নামের কারণে এমপিও বঞ্চিত শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজ

নামের কারণে এমপিও বঞ্চিত শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজ

শুধু “জিয়াউর রহমান” নামের কারণে গত দেড় যুগ ধরে বঞ্চনার শিকার হয়েছেন যশোরের মহেশপুরের শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজের শিক্ষকরা। যদিও তারা যোগ্যতার সব শর্ত পূরণ করেছিলেন, কিন্তু কলেজটির নামের কারণে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া থেকে তাদের বঞ্চিত রেখেছে। এর ফলস্বরূপ, ১৮ বছর আগে ডিগ্রি সেকশনে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক ও কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে বেতন-ভাতা ছাড়াই মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাদের মতে, এ ধরনের বৈষম্য এবং অন্যায় তাদের উপর যে ক্ষতি করেছে, তা পুষিয়ে নিতে অবিলম্বে কলেজটির ডিগ্রি সেকশনকে এমপিওভুক্ত করতে হবে। পাশাপাশি, নিয়োগের তারিখ থেকে সমস্ত বকেয়া পরিশোধের দাবি জানিয়েছেন তারা।

জানা গেছে, ২০০০ সালে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার ফতেপুরে কালিগঞ্জ-জীবননগর মহাসড়ক সংলগ্ন স্থানে প্রতিষ্ঠিত হয় শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজ। শিক্ষায় পিছিয়ে পড়া এই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়াতে তৎকালীন বিএনপি সরকারের ঝিনাইদহ-৩ আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম মাস্টার কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন।

প্রতিষ্ঠার দুই বছর পর কলেজটির ইন্টারমিডিয়েট সেকশন এমপিওভুক্ত হয়। এরপর ২০০৫ সালের ১৩ জুলাই ডিগ্রি সেকশনের পাঠদানেও অধিভুক্তি হয়। তবে এর পরেই ক্ষমতার পালাবদল ঘটে। নতুন সরকারের পক্ষ থেকে কলেজটির নাম পরিবর্তনের জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা ব্যাপক চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। কিন্তু কলেজের শিক্ষকরা তাদের অবস্থানে অনড় থাকায় কলেজের নাম পরিবর্তন সম্ভব হয়নি। এরপর, নাম পরিবর্তন না হওয়ায় কলেজটিকে অকার্যকর করার পাঁয়তারা শুরু হয়।

আওয়ামী লীগ নেতারা ওই এলাকার ছাত্রছাত্রীদের শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হতে না দেওয়ার জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিতে শুরু করেন। এরপরও যারা ভর্তি হতে চেষ্টা করতেন, তাদের পরিবারকে নানা ধরনের হুমকি ও হেনস্তার শিকার হতে হতো। এমপিও আবেদনের জন্য বছরের পর বছর ধরে স্থানীয় আওয়ামী সংসদ সদস্যের কাছে দৌড়ালেও কখনও ডিও লেটার মেলেনি। ফলস্বরূপ, দীর্ঘ ১৮ বছর কলেজটির জন্য কোনো প্রকার সরকারি অনুদান বা সাহায্য পায়নি।

চার একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এই স্বনামধন্য কলেজটি ছিল বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। ১৮ বছর আগে যারা শিক্ষকের মতো মহৎ পেশায় নিযুক্ত হয়ে শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজের সঙ্গে নিজেদের নাম যুক্ত করেছিলেন, তাদের ভাগ্য আজও পরিবর্তিত হয়নি। ওই শিক্ষকরা এখনও বেতন-ভাতাবিহীন, মানবেতর জীবনযাপন করছেন, এবং তাদের দুর্দশা কোনওভাবেই শেষ হচ্ছে না।

এই শিক্ষকরা দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারী হওয়া সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে সমাজের কাছে অসম্মানিত। দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে অনাহারে-অর্ধাহারে জীবন কাটানো এসব শিক্ষকদের দাবি, তাদের সঙ্গে যে অন্যায় করা হয়েছে, তার সঠিক ক্ষতিপূরণ ও স্বীকৃতি দেওয়া হোক। চাকরির বয়স শেষের দিকে আসা এসব শিক্ষকরা জানাচ্ছেন, তারা তাদের হারানো সম্মান পুনরুদ্ধার করতে এবং দীর্ঘদিনের আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চান। তারা দাবি করছেন, তাদের ডিগ্রি পর্যায়ে এমপিওভুক্ত করা হোক এবং শিক্ষক হিসেবে যোগদানের তারিখ থেকে সমস্ত বকেয়া পরিশোধের ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

এই শিক্ষকরা দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারী হওয়া সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে সমাজের কাছে অসম্মানিত। দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে অনাহারে-অর্ধাহারে জীবন কাটানো এসব শিক্ষকদের দাবি, তাদের সঙ্গে যে অন্যায় করা হয়েছে, তার সঠিক ক্ষতিপূরণ ও স্বীকৃতি দেওয়া হোক। চাকরির বয়স শেষের দিকে আসা এসব শিক্ষকরা জানাচ্ছেন, তারা তাদের হারানো সম্মান পুনরুদ্ধার করতে এবং দীর্ঘদিনের আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চান। তারা দাবি করছেন, তাদের ডিগ্রি পর্যায়ে এমপিওভুক্ত করা হোক এবং শিক্ষক হিসেবে যোগদানের তারিখ থেকে সমস্ত বকেয়া পরিশোধের ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজের এমপিও বঞ্চনার কারণ কী?

শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজের এমপিও বঞ্চনার প্রধান কারণ হলো কলেজটির নামের সাথে সম্পর্কিত রাজনৈতিক প্রভাব। কলেজটির নামের কারণে, বিশেষত স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের চাপের কারণে, বিগত সরকার এটি এমপিওভুক্ত করতে অস্বীকৃতি জানায়। এতে কলেজের শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে বেতন-ভাতা এবং সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

কবে থেকে শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজের শিক্ষকরা এমপিও সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন?

শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজের শিক্ষকরা ২০০৩ সাল থেকে, যখন কলেজের ডিগ্রি সেকশন চালু হয়, তৎকালীন সরকারের দ্বারা এমপিওভুক্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ১৮ বছর ধরে, কলেজটির নামের কারণে তারা বেতন-ভাতা এবং অন্যান্য সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত আছেন।

এই কলেজের শিক্ষকরা বর্তমানে কী পরিস্থিতিতে আছেন?

দীর্ঘ ২১ বছর ধরে শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজের শিক্ষকরা বেতন-ভাতা ছাড়াই কাজ করছেন। তাদের আর্থিক ও সামাজিক অবস্থান অত্যন্ত কঠিন, এবং তারা তাদের অবিচারের জন্য ক্ষতিপূরণের দাবি করছেন। এছাড়া, তারা এমপিওভুক্তির মাধ্যমে তাদের সঠিক অধিকার দাবি করছেন।

এই কলেজের শিক্ষকরা এমপিও পাওয়ার জন্য কী পদক্ষেপ নিয়েছেন?

শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সরকারি ও রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের দাবি উত্থাপন করেছেন। তারা একাধিকবার প্রতিবাদ সভা, মানববন্ধন ও প্রশাসনিক দপ্তরে আবেদন করেছেন, যাতে তাদের এমপিওভুক্তি এবং বকেয়া পরিশোধের বিষয়টি দ্রুত বাস্তবায়িত হয়।

এই কলেজের ভবিষ্যৎ কী হতে পারে, যদি এমপিও প্রদানের দাবি পূর্ণ হয়?

যদি শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজ এমপিওভুক্তি পায়, তবে শিক্ষকরা ন্যায্য বেতন ও সরকারি সুবিধা পেয়ে তাদের কাজের প্রতি আরও দায়বদ্ধতা এবং নিষ্ঠা প্রদর্শন করবেন। এর ফলে কলেজের শিক্ষার মান উন্নয়ন হবে এবং ছাত্রছাত্রীদের উপকার হবে। পাশাপাশি, কলেজটির জাতীয়করণের মাধ্যমে তার হারানো গৌরব পুনরুদ্ধার হতে পারে।

উপসংহার

শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজের শিক্ষকরা দীর্ঘ ২১ বছর ধরে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত, শুধুমাত্র কলেজটির নামের কারণে। তাদের এই বৈষম্য ও দুর্দশা চরম অন্যায় এবং এর সুষ্ঠু সমাধান একান্ত প্রয়োজন। এমপিওভুক্তি না হওয়ায় এই কলেজের শিক্ষকরা শুধু আর্থিক দিক থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন না, বরং তাদের সম্মান ও মর্যাদাও ক্ষুণ্ন হয়েছে।

শিক্ষক সমাজের এই দীর্ঘ সংগ্রাম ও প্রতিবাদ প্রমাণ করে যে, তাঁদের কাছে স্বীকৃতি ও সম্মান পেতে শুধু যোগ্যতা নয়, আইন ও ন্যায়ের শাসনও গুরুত্বপূর্ণ। কলেজটি এমপিওভুক্ত হলে শুধু শিক্ষকরা তাদের হারানো মর্যাদা ফিরে পাবেন না, বরং শিক্ষার মান উন্নয়নেও তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। অতএব, সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে এই শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির প্রতি সম্মান জানানো উচিত এবং তাদের অবিচার পূর্ণভাবে সংশোধন করতে হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top