আবারো চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে তালা দিলেন এইচএসসিতে ফেল করা শিক্ষার্থীরা

আবারো চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে তালা দিলেন এইচএসসিতে ফেল করা শিক্ষার্থীরা

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করছেন এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ফেল করা শিক্ষার্থীরা। তারা পাস করানোর এক দফা দাবিতে সোমবার (২১ অক্টোবর) বেলা দুইটার দিকে বোর্ডে অবস্থান নিয়ে ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন।

১৫ অক্টোবর এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। চট্টগ্রামে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৬ হাজার ২৯৮ জন, যাদের মধ্যে ১ লাখ ৫ হাজার ৪১৬ জন উপস্থিত ছিলেন এবং ৭৪ হাজার ১২৫ জন পাস করেছেন। পাসের হার দাঁড়িয়েছে ৭০.৭২ শতাংশ। ফেল করার জন্য শিক্ষার্থীরা ‘সাবজেক্ট ম্যাপিং’ পদ্ধতিকে দায়ী করছেন। ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে গতকাল রোববার বেলা ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত তারা বোর্ড চত্বরে বিক্ষোভ করেন। আজ সোমবার বেলা দুইটার দিকে আবারও বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেন এবং শুরুতেই মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। বর্তমানে ফটকে তালা ঝুলছে।

অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’ ও ‘আবু সাঈদের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’—এ ধরনের নানা স্লোগান দিতে থাকেন। তারা জানান, ফলাফলে তারা সন্তুষ্ট নন এবং তাদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। তাদের দাবি, উত্তরপত্র যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি এবং সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের নামে বৈষম্য করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবি, সকল বিষয়ে পাস করিয়ে দিতে হবে।

এক শিক্ষার্থী বলেন, গত বৃহস্পতিবার বোর্ড চেয়ারম্যান রেজাউল করিমের কাছে এক দফা দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল এবং দ্রুত দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান। না হলে আন্দোলন চলতে থাকবে।

বোর্ড চেয়ারম্যান রেজাউল করিম প্রথম আলোকে জানান, ফলাফল যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তৈরি করা হয়েছে এবং এখানে বৈষম্যের সুযোগ নেই। শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে এবং তারা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আলোচনা হয়েছে।

কেন এইচএসসি ফেল করা শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে তালা দিলেন?

তারা পাস করার দাবি নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। ফলাফলে সন্তুষ্ট না হওয়ার কারণে এবং ‘সাবজেক্ট ম্যাপিং’ পদ্ধতির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন।

তাদের প্রধান দাবি কি?

শিক্ষার্থীরা সকল বিষয়ে পাস করার দাবি করেছেন এবং তাদের অবমূল্যায়নের অভিযোগ তুলেছেন।

এটি কবে শুরু হয়েছে?

২১ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ থেকে তাদের বিক্ষোভ চলমান, যা ২০ অক্টোবরের একটি স্মারকলিপির পরবর্তী ধাপ।

শিক্ষকরা বা বোর্ড কতটা সহযোগিতা করছে?

বোর্ড চেয়ারম্যান রেজাউল করিম জানিয়েছেন, ফলাফল যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তৈরি করা হয়েছে এবং দাবিগুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

বিক্ষোভ চলাকালীন পরিস্থিতি কেমন?

শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করছেন, তবে তারা তালা ঝুলিয়ে রাখার কারণে বোর্ডের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের পিছনে কোন কারণগুলি রয়েছে?

তারা মনে করছেন, উত্তরপত্র যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি এবং সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের কারণে বৈষম্য হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের পরবর্তী পদক্ষেপ কি?

তারা দ্রুত এক দফা দাবি মেনে না নেওয়া হলে আন্দোলন অব্যাহত রাখার হুমকি দিয়েছেন।

উপসংহার

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসি ফেল করা শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ একটি গুরুতর ইস্যু তুলে ধরেছে, যেখানে তারা ফলাফলের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছেন। শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন যে তাদের উত্তরপত্র সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি এবং ‘সাবজেক্ট ম্যাপিং’ পদ্ধতি তাদের প্রতি অবিচার করেছে। বোর্ড কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের অভিযোগের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা শুরু করেছে, যা ভবিষ্যতে শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন এবং ছাত্রদের অধিকারের সুরক্ষায় সহায়ক হতে পারে। এই পরিস্থিতি আরও সমাধানের পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য শিক্ষাবিদ, কর্তৃপক্ষ এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি স্বাস্থ্যকর সংলাপ প্রয়োজন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top