বলেছেন এই উপলক্ষে?

তিনি বলেন, লিতুন জিরা কঠোর অধ্যবসায় ও অদম্য মানসিক শক্তির প্রতীক। তার এই অর্জন গোটা সমাজের জন্য অনুপ্রেরণা। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে শীঘ্রই সংবর্ধনা দেওয়া হবে।

লিতুনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

লিতুন জানিয়েছেন, তিনি সমাজের বোঝা না হয়ে আত্মনির্ভরশীল মানুষ হিসেবে গড়ে উঠে সমাজের সেবা করতে চান।

লিতুনের পাশে কে কে ছিলেন?

তার মা–বাবা, শিক্ষক, সহপাঠী, ইউএনও নিশাত তামান্না এবং সাংবাদিকসহ অনেকেই তার পাশে আছেন ও তার সাফল্যে গর্বিত।

উপসংহার

লিতুন জিরার জীবন সংগ্রাম আমাদের শিক্ষা দেয়—শারীরিক সীমাবদ্ধতা কোনো বাধা নয়, যদি ইচ্ছাশক্তি দৃঢ় হয়। জন্ম থেকেই হাত-পা না থাকা সত্ত্বেও মুখের থুঁতনি দিয়ে লিখে এসএসসিতে জিপিএ-৫ অর্জন করে সে শুধুই নিজের নয়, গোটা জাতির গর্বে পরিণত হয়েছে। তার এই সাফল্যে ফুল ও মিষ্টি নিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে যাওয়া ইউএনও নিশাত তামান্নার এই মানবিক gesture প্রমাণ করে—সমাজ তার অদম্য সাহসের স্বীকৃতি দিচ্ছে। লিতুনের মতো শিক্ষার্থীরা আমাদের প্রেরণা, যারা দেখিয়ে দেয়—অসাধ্য কিছু নেই।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top