“চিকিৎসা পেশা একটি মহান এবং মানবসেবামূলক ক্ষেত্র। এই পেশার মাধ্যমে মানুষের সেবা করার বিরল সুযোগ সৃষ্টি হয়। তোমাদের মেধা, নিষ্ঠা ও মানবিক মূল্যবোধের মাধ্যমে দেশের ও জাতির চাহিদা পূরণে তোমরা অবশ্যই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে।”

রাজধানীর আদ্-দ্বীন ফাউন্ডেশন পরিচালিত আদ্-দ্বীন উইমেন্স মেডিক্যাল কলেজে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন এমবিবিএস শিক্ষার্থীদের জন্য ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) সকালে কলেজ কর্তৃপক্ষ নবাগত শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়।
সকাল সাড়ে ৯টায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে (জুম প্ল্যাটফর্মে) দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের নবীন শিক্ষার্থীদের জন্য একযোগে এ ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।
ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে আদ্-দ্বীন মেডিক্যাল কলেজের ব্যারিস্টার রফিক-উল হক অডিটোরিয়ামে আয়োজন করা হয় এক আনুষ্ঠানিক আলোচনা সভার। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আদ্-দ্বীন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. শেখ মহিউদ্দিন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আদ্-দ্বীন ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. আনোয়ার হোসেন মুন্সী। অনুষ্ঠানে নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন আদ্-দ্বীন উইমেন্স মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মাহমুদা হাসান। এসময় কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মাজহারুল ইসলামসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শেখ মহিউদ্দিন বলেন, “ডাক্তারি একটি মহান পেশা। এর মাধ্যমে মানুষকে সরাসরি সেবা করার সুযোগ তৈরি হয়। তোমাদের মেধা, মনন ও মূল্যবোধ দিয়ে দেশ ও জাতির চাহিদা পূরণে তোমরা মানবিক হয়ে উঠবে—এটাই প্রত্যাশা। তাই কোনোভাবেই সময় অপচয় করা যাবে না। হৃদয় দিয়ে পাঠ গ্রহণ করতে হবে। ভালো চিকিৎসক হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। মনে রাখবে, মানবসেবার মধ্যেই সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি নিহিত। যারা মানুষের প্রিয়, তারাই প্রকৃত অর্থে আল্লাহরও প্রিয়।”

২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে আদ্-দ্বীন উইমেন্স মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছেন মোট ১০০ জন ছাত্রী। এর মধ্যে ৭৪ জন দেশি ও ২৬ জন বিদেশি শিক্ষার্থী। নবীনদের আগমন উপলক্ষ্যে কলেজ প্রাঙ্গণ সেজে ওঠে বর্ণিল সাজে—রং-বেরঙের বেলুন, ফুল ও ফেস্টুনে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো ক্যাম্পাস।
নবাগত শিক্ষার্থীদের পদচারণায় কলেজজুড়ে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। মানবসেবার মহান ব্রত নিয়ে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত শিক্ষার্থীদের চোখেমুখে ছিল নতুন স্বপ্ন, দায়িত্ববোধ ও এগিয়ে চলার দৃঢ় অঙ্গীকার।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
আদ্-দ্বীন উইমেন্স মেডিক্যাল কলেজে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম কবে অনুষ্ঠিত হয়?
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামটি অনুষ্ঠিত হয় ১৭ জুন, মঙ্গলবার। সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হয় জাতীয় ভার্চুয়াল ওরিয়েন্টেশন, এরপর কলেজ ক্যাম্পাসে আয়োজন করা হয় স্থানীয় আনুষ্ঠানিকতা।
এই ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে কারা বক্তব্য দিয়েছেন?
প্রধান অতিথি ছিলেন আদ্-দ্বীন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. শেখ মহিউদ্দিন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন অধ্যাপক ডা. আনোয়ার হোসেন মুন্সী।
দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মাহমুদা হাসান এবং উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মাজহারুল ইসলাম।
৩. ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে কতজন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন?
এই শিক্ষাবর্ষে মোট ১০০ জন ছাত্রী ভর্তি হয়েছেন, যার মধ্যে ৭৪ জন বাংলাদেশি এবং ২৬ জন বিদেশি শিক্ষার্থী।
ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে কী ধরনের আয়োজন ছিল?
ওরিয়েন্টেশন উপলক্ষ্যে কলেজ প্রাঙ্গণ বর্ণিলভাবে সাজানো হয় ফুল, বেলুন ও ফেস্টুন দিয়ে। নবীনদের ফুল দিয়ে বরণ করা হয় এবং আয়োজন করা হয় উৎসবমুখর পরিবেশে দিকনির্দেশনামূলক আলোচনা সভা।
ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের মূল বার্তা কী ছিল?
মূল বার্তা ছিল—ডাক্তারি একটি মহৎ পেশা, যা মানবসেবার জন্য নিবেদিত। শিক্ষার্থীদের সময়ের সঠিক ব্যবহার, আন্তরিকতা ও মানবিক গুণাবলি অর্জনের আহ্বান জানানো হয়।
উপসংহার
আদ্-দ্বীন উইমেন্স মেডিক্যাল কলেজে অনুষ্ঠিত ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম ছিল এক মানবিক মূল্যবোধে উজ্জীবিত, হৃদয়গ্রাহী আয়োজন। নবীন শিক্ষার্থীদের নতুন যাত্রা শুরুর প্রাক্কালে কলেজ কর্তৃপক্ষ যে আন্তরিকতা, দিকনির্দেশনা ও উৎসাহ প্রদান করেছে, তা তাদের ভবিষ্যৎ চিকিৎসা জীবনের ভিত্তি শক্ত করে তুলবে নিঃসন্দেহে।
এই আয়োজন কেবল আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং শিক্ষার্থীদের মনে চিকিৎসা পেশার প্রতি শ্রদ্ধা, দায়িত্ববোধ ও মানবসেবার ব্রত আরও দৃঢ় করে তোলে। আদ্-দ্বীন পরিবারের এই উদ্যোগ চিকিৎসা শিক্ষার শুরুতেই এক মূল্যবান অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে নবীনদের জন্য।