বিদায়ী বছরের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ইএফটি পাইলটিং বিষয়ক কর্মশালায় ১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এ কার্যক্রমের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই (ভেলিডেশন) প্রক্রিয়ার জন্য টিইএমআইএস সফটওয়্যার প্ল্যাটফর্মে প্রয়োজনীয় এনভায়রনমেন্ট (পরিবেশ) তৈরি করা হয়েছে।

কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে আইবাস ডাবল প্লাস সফটওয়্যারে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) এর মাধ্যমে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদান ব্যবস্থা চালু করতে পরীক্ষামূলকভাবে ১১টি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ২০২৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একটি কর্মশালায়। পরবর্তীতে ১৭ জুলাই (বুধবার) প্রকাশিত চিঠিতে এই তথ্য জানানো হয়।
তথ্য জমা ও যাচাই সংক্রান্ত নির্দেশনা:
সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের মৌলিক তথ্য ৯ থেকে ১১ জানুয়ারির মধ্যে টেকনিক্যাল এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (টিইএমআইএস) সফটওয়্যারে আপলোড করতে হবে।
প্রতিষ্ঠান প্রধান ও পরিচালনা পর্ষদের সভাপতিদের কাছে তথ্য আপলোড সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।
১৩ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নির্ধারিত হার্ডকপি ডকুমেন্টস আঞ্চলিক পরিচালকের কার্যালয়ে জমা দিতে হবে।
তথ্য এন্ট্রির সময় অনুসরণযোগ্য নির্দেশনা:
এনআইডি নম্বর ১০ বা ১৭ ডিজিটের হতে হবে (১৩ ডিজিট থাকলে জন্মবছরের ৪টি সংখ্যা যুক্ত করতে হবে)।
নাম, জন্মতারিখ ও মোবাইল নম্বর জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী সঠিকভাবে দিতে হবে।
ব্যাংক হিসাব নম্বর ১৩-১৭ ডিজিট এবং নাম ইংরেজি বড় হাতের অক্ষরে দিতে হবে (বিশেষ চিহ্ন ব্যবহার নিষিদ্ধ)।
বর্তমান যে ব্যাংক ও শাখায় এমপিওর টাকা জমা হয়, সেই শাখার রাউটিং নম্বর ও অ্যাকাউন্ট নম্বর দিতে হবে।
এই পাইলট প্রকল্প সফল হলে পরবর্তীতে আরও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এ পদ্ধতির আওতায় আনা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
ইএফটি পাইলটিং প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিচের কাগজপত্রসমূহ আঞ্চলিক পরিচালকের কার্যালয়ে জমা দিতে হবে:
প্রতিষ্ঠানের সর্বশেষ এমপিও কপি।
প্রতিষ্ঠানের রিপোর্ট — টিইএমআইএস সফটওয়্যার থেকে ডাউনলোডকৃত, কর্মরত সব শিক্ষক-কর্মচারীর স্বাক্ষরসহ।
পৃথক শিক্ষক/কর্মচারীর তথ্য রিপোর্ট — টিইএমআইএস থেকে ডাউনলোড করা, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান প্রধানের স্বাক্ষরসহ।
জাতীয় পরিচয়পত্রের (NID) ফটোকপি — প্রত্যেক শিক্ষক/কর্মচারীর, প্রতিষ্ঠান প্রধান কর্তৃক সত্যায়িত।
ব্যাংক চেক বইয়ের কভার পাতার ফটোকপি — প্রত্যেক শিক্ষক/কর্মচারীর, প্রতিষ্ঠান প্রধান কর্তৃক সত্যায়িত।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
ইএফটি (EFT) কী এবং কেন এটি চালু করা হচ্ছে?
ইএফটি (Electronic Fund Transfer) একটি আধুনিক ডিজিটাল পদ্ধতি, যার মাধ্যমে সরকারি বেতন-ভাতা সরাসরি শিক্ষকদের ব্যাংক হিসাব নম্বরে পাঠানো হয়। এটি স্বচ্ছতা, গতিশীলতা ও সময় সাশ্রয়ের জন্য চালু করা হচ্ছে।
কারা এই পাইলট প্রকল্পের আওতায় আছেন?
পরীক্ষামূলকভাবে ১১টি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের এই ইএফটি পদ্ধতির আওতায় আনা হচ্ছে।
তথ্য জমা দেয়ার শেষ সময় কখন?
প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীদের মৌলিক তথ্য ৯ থেকে ১১ জানুয়ারির মধ্যে টিইএমআইএস সফটওয়্যারে আপলোড করতে হবে।
কী কী তথ্য ও কাগজপত্র জমা দিতে হবে?
জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, ব্যাংক হিসাব নম্বর ও চেক কভারের ফটোকপি, টিইএমআইএস থেকে ডাউনলোড করা রিপোর্ট, এবং সর্বশেষ এমপিও কপি—সব কাগজপত্র সত্যায়িত করে জমা দিতে হবে।
টিইএমআইএস সফটওয়্যার কী কাজে ব্যবহৃত হয়?
টিইএমআইএস (Technical Education Management Information System) হলো একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, যার মাধ্যমে শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণ ও যাচাই-বাছাই করা হয়।
উপসংহার
কারিগরি শিক্ষকদের বেতন-ভাতা ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রদান নিশ্চিত করতে ইএফটি (ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার) একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। পরীক্ষামূলকভাবে ১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এই পাইলট প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করে টিইএমআইএস সফটওয়্যারের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ ও যাচাইয়ের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সঠিক তথ্য ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়ার মাধ্যমে ভবিষ্যতে এ কার্যক্রম সফলভাবে দেশব্যাপী বিস্তারের ভিত্তি তৈরি হবে। এটি শিক্ষক-প্রশাসনের মধ্যে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার একটি যুগোপযোগী উদ্যোগ।