বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ.কে.এম. রাশিদুল আলম বলেন, “আটককৃত যুবককে ইতোমধ্যে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে। হল প্রশাসন অভিযুক্ত নারী শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে এবং তার নিরাপত্তার স্বার্থে তাকে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুততম সময়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নওয়াব ফয়জুন্নেসা ছাত্রী হলের একটি কক্ষ থেকে এক বহিরাগত যুবককে আটক করেছে হল প্রশাসন। শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে আটক করা হয় এবং রাত পৌনে ২টার দিকে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। ঘটনার প্রেক্ষিতে, সংশ্লিষ্ট কক্ষের ছাত্রীকে সাময়িক বহিষ্কার করে পরিবারের জিম্মায় দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ.কে.এম. রাশিদুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আটককৃত যুবকের নাম আশরাফুল ইসলাম পারভেজ ওরফে যাযাবর পারভেজ (৩১)। তার বাড়ি চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকার ডাবলমুরিং থানায়।
শিক্ষার্থীরা জানান, শনিবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে প্রথম বর্ষের (৫২তম ব্যাচ) এক ছাত্রীর সঙ্গে প্লাজু, প্যান্ট এবং মুখে ঘোমটা দিয়ে হলে প্রবেশ করেন ওই যুবক। তার পোশাক এবং হাঁটার ধরন সন্দেহজনক মনে হলে হলের কয়েকজন ছাত্রী বিষয়টি লক্ষ্য করেন। পরে তারা হল সুপারকে ঘটনাটি জানান।
হল সুপার ওই ছাত্রীর কক্ষে গিয়ে যুবককে দেখতে পান। এরপর হল কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীরা ওই যুবক এবং ছাত্রীকে আটক করেন। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরে রাত পৌনে ২টার দিকে আটক যুবককে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
এ বিষয়ে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের সুপার নাদিয়া সুলতানা বলেন, “হলের মেয়েরা ওই ছাত্রীর কক্ষে কোনো পুরুষের উপস্থিতি টের পেয়ে আমাকে জানালে আমি দ্রুত একজন নারী কর্মচারীকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যাই। দরজা খোলার পর ওই যুবককে কক্ষে দেখতে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে হল প্রাধ্যক্ষকে বিষয়টি জানাই।”
এদিকে, ছাত্রীদের হলের নিরাপত্তা জোরদার এবং হলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। শনিবার রাত দেড়টার দিকে বটতলা এলাকা থেকে শুরু হওয়া মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হবে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ.কে.এম. রাশিদুল আলম বলেন, “আটক যুবককে ইতোমধ্যে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। হল প্রশাসন অভিযুক্ত নারী শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে এবং তার নিরাপত্তার জন্য তাকে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুততম সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
কী ঘটেছিল?
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব ফয়জুন্নেসা ছাত্রী হলে এক যুবক নারী সেজে প্রবেশ করেন। পরে প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী তাকে নিজের কক্ষে নিয়ে গেলে ঘটনাটি প্রকাশ পায়।
যুবককে কীভাবে ধরা হয়?
হলের ছাত্রীদের সন্দেহ হয় যুবকের হাঁটার ধরন ও পোশাক দেখে। তারা বিষয়টি হল সুপারকে জানালে সুপার নিজে কক্ষে গিয়ে যুবককে আটক করেন।
যুবকের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?
হল কর্তৃপক্ষ যুবককে আটক করে আশুলিয়া থানায় সোপর্দ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ছাত্রীটির বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?
অভিযুক্ত ছাত্রীকে হল প্রশাসন সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে এবং তার নিরাপত্তার জন্য পরিবারের জিম্মায় দিয়েছে।
নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে?
হল কর্তৃপক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে শৃঙ্খলা ভঙ্গের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
উপসংহার
ঘটনাটি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি এবং শৃঙ্খলা রক্ষার চ্যালেঞ্জকে সামনে নিয়ে এসেছে। প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে যুবককে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছে এবং অভিযুক্ত ছাত্রীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে। একই সঙ্গে, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনা হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের জন্য ভবিষ্যতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কঠোর করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।