শিক্ষকদের দাবি, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, শতভাগ উৎসব ভাতা এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জাতীয়করণের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। তারা স্পষ্ট করেছেন যে, প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন এবং ঘরে ফিরবেন না।

এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জাতীয়করণ, শতভাগ উৎসব ভাতা, এবং সরকারি কর্মচারীদের সমপরিমাণ বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতার দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারীরা বিক্ষোভ মিছিল করছেন। তারা জানিয়েছেন, আগামী মঙ্গলবার তারা সপরিবারে “মার্চ টু সেক্রেটারিয়েট” কর্মসূচি পালন করবেন।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে তারা প্রতীকী অনশন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন এবং দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনরত শিক্ষকদের শিক্ষা ভবন অভিমুখে পদযাত্রা করতে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পরবর্তীতে আট সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল আলোচনা করতে সচিবালয়ে যান। তবে, সচিবালয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় শিক্ষকরা প্রতীকী অনশন কর্মসূচির ঘোষণা দেন এবং নতুন আন্দোলন কর্মসূচি গ্রহণ করেন।
শিক্ষকরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, শতভাগ উৎসব ভাতা এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জাতীয়করণের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন এবং ঘরে ফিরবেন না।
সংগঠনটির যুগ্ম সদস্য সচিব আবুল বাসার দৈনিক আমাদের বার্তা-কে জানান, “মার্চ টু যমুনা” কর্মসূচিতে পুলিশের বাধার প্রতিবাদে জাতীয়করণের দাবিতে শিক্ষকরা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক সমাবেশের আয়োজন করবেন। ওই সমাবেশে তারা পরবর্তী কর্মসূচির ঘোষণা দেবেন। এছাড়া, দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন ও কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।
শিক্ষকরা দৃঢ়ভাবে জানান, সরকারের পক্ষ থেকে তাদের দাবি মেনে নেওয়ার সুস্পষ্ট ঘোষণা না পাওয়া পর্যন্ত তারা জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণ ছেড়ে যাবেন না। তারা সরকারকে দ্রুত দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান। পাশাপাশি, দেশের সকল এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের এই আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে প্রেস ক্লাবের কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।
শিক্ষকরা কেন জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলন করছেন?
শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পূর্ণাঙ্গ জাতীয়করণের দাবি জানিয়ে আসছেন। তাদের দাবি, সরকারি কর্মচারীদের মতো একই হারে বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা ও শতভাগ উৎসব ভাতা প্রদান করা হোক এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সম্পূর্ণরূপে সরকারি করা হোক।
শিক্ষকদের বিক্ষোভ মিছিল কোথায় অনুষ্ঠিত হয়েছে?
শিক্ষকরা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রতীকী অনশন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন এবং সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। এছাড়া, তারা সচিবালয় অভিমুখে পদযাত্রারও পরিকল্পনা করেছিলেন, যেখানে পুলিশ বাধা দেয়।
আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি কী?
শিক্ষকরা ঘোষণা দিয়েছেন যে, তারা “মার্চ টু সেক্রেটারিয়েট” কর্মসূচি পালন করবেন এবং জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করবেন। সেখানে তারা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন এবং দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন ও কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন।
সরকারের সঙ্গে শিক্ষকদের কোনো আলোচনা হয়েছে কি?
হ্যাঁ, আন্দোলনরত শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধিদল সচিবালয়ে গিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছে। তবে, সেই আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় শিক্ষকরা নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন এবং আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
শিক্ষকরা সরকারের কাছে কী আহ্বান জানিয়েছেন?
শিক্ষকরা সরকারকে তাদের দাবি দ্রুত মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। একইসঙ্গে, তারা সকল এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের এই আন্দোলনে যোগ দেওয়ার অনুরোধ করেছেন এবং স্পষ্ট করেছেন যে, সরকার দাবির বিষয়ে সুস্পষ্ট ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত তারা প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণ ছেড়ে যাবেন না।
উপসংহার
জাতীয়করণের দাবিতে শিক্ষকদের চলমান আন্দোলন দেশের শিক্ষাখাতের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। শিক্ষকরা মনে করছেন, তাদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্পূর্ণরূপে সরকারি করা দরকার। সরকারি কর্মচারীদের মতো সমান সুবিধা পাওয়ার দাবিতে তারা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন এবং সরকারকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে, তাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন এবং নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। সরকারের দায়িত্ব শিক্ষকদের এই ন্যায়সঙ্গত দাবির প্রতি যথাযথ গুরুত্ব প্রদান করা এবং একটি কার্যকর সমাধানের মাধ্যমে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে আরও উন্নত ও স্থিতিশীল করা।




