এক মাদরাসার দুই জাল শিক্ষকের এমপিও বাতিল

এক মাদরাসার দুই জাল শিক্ষকের এমপিও বাতিল

তাদের বেতন ও ভাতা বাবদ প্রাপ্ত অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করে প্রয়োজনীয় প্রমাণসহ সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে প্রেরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এনটিআরসিএ সনদ ও সুপারিশপত্র জাল প্রমাণিত হওয়ায় গাজীপুর জেলার কাপাসিয়ার বড়হর আ. মজিদ মোল্লা বালিকা দাখিল মাদ্রাসার দুই সহকারী শিক্ষক—ছালমা খাতুন ও তাহমিনা আক্তারের এমপিও বাতিল করা হয়েছে।

মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর ২০ মে (মঙ্গলবার) জারিকৃত এক চিঠিতে এ সিদ্ধান্ত জানায়। চিঠিটি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধান বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।

এনটিআরসিএ কর্তৃক প্রেরিত প্রতিবেদনে উল্লিখিত দুই শিক্ষকের সনদ ও সুপারিশপত্র জাল এবং ভুয়া হিসেবে চিহ্নিত হয়। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (মাদরাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ (২৩ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত সংশোধিত) এর ১৮.১ (গ) ও (ঙ) উপধারা অনুসারে এমপিও বাছাই ও অনুমোদন কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের এমপিও বাতিল করা হয়েছে।

একই সঙ্গে তাদের বেতন ও ভাতা বাবদ উত্তোলিত অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করে প্রয়োজনীয় প্রমাণসহ অধিদপ্তরে প্রেরণের দায়িত্ব প্রতিষ্ঠান প্রধানকে অর্পণ করা হয়েছে।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ বা অর্থ ফেরতের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের শৈথিল্য প্রদর্শন করলে তার সম্পূর্ণ দায়ভার প্রতিষ্ঠান প্রধানকে বহন করতে হবে।

চিঠিতে মাদরাসা প্রধানকে সতর্ক করে বলা হয়েছে যে, আইন অনুযায়ী যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং উত্তোলিত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার বিষয়ে কোনো ধরনের গড়িমসি বা শৈথিল্য দেখা গেলে তার সম্পূর্ণ দায়ভার প্রতিষ্ঠান প্রধানকে বহন করতে হবে।

এছাড়া ভবিষ্যতে এ ধরনের জাল সনদ ও সুপারিশপত্র সংযুক্ত করে কোনো আবেদন প্রেরণ করা হলে, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধানের বিরুদ্ধেও প্রযোজ্য বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন

কোন দুই শিক্ষকের এমপিও বাতিল করা হয়েছে?

গাজীপুর জেলার কাপাসিয়ার বড়হর আ. মজিদ মোল্লা বালিকা দাখিল মাদরাসার দুই সহকারী শিক্ষক ছালমা খাতুন ও তাহমিনা আক্তারের এমপিও বাতিল করা হয়েছে।

কেন তাদের এমপিও বাতিল করা হয়েছে?

এনটিআরসিএ কর্তৃক প্রেরিত প্রতিবেদনে তাদের এনটিআরসিএ সনদ ও সুপারিশপত্র জাল ও ভুয়া হিসেবে প্রমাণিত হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

তাদের বিরুদ্ধে আর কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?

তাদের উত্তোলিত বেতন ও ভাতা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধানকে ফৌজদারি মামলা দায়ের করে প্রমাণসহ মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রেরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রতিষ্ঠান প্রধানের দায়িত্ব কীভাবে নির্ধারিত হয়েছে?

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ বা অর্থ ফেরতের ক্ষেত্রে কোনো শৈথিল্য দেখালে তার সম্পূর্ণ দায়ভার প্রতিষ্ঠান প্রধানকে বহন করতে হবে।

ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটলে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে?

ভবিষ্যতে কোনো জাল সনদ বা ভুয়া সুপারিশপত্রযুক্ত আবেদন প্রাপ্ত হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধানের বিরুদ্ধেও বিধি মোতাবেক কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপসংহার

এনটিআরসিএর প্রতিবেদন অনুযায়ী জাল সনদ ও সুপারিশপত্র ব্যবহার করে এমপিওভুক্ত হওয়া দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে গৃহীত এই ব্যবস্থা শিক্ষা প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এ ধরনের প্রতারণা দমন ও প্রতিরোধে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তরসমূহের কঠোর অবস্থান ভবিষ্যতে অনিয়ম রোধে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের দায়িত্ব ও সচেতনতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি, যাতে জালিয়াতির সুযোগ কমে এবং শিক্ষাক্ষেত্রে নৈতিকতা বজায় থাকে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top