জাতীয় পতাকা হাতে আকাশ থেকে ঝাঁপ দিয়ে তারা এক অনন্য ইতিহাসের সাক্ষী হন। বিশ্বের বুকে সর্বাধিক সংখ্যক পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিংয়ের নতুন রেকর্ড গড়ে ওঠে এই অভিযানের মাধ্যমে। এতে অংশ নেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিকুর রহমানসহ সশস্ত্র বাহিনীর ৫৩ জন সদস্য।

মহান বিজয় দিবসের ৫৪তম বার্ষিকী উপলক্ষে ‘টিম বাংলাদেশ’-এর ৫৪ জন প্যারাট্রুপার একযোগে জাতীয় পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিং করে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার পর জাতীয় পতাকা হাতে আকাশ থেকে ঝাঁপ দিয়ে তারা এই ঐতিহাসিক কীর্তি স্থাপন করেন। এটি বিশ্বের সর্বাধিক সংখ্যক পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিংয়ের রেকর্ড। অভিযানে অংশ নেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিকুর রহমানসহ সশস্ত্র বাহিনীর ৫৩ জন সদস্য। এখন পর্যন্ত এটিই সর্বোচ্চ সংখ্যক পতাকাসহ ফ্রি ফল জাম্প, যা Guinness World Records-এ অন্তর্ভুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের সক্ষমতা ও দক্ষতার পরিচয় তুলে ধরছে এবং দেশ-বিদেশে জাতীয় গৌরব ও আত্মপরিচয়ের অনুভূতি আরও দৃঢ় করবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস। এছাড়া প্রধান বিচারপতি, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যবৃন্দ, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিদেশি কূটনীতিকগণ, সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানগণ, ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাগণ, মহান মুক্তিযুদ্ধের বীরশ্রেষ্ঠদের উত্তরাধিকারীগণ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, বিএনসিসি ক্যাডেটসহ নানা শ্রেণি-পেশার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়।
এদিকে বিজয় দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম, খুলনা, মোংলা ও পায়রা বন্দর, ঢাকার সদরঘাট, পাগলা (নারায়ণগঞ্জ) এবং বরিশালসহ বিভিন্ন বিআইডব্লিউটিসি ঘাটে নৌবাহিনীর জাহাজ দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। পাশাপাশি সামরিক জাদুঘরসহ অন্যান্য বাহিনীর জাদুঘর বিনা টিকিটে সাধারণ দর্শকদের জন্য খোলা রাখা হয়েছে।
এছাড়া মহান বিজয় দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম, খুলনা, মোংলা ও পায়রা বন্দর, ঢাকার সদরঘাট, পাগলা (নারায়ণগঞ্জ) এবং বরিশালসহ বিভিন্ন বিআইডব্লিউটিসি ঘাটে নৌবাহিনীর জাহাজ দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। একই সঙ্গে সামরিক জাদুঘরসহ অন্যান্য বাহিনীর জাদুঘর বিনা টিকিটে দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
এই আয়োজন দেশের নাগরিকদের মধ্যে জাতীয় গৌরব, দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আরও উজ্জীবিত করেছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের সক্ষমতা, শৃঙ্খলা ও ঐতিহ্যের শক্তিশালী বার্তা পৌঁছে দিয়েছে।

টি সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর
কোন উপলক্ষে এই বিশ্ব রেকর্ডটি গড়া হয়?
মহান বিজয় দিবসের ৫৪তম বার্ষিকী উপলক্ষে এই ব্যতিক্রমী প্যারাট্রুপিং আয়োজন করা হয়।
মোট কতজন প্যারাট্রুপার এই অভিযানে অংশ নেন?
‘টিম বাংলাদেশ’-এর মোট ৫৪ জন প্যারাট্রুপার একযোগে জাতীয় পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিং করেন।
এই রেকর্ডের বিশেষত্ব কী?
এটি বিশ্বের সর্বাধিক সংখ্যক জাতীয় পতাকা হাতে ফ্রি ফল প্যারাস্যুটিংয়ের রেকর্ড, যা একটি অনন্য বৈশ্বিক অর্জন।
অভিযানে কারা কারা অংশগ্রহণ করেন?
অভিযানে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিকুর রহমানসহ সশস্ত্র বাহিনীর ৫৩ জন সদস্য অংশ নেন।
এই রেকর্ডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি কী অবস্থায় রয়েছে?
রেকর্ডটি Guinness World Records-এ অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং যাচাই শেষে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পাওয়ার অপেক্ষায় আছে।
উপসংহার
মহান বিজয় দিবসের তাৎপর্যকে নতুন মাত্রায় তুলে ধরে জাতীয় পতাকা হাতে ৫৪ জন প্যারাট্রুপারের এই প্যারাস্যুটিং অভিযান বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হয়ে থাকবে। এটি কেবল একটি বিশ্ব রেকর্ডই নয়, বরং দেশের শৃঙ্খলা, সক্ষমতা ও ঐক্যের প্রতীক। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি সুদৃঢ় করার পাশাপাশি এই উদ্যোগ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মাঝে দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আরও দৃঢ়ভাবে প্রোথিত করবে।





