পাঠ্যপুস্তকখাতে আওয়ামী জমানায় ৩ সহস্রাধিক কোটি টাকা লুট

পাঠ্যপুস্তকখাতে আওয়ামী জমানায় ৩ সহস্রাধিক কোটি টাকা লুট

বিনামূল্যে পাঠ্যবই খাতে গত ১৫ বছরে তিন সহস্রাধিক কোটি টাকা দুর্নীতির শিকার হয়েছে। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক দুই শিক্ষামন্ত্রী, দুই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এবং পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের অধিকাংশ চেয়ারম্যান ও সচিব, পাশাপাশি কিছু প্রকাশক ও মুদ্রাকরদের সমন্বয়ে এই বিশাল অঙ্কের অর্থ তছরূপের ঘটনা ঘটেছে। অনিয়মের বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে সরকারি অডিট দপ্তরের আপত্তি উঠেছে। দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জমা হওয়া অভিযোগগুলোর অনুসন্ধানও হয়েছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এ বিষয়ে বারবার প্রশ্ন তুলেছে। তবে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা সচিব ও এনসিটিবির কর্মকর্তারা এসব বিষয়ে কোনো গুরুত্ব দেননি। এমনকি তাদের তদবিরের মাধ্যমে দুদকের অনুসন্ধান থামানো হয়েছে এবং কখনো কখনো অন্য উপায়ে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। টিআইবির পক্ষ থেকে করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে ধমক, মামলার হুমকি ও চোখ রাঙানির ঘটনাও ঘটেছে।

২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ সরকার কার্যক্রম শুরু করে, কিন্তু ওই শিক্ষাবর্ষের বই ছাপার পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় পূর্ববর্তী বছর, অর্থাৎ ফখরুদ্দীনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। এর মানে হলো, আওয়ামী লীগ সরকার ২০১০ শিক্ষাবর্ষের বই ছাপার কাজে দুর্নীতির প্রথম সুযোগ পায়, যা অব্যাহত থাকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত।

লুটপাটের যতো খাত

টেন্ডারে জালিয়াতি করে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানকে বই ছাপার কাজ দেওয়া এবং সেখান থেকে কমিশন নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটির কাছে বই ছাপানোর কাজ দেখতে যাওয়ার নামেও প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা খরচ করে প্রমোদ ভ্রমণ করা হয়েছে। প্রতি শিক্ষাবর্ষে ছাপানো বইয়ের জন্য কখনো ৫০ পয়সা এবং কখনো ১ টাকা করে শিক্ষামন্ত্রী ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর কাছে অর্থ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এভাবে প্রতি বছর ৩২ থেকে ৩৪ কোটি বইয়ের ওপর এই অর্থ তোলা হয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, পাঠ্য বইয়ের দরপত্র আহ্বানের পূর্বে প্রাক্কলিত দর অন্য কারো জন্য গোপন থাকার কথা। কিন্তু দরপত্র কমিটির কিছু সদস্য পছন্দের মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানকে আগে থেকেই দর জানিয়ে দিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। প্রাক-প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবই লেখা, ছাপা ও বিতরণ কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে।

এছাড়াও, মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে দরপত্র দাখিল করে। যদিও এনসিটিবি একটি স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান, তবে শিক্ষা ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় প্রায় সবকিছু পরিচালিত হয়।

এনসিটিবির অনেক কর্মকর্তা বেনামে মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে কাজ করছেন এবং একই ব্যক্তির একাধিক প্রতিষ্ঠানকেও কার্যাদেশ দেওয়া হচ্ছে। নিয়মবহির্ভূত অর্থের বিনিময়ে মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করা হচ্ছে এবং টেকনিক্যাল কমিটির দ্বারা অযোগ্য ঘোষিত প্রতিষ্ঠানগুলোও বই ছাপার কাজ পেয়ে যাচ্ছে।

১৯৭৩ সালের মুদ্রণ আইন অনুযায়ী, কাজ প্রদান করা উচিত সেই প্রতিষ্ঠানেরই। তবে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান মুদ্রণ, বাঁধাই ও লেমিনেশনের কাজ সাব-কন্ট্রাক্টে দিয়ে থাকে। মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলো বিএসটিআই সনদবিহীন মিলগুলোর কাছ থেকে নিয়মবহির্ভূতভাবে কাগজ কেনে। একাধিক কাগজ মিল মানসম্মত কাগজ সরবরাহে অক্ষম হওয়ায় কালো তালিকাভুক্ত হলেও পরবর্তী বছরে আবারো তাদের কাছ থেকে কাগজ কেনা হয়।

কাগজ উৎপাদনের সক্ষমতা ও সময়মতো সরবরাহের অভাব থাকা সত্ত্বেও চুক্তিবদ্ধ মাপ অনুযায়ী কাগজ সরবরাহ না করেও তাদের কাগজে বই ছাপানো হয়। এনসিটিবির কিছু কর্মকর্তার আর্থিক সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলো বছরের পর বছর ধরে এ ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তেজগাঁও এবং টঙ্গীর গুদামে কাগজের পরিমাণ ও ব্যবহারেও রয়েছে নয়ছয়।

এছাড়াও, প্রকৃত শিক্ষার্থী সংখ্যা ও পাঠ্যবইয়ের চাহিদার বিষয়ে জালিয়াতি করা হচ্ছে। যত বেশি বই ছাপানো হয়, ততই বেশি লুটপাট সম্ভব। অতিরিক্ত ছাপানো বই বাফার স্টকে রেখে কয়েক বছর পর সেগুলো কেজিদরে বিক্রি করা হয়, যেখানে বিক্রিতে জালিয়াতি ঘটে।

২০১০ সালের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০১১ সালের ১ জানুয়ারি বই উৎসব শুরু হয়, কিন্তু এই উৎসবের নামেও কোটি কোটি টাকা লুটপাট করা হয়। বাস্তবে, ১ জানুয়ারিতে পুরো সেট বই কোনো বছরেই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া সম্ভব হয়নি আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে। প্রতিটি শ্রেণির জন্য সাধারণত একটি বা দুটি বই (বাংলা, ইংরেজি বা গণিত) দেওয়া হয়, আর পুরো সেট বই পেতে শিক্ষার্থীদের মার্চ ও এপ্রিল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়।

২০১০ শিক্ষাবর্ষ থেকে বই ছাপার খরচ

দৈনিক আমাদের বার্তার অনুসন্ধানে জানা যায়, বিগত ১৫ বছরে (২০১০ থেকে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের) মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তক খাতে মুদ্রণ ও অন্যান্য ব্যয়ের পরিমাণ প্রায় ৯,০০০ কোটি টাকা দেখানো হয়েছে, जबकि প্রাথমিক স্তরের ব্যয় সোয়া ৩,০০০ কোটি টাকার মতো। এই সময়ের মধ্যে শিক্ষাক্রম পরিমার্জন ও উন্নয়ন, পাঠ্যপুস্তক উন্নয়ন, মূল্যায়ন ও শিক্ষক প্রশিক্ষণ, এবং ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক উন্নয়ন সংক্রান্ত ব্যয় দেখানো হয়েছে প্রায় ৩০ কোটি টাকা। মোট মিলিয়ে, প্রায় ১৩,০০০ কোটি টাকার মধ্যে প্রায় ৩,০০০ কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে।

ইংরেজি ভার্সনে অনিয়ম:

জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ প্রণয়ন কমিটির প্রধান অধ্যাপক কবীর চৌধুরী ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক শাহীন মাহবুবা। ২০২১ সালের নভেম্বরে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তাকে এনসিটিবির পাঠ্যবইয়ের ইংরেজি ভার্সন করার দায়িত্ব দেওয়া হতো। কবীর চৌধুরী নিজেই এর তদবির করতে এনসিটিবিতে যেতেন। বাস্তবে, শাহীন মাহবুবা তার ছাত্র ও তাদের ছাত্রদের দিয়ে নামমাত্র অনুবাদ করিয়ে দিতেন, ফলে ইংরেজি ভার্সন বইয়ের মান ছিল অত্যন্ত নিম্নমানের। এই খাতে গত কয়েক বছরে কোটি কোটি টাকার অনিয়ম হয়েছে।

টিআইবির অনুসন্ধান :

২০১৭ সালের ১৩ নভেম্বর ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) প্রকাশিত ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড: পাণ্ডুলিপি প্রণয়ন ও প্রকাশনা ব্যবস্থায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এনসিটিবির পাণ্ডুলিপি প্রণয়ন এবং পাঠ্যপুস্তক প্রকাশনা ও সরবরাহের ২০টি ধাপের মধ্যে ১৬টি ধাপে সুশাসনের ঘাটতি, রাজনৈতিক প্রভাব এবং অনিয়ম-দুর্নীতির উপস্থিতি রয়েছে। আইনবহির্ভূত সম্মানী গ্রহণসহ নানা অনিয়মের কারণে এনসিটিবিতে দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ ঘটে গেছে।

এনসিটিবি সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে টিআইবি দৈনিক শিক্ষাডটকম-এর কাছে থেকে তথ্য গ্রহণ করে, যা তাদের প্রতিবেদনেও কৃতজ্ঞতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

টিআইবির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, এনসিটিবির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন নিয়মিত কাজে এক হাজার টাকা থেকে শুরু করে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত সম্মানী গ্রহণ করেন। প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৭ সালে এ খাতে ব্যয় হয়েছিল ২৭ লাখ ৬০ হাজার ৫০০ টাকা, এবং ২০১৬ সালে এটি ছিল ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা। সর্বশেষ মহাহিসাব নিরীক্ষকের (সিএজি) নিরীক্ষায় এ বিষয়ে আপত্তি উঠলেও তা এখনো নিষ্পত্তি হয়নি।

সর্বশেষ অডিট প্রতিবেদন:

২০২৩ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যবইয়ের কাজে অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে বাংলাদেশ মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের অধীন শিক্ষা অডিট অধিদপ্তর। সংস্থাটি জানায়, এসব অনিয়মের কারণে সরকারের প্রায় ২৪৫ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। এছাড়াও, দেনদরবার, উপঢৌকন ও অযাচিত বিলের কারণে আরও ২৫ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।

অডিটে বলা হয়েছে, বই ছাপার কাজ মনিটরিংয়ের জন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৭৫ লাখ টাকা করে সম্মানী দেওয়া হয়েছিল, যদিও তাদের জন্য বরাদ্দ ছিল মাত্র ১৫ লাখ টাকা। টিএ-ডিএ হিসেবে আরও ২ লাখ টাকার মতো বরাদ্দ ছিল, কিন্তু এই টাকা তারা আত্মসাৎ করেছেন। এই পুরো কার্যক্রমের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এনসিটিবির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ফরহাদুল ইসলাম।

দৈনিক আমাদের বার্তার প্রশ্নের জবাবে ফরহাদুল বলেন, “শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ও তার ভাই ডাক্তার টিপু এবং এনসিটিবির তালিকাভুক্ত তথ্যজ্ঞ ননএমপিও বেসরকারি শিক্ষক রতন মজুমদার যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, আমি সেভাবেই কাজ করেছি। এটা না করলে আমরা চাকরি করতে পারতাম না।” তিনি দাবি করেন যে, তিনি কোনো আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে জড়িত নন।

প্রায় একই সুরে কথা বলেন এনসিটিবির সদ্যবিদায়ী সচিব মোসা নাজমা আখতার। তিনি দাবি করেন, দীপু মনির ভাইয়ের টেলিফোনিক নির্দেশের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। চাঁদপুরের অজগাঁয়ের ননএমপিও কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদারকে এনসিটিবিতে তথ্যজ্ঞ হিসেবে হঠাৎ নাজিল করা হয়েছিল এবং তার পেছনে লাখ লাখ টাকা ব্যয় করতে হয়েছে। তবে, চাঁদপুর থেকে রতনকে ঢাকায় এনে পাঁচ তারকা হোটেলে থাকা-খাওয়াসহ খরচের বেশিরভাগটাই দিয়েছেন কয়েকটি মুদ্রণ ও প্রকাশনা সংস্থা। এনসিটিবি খুব কম টাকা খরচ করেছে রতনের পেছনে।

এ বিষয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রিয়াজুল হাসান দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, “গত ১৫ বছরের বিভিন্ন অনিয়ম অনুসন্ধানে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি আর্থিক অনিয়ম বিষয়ে রিপোর্ট তৈরি করে প্রধান উপদেষ্টা ও শিক্ষা উপদেষ্টার দপ্তরে পৌঁছে দিতে।”

পলাতক ও কারাগারে থাকায় সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং তার সাবেক এপিএস মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈ, সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন ও জাকির হোসেন, শিক্ষা সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী এবং রতন কুমার মজুমদারের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সাবেক গণশিক্ষা সচিব এম এম নিয়াজউদ্দীন ও এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ন সাহা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্টফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

এনসিটিবির বিরুদ্ধে কী ধরনের অভিযোগ রয়েছে?

পাঠ্যপুস্তক খাতে দুর্নীতি, অনিয়ম এবং রাজনৈতিক প্রভাবের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।

কত টাকা লুটপাটের কথা বলা হচ্ছে?

প্রায় ৩ সহস্রাধিক কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে, যা গত ১৫ বছরে বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত হয়েছে।

কোন প্রতিষ্ঠান এই অভিযোগের তদন্ত করছে?

বাংলাদেশ মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের অধীন শিক্ষা অডিট অধিদপ্তর এবং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এ বিষয়ে তদন্ত করেছে।

এই অর্থের লুটপাটের ফলে সরকারের কি ক্ষতি হয়েছে?

সরকারের ২৪৫ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে, পাশাপাশি আরও ২৫ কোটি টাকা অযাচিত খরচের অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগে অভিযুক্তদের মধ্যে কে কে আছেন?

সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, নুরুল ইসলাম নাহিদ, সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন, শিক্ষা সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী এবং রতন কুমার মজুমদারসহ বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

উপসংহার

পাঠ্যপুস্তক খাতে আওয়ামী লীগের শাসনামলে ৩ সহস্রাধিক কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ গুরুতর দুর্নীতির চিত্র উন্মোচন করেছে। সরকারি অডিট ও আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো এই অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে, যা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত সময়ে পাঠ্যবই পায়নি এবং সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থের অপব্যয় ঘটেছে।

এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সুশাসন প্রতিষ্ঠা, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, যাতে শিক্ষার মান উন্নয়ন হয় এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়মের পুনরাবৃত্তি না ঘটে। শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতি রোধে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং জনসাধারণের অংশগ্রহণও গুরুত্বপূর্ণ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top