এ সময় তারা জানান, তাদের দাবি পূরণ না হলে এই কর্মসূচি শুধুমাত্র প্রতীকী পর্যায়ে সীমাবদ্ধ থাকবে না। আন্দোলনকারীরা বাস্তবেই ফাঁসির মাধ্যমে আত্মত্যাগ করবেন।

আন্দোলনের ২৪তম দিনে এসে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ বাতিল হওয়া তৃতীয় ধাপের প্রার্থীরা প্রতীকী ফাঁসি কর্মসূচি পালন করেছেন। শনিবার (১ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে তারা এই কর্মসূচি পালন করেন।
এ সময় আন্দোলনকারীরা জানান, তাদের দাবি পূরণ না হলে এই কর্মসূচি আর প্রতীকী পর্যায়ে সীমাবদ্ধ থাকবে না। তারা বাস্তবেই ফাঁসির মাধ্যমে আত্মত্যাগ করতে বাধ্য হবেন।
এর আগে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ধাপের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় ২০২৩ সালের ১৪ জুন। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষে একই বছরের ৩১ অক্টোবর ফলাফল প্রকাশ করা হয়, যেখানে ৬ হাজার ৫৩১ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হন।
তবে, নিয়োগবঞ্চিত কয়েকজন প্রার্থী রিট দায়ের করলে আদালত ৬ হাজার ৫৩১ জনের ফলাফল ও নিয়োগপত্র প্রদান-সংক্রান্ত কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট চূড়ান্ত ফলাফল ও নির্বাচিতদের নিয়োগপত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করে রায় ঘোষণা করেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর আপিল বিভাগে স্থগিত আবেদন করে।
নিয়োগবঞ্চিত প্রার্থীরা জানান, গত ১৪ জানুয়ারি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায়ের সঙ্গে তাদের প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করে। সে সময় তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, সুপারিশপ্রাপ্ত ৬ হাজার ৫৩১ জনের সবাই চূড়ান্তভাবে নিয়োগ পাবেন।
তবে এরই মধ্যে চেম্বার জজ আদালত, আপিল বিভাগ এবং হাইকোর্টে মোট সাতটি শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। শেষ পর্যন্ত, গত ৬ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত রায়ে হাইকোর্ট পূর্ববর্তী ফলাফল বাতিল ঘোষণা করেন এবং মেধার ভিত্তিতে পুনরায় নিয়োগের নির্দেশ দেন।
নিয়োগবঞ্চিত শিক্ষকদের এই আন্দোলনের মূল কারণ কী?
২০২৩ সালের ১৪ জুন প্রকাশিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ধাপের বিজ্ঞপ্তির পর ৩১ অক্টোবর চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়, যেখানে ৬,৫৩১ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হন। কিন্তু কয়েকজন নিয়োগবঞ্চিত প্রার্থীর রিটের কারণে আদালত নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করে এবং পরবর্তীতে ৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট ফলাফল বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে নতুন নিয়োগের নির্দেশ দেন।
নিয়োগবঞ্চিত প্রার্থীরা কী ধরনের কর্মসূচি পালন করেছেন?
আন্দোলনের ২৪তম দিনে এসে তারা রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে প্রতীকী ফাঁসি কর্মসূচি পালন করেন। তাদের দাবি, যদি তাদের নিয়োগ নিশ্চিত না করা হয়, তাহলে ভবিষ্যতে এই কর্মসূচি প্রতীকী থাকবে না, বরং তারা বাস্তবেই আত্মাহুতি দেবেন।
আন্দোলনকারীরা সরকারের কাছ থেকে কী প্রতিশ্রুতি পেয়েছিলেন?
গত ১৪ জানুয়ারি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় আন্দোলনকারীদের আশ্বস্ত করেছিলেন যে, সুপারিশপ্রাপ্ত ৬,৫৩১ জনের সবাই চূড়ান্তভাবে নিয়োগ পাবেন। কিন্তু পরবর্তীতে আদালতের রায়ে তাদের নিয়োগ বাতিল হয়ে যায়।
আদালতের রায়ে কী বলা হয়েছে?
চেম্বার জজ আদালত, আপিল বিভাগ এবং হাইকোর্টে মোট সাতটি শুনানি শেষে ৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট চূড়ান্তভাবে পূর্ববর্তী ফলাফল বাতিল করেন এবং মেধার ভিত্তিতে নতুন নিয়োগের নির্দেশ দেন।
আন্দোলনের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে?
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তাদের দাবি মানা না হলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবেন, যা প্রতীকী নয় বরং বাস্তবেও আত্মাহুতির দিকে যেতে পারে। তারা নিয়োগ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
উপসংহার
প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগবঞ্চিত প্রার্থীদের আন্দোলন দীর্ঘদিন ধরে চলমান, যা বর্তমানে চরম রূপ নিয়েছে। আদালতের রায়ের পর তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে, যা তাদের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি দ্রুত কোনো সমাধানের উদ্যোগ না নেয়, তাহলে এই আন্দোলন আরও কঠিন পরিস্থিতির দিকে যেতে পারে। আন্দোলনকারীদের জীবন-জীবিকার নিশ্চয়তা দেওয়া এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাই এখন সময়ের দাবি। তাই, সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের উচিত একটি গ্রহণযোগ্য ও টেকসই সমাধানের জন্য দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা, যাতে প্রার্থীদের হতাশা ও আত্মাহুতির হুমকি বাস্তবে রূপ না নেয়।




